ভুল পর্ব / ১ প্রথম পর্ব

আমি বসে বসে ল্যাপটবে অফিসের কাজ করছি।
আর আমার স্ত্রী মাইশা আয়নার সামনে বসে সাজুগুজু করছে।
মেয়েরা পারেও ভাই।
একটু পরে দুজনে শুইতে যার আর ও সাজুগুজু করছে।
আপনারাই বলুন তো,,, এখন ওকে কে দেখতে আসবে??
যাই হোক এখন মাইশাকে দেখে একটু বেশিই সুন্দর লাগছে।
তাই নিজের ভিতর একটু দুষ্টুমি জেগে গেলে।

ল্যাপটব ছেড়ে ওঠে মাইশাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধুরে ওর খোলা পিঠে নিজের ঠোট দুইটা বসিয়ে দিলাম।

আমার ঠোটের স্পর্শে মাইশা একটু কেঁপে উঠে বললো… এসব কি হচ্ছে??

বউকে আদর করা হচ্ছে।

এএএএএ ঢং কতো,,,, ছারো,, আমি ঘুমাবো,,, কাল অফিস যেতে হবে।

ওওও হ্যালো ম্যাডাম,,, আগে বর তারপর অফিস ওকে??
বলেই একটা ঝটকায় মাইশাকে নিজের দিকে ঘড়িয়ে মহুর্তেই ওর ঠোঁট দখল করে নিলাম।

মাইশা ওম ওম করছে আর হাত পা ছোরাছুরি করছে।

এভাবে ৫ মিনিট চলার পর ওকে ছেড়ে দিলাম।

মাইশা হাঁপাত হাঁপাতে বললো সয়তান একটা।

তারপর আমি আর কোন কথা না বলে ওকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।
দিয়ে…………………………………
সকালে ফজরের আযান শুনে উঠে গোসল করে ফজরের নামাজ পরে একটু হাটাহাটি করে
বাসায় এসে দেখি মাইশা বিছানায় নেই। তাই বসে রেস্ট নিচ্ছি
এমন সময় আমার স্ত্রী মাইশার মোবাইলের ম্যাসেস টোন টা বেজে উঠলো।

ইচ্ছা না থাকা সত্তেও কেন জানি ওর মোবাইলটা হাতে নিয়ে ম্যাসেস টা দেখতে ইচ্ছা করছিলো।
তাই মোবাইলটা হাতে নিয়ে
ম্যাসেসটা দেখে বড় সর একটা ধক্কা সক খেলাম।

ম্যাসেস টা ছিলো
“আমার সোনাটা কি ঘুম থেকে উঠেছে”

ম্যাসেস টা দেখে মাথা ঝিমঝিম করতে লাগলো।

মাইশার মোবাইলে তার কোম্পানি থেকে অনেক ম্যাসেস আসে। আমি সেগুলো অনেক বার দেখেছি।
কিন্তু এরকম ম্যাসেস তো দেখি নি।

আমি ও আমার স্ত্রী দুজনেই চাকরী করি।

আমি একটা প্রইভেট কম্পানিতে জব করি
আর মাইশাও একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করে।
আসলে আমি ওকে জব করতে দিতে চাই নি
কিন্তু ভালো স্টুডেন্ট কে বিয়ে করলে যা হয়।
ওর কথা হলো
যদি জব ই করতে না পারি।যদি নিজের ট্যালেন্ট ই দেখাতে না পারি তাহলে
এতো ভালো স্টুডেন্ট হয়ে কি লাভ।
তাই আমিও আর বেশি না না করি নি।

ওয়াশ রুমের দরজা খোলার শব্দ পেলাম।
বুঝতে পারলাম মাইশা আসডেছে।
তাই ওর মোবাইলটা রেখে
আমি নিজের মতো করে নিজের মোবাইল টিপছি।

মাইশা ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ওর মোবাইলটা হাতে নিয়ে বেলকনিতে চলে গেলো।

আমি এখনো বসেই আছি,, মাথায় একটা কথায় ঘুরছে।
কার ম্যাসেস ছিলো ওইটা??

সকাল ৮.৩০ মিনিট।

আমি এবং মাইশা দুজনেই যে যার মতো রেডি হচ্ছি অফিসে যাওয়ার জন্য।

হালিমা(কাজের মেয়ে) খাবার রেডি হয়েছে বলে চলে গেলো।

তারপর আমরা দুজনে যে যার মতো করে খাবার খেয়ে অফিসে চলে গেলাম। যেহেতু দুজনেই জব করি তাই দুজনের মধ্যে খুব একটা কথা হয় না।
প্রয়জন ছাড়া।

আমি অফিসে আসলাম ঠিক। কিন্তু অফিসের কাজে মনোযোগ দিতে পারছিলাম নাহ।
সব সময় সেই ম্যাসেস টা নিয়েই চিন্তা।
কে সেই ব্যাক্তি??
যে আমার স্ত্রীর মোবাইলে ম্যাসেস করে??

দেখতে দেখতে লান্স আওয়ার হয়ে গেলো।
আমি প্রতি দিনের মতো অফিসের ক্যান্টিনে গেলাম লান্স করতে।

এমন সময় শালি ইরার ফোন।

হ্যালো ইরা,, কেমন আছিস?

জ্বী ভাইয়া আমি ভালো,,, আপনি ভালো আছেন? (ইরা আমাকে ভাইয়াই ডাকে। ওর নাকি দুলাভাই ডাকতে কেমন লাগে)

হুম,,,

আচ্ছা ভাইয়া তোমার বিবাহ বার্ষীকী কি এই মাসেই??

মানে?

মানে মাইশা আপুকে দেখলাম,,, দামী ব্রান্ডের একটা ঘড়ি কিনলো।
খুম দামী একটা ঘড়ি। তা তো ১০ হাজার এর উপরে দাম হবে।

(মাইশা ঘড়ি কিনলো?
তাও আবার এতো দামি??
কার জন্য??
আমাদের বিবাহ বার্ষীকী তো কিছুদিন আগে হয়ে গেলো।
সেই উপলক্ষে দুজনে সিলেট ঘুরে আসলাম।
পরে ভাবলাম হবে হয়তো ইচ্ছা হয়েছে তাই আমার জন্য কিনেছে)
আরে নাহ রে, তোর আপুর হয়তো ইচ্ছা হয়েছে তাই কিনেছে আমার জন্য।

বাহ ভাইয়া আপনি তো খুব লাকি ম্যান।

দেখতে হবে না। বউটা কার?.

হয়েছে হয়েছে,, আপনি তো ফস্ট টাইম আপুকে জব করতে দিতে চাইতেন না। আর এখন গর্ব করছেন?

আচ্ছা দাড়া দাড়া,,, তুই মার্কেটে কেন??
কোন ছেলেকে আবার মুরগী বানাচ্ছিস??
।।
তারপর আর ওদিক থেকে কোন আওয়াজ পেলাম না শুধু টু টু টু ছারা।

লান্স সেরে আবার অফিসের কাজ।

বিকাল ৪ টা

অফিস শেষ করে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরলাম।

বাসায় ফিরে হালিমাকে চা দিতে বলে ওয়াশ রুমে চলে গেলাম।

ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে চা এর কাপে চুমক দিতেই মাইশা হাজির।

আমিও আগ্রহ নিয়ে ওর হাতের দিকে চাইলাম।
কারণ ও আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার আগেই আমি ওকে সারপ্রাইজ দিবো এই ভেবে।

কিন্তু একি,,,!!! প্রতিদিনের মতো আজো দেখি ওর হাত ফাকা।
শুধু নিজের ব্যাগটা ছাড়া আর কোন ব্যাগ নাই।
তারপর মনে মনে ভাবলাম হয়তো নিজের ভ্যানিটি ব্যাগে রেখেছে
ঘড়িটা।

মাইশা নরমালি তার ব্যাগটা রেখে আমার সাথে কোন কথা না বলে ওয়াশ রুমে চলে গেলো।

আমারও ভিতরে ভিতরে একটু অভিমান হলো।
সারপ্রাইজ টা আগে দিলে কি হতো?
ধুর……..

রাতের ডিনার করে আমি বসে বসে ল্যাবটপ এ কাজ করছি।
মাইশা কিছুক্ষন বেলকনিতে দাড়িয়ে থেকে এসে গুড নাইট বলে শুয়ে পড়লো।
কিন্তু আমি লক্ষ করলাম ও ঘড়িটা বিষয়ে কিছুই বলছে না।

মনে মনে একটু সন্দেহ হলো।
তাই কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম মাইশার ঘুমিয়ে পড়ার জন্য।

তারপর যখন বুঝতে পারলাম মাইশা ঘুমিয়ে পড়েছে।

তখন উঠে মাইশার ব্যাগটা দেখার জন্য ব্যাগটা হাতে নিলাম।
নিয়ে হাত দিয়ে পুরো ব্যাগ খুজেও ঘড়ি টা পেলাম না।
কিন্তু ও যে ঘরিটা কিনেছে তার প্রমান সরুপ একটা ম্যামো পেলাম ব্যাগে।
এখানে ক্রেতার জায়গায় পরিষ্কার মাইশার নাম ই লেখা।
তাহলে ও কার জন্য ঘড়ি কিনেছে??

মাইশার দিকে তাকিয়ে দেখি ও ঘুমাচ্ছে।

কৌতুহল বশত ওর মোবাইলটা হতে নিয়ে তারাতারি করে ইনবক্সে ঢুকলাম।
ঢুকে দেখি ইননক্স পুরো ফাকা।
এমনকি সকালে যে ম্যাসেসটা দেখেছিলাম সেটাও নেই।
এবার মাইশার উপর পুরো সন্দেহ হতে লাগলো।
কে এই তৃতীয় ব্যাক্তি??
যে মাইশার খোজ খরব নেয়??
মাইশাও তার জন্য দামী ঘড়ি কিনে??

এরকম আরো অনেক প্রশ্ন নিয়ে সেদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকালে ফজরের নামাজ পরতে আর মসজিদে গেলাম না।
বাসাতেই পড়ে নিলাম।
নামাজ পড়ে ওঠে দেখি মাইশা বিছানায় নাই।

তাই আমিও বেলকনিতে গিয়ে দেখি মাইশা
কারো সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।
আমি আর সহ্য করতে না পেরে বললাম।
কার সাথে কথা বলছো মাইশা?

Be the first to write a review

Leave a Reply

We’re sorry you’ve had a bad experience. Before you post your review, feel free to contact us, so we can help resolve your issue.

Post Review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক গল্প