পরের দিনও আরিফ অফিসে যায় না। সে দীর্ঘ একটা প্ল্যান করেছে, নয়নকে এই বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। নয়ন যেই কলেজে পড়ে, ঠিক সেই কলেজের কাছাকাছি একটা পুরাতন জমিদার বাড়ি আছে। জায়গাটা সব সময়েই নির্জন থাকে। আরিফ, নয়
দুপুর ১টায় কলেজ ছুটি হলে নয়ন কলেজ থেকে বেরিয়ে গেটের কাছে মামাকে দেখে বেশ অবাক হয়। ওঔ নয়নকে দেখে অবাক হওয়ার ভান করে বল্লঃ
—— আরে তুই কলেজে এসেছিস? তোকে পেয়ে ভালোই হলো!
— কেন মামা??
——আর বলিস না, তুর মামী emergency ফোন দিচ্ছে তাই আমাকে একটু দ্রুত বাসায় যেতে হবে। কিন্তু ওদিকে “একটা emergency file-এর জন্য” আমার এক কলিক পুরোনো জমিদার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে! তুই কি দিয়ে আসতে পারবি নাকি কোন তাড়া আছে?
— না মামা, তাড়া নেই! আমাকে দাও দিয়ে আসছি!!
——- Ok thanks..
[বলেই, নয়নের হাতে ফাইলটা দিয়ে দ্রুত চলে যায়]
নয়নও ফাইলটা নিয়ে জমিদার বাড়ির সামনে হাজির। পুরোই নির্জন জায়গা, আশেপাশে কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। তবুও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে সেখানে। অবশেষে কাউকে না পেয়ে মোবাইল বের করে যেই মামাকে কল দিতে যাবে, তখনই দেখে দুজন লোক ওর দিকে এগিয়ে আসছে। লোক দুটোকে দেখেই নয়নের মন কেমন যেন করতে লাগল। এই ধরনের লোকদের নয়ন ভালো করেই চেনে। এদের দেখলে নয়নের কেন যেন বেশ ঘেন্না লাগে।
কারণ এরা পুরুষ হলেও টাইট প্যান্ট, টাইট টি শার্ট, কালার করা লম্বা চুল, লিপস্টিক দেওয়া ঠোঁট, এদের চেহারাতে মেকাপ, চলনে একটা মেয়েলি ভাব! এক কথায়, এরা পুরুষ হলেও সমকামী। যাদের বলে গে। এর জন্যই মূলত এদের প্রতি ঘেন্না নয়নের। এরা যে সমকামী, এদের চেহারা দেখেই স্পষ্ট বুঝতে পারে নয়ন। তাঁরা ওর দিকে আসছে দেখেই ঘৃণায় অন্যদিকে মুখ করে রাখে নয়ন।
সমকামী দুজনের মধ্যে একজন নয়নের কাছে এসেই তার গাল টিপে বললঃ
——- কেমন আছো গো?
— [বিরক্তি ভরা দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকালো]
অপর একজন বললঃ
——– এতো দেখি পুরোই মাখন।
— [বিরক্ত ভরা কণ্ঠে] কী চাও তোমরা?
নয়নকে অবাক করে দিয়ে তাদের একজন বলে উঠলঃ
——— তোমার নাম নয়ন তো?
নয়ন শকড্ খেয়ে থ হয়ে যায়। আর হঠাৎ ই তাঁদের একজন পকেট থেকে একটা রুমাল বের করে নয়নের মুখে চেপে ধরল। পরমুহূর্তেই একটা কার এসে ওদের পাশে দাঁড়ালো। নয়নের চোখ লেগে আসতে শুরু করলো। ওর আর কিছুই মনে নেই!
যখন নয়ন চোখ খুলল, তখন তার চোখ চড়কগাছ! কারণ ও সম্পূর্ণ উলঙ্গ এবং ওর দুটো হাত শক্ত করে খাটের দুই পাশের দুটি খুঁটির সঙ্গে বাঁধা! আর ওর সামনে চার-পাঁচ জন গে পুরুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে। নয়নকে চোখ খুলতে দেখেই তারা একসাথে আনন্দে হেসে উঠলো। তাদের কারও শরীরেও কাপড় নেই। এরাও যে সমকামী তা বুঝতে সময় লাগে না নয়নের।
তাঁদের একজন বলে উঠল, শালারে মেডিসিন টা খাওয়া। নাইলে পায়ুপথ পরিষ্কার হইব না। তাড়াতাড়ি কর, আমার তড় সইতাছে না! নয়নের অনিচ্ছায়ও জোর করে তাকে সেই মেডিসিন খাওয়ানো হলো। এতগুলো পুরুষের সঙ্গে সে কিছুতেই পেরে উঠছে না! সে করুনা মিশ্রিত, ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাদের দিকে চেয়ে রইল। তারপর করুন সুরে বল্লঃ
—— আমাকে ছেড়ে দেন! আমি আপনাদের কী ক্ষতি করছি? আমার সাথে প্লিজ এমনটা করবেন না।
কথাগুলো শুনে তাঁরা যেন বেশ মজাই পেল। হাসতে হাসতে একে অপরের গায়ে পড়লো। নয়নের হাত বাঁধা অবস্থায়, একজন একজন করে ওর উপর “মায়া-দয়া হীন ভাবে” ঝাঁপিয়ে পড়ল। নয়নের আর্তনাদ, চিৎকার কেউ শুনলো না! তাঁদের কাজ শেষে নয়নকে জামা কাপড় পরিয়ে, হাত মুখ বেঁধে সেই জমিদার বাড়ির সামনে ফেলে রেখে গেল।
তখন নয়ন ছটফট করছিল যন্ত্রনায়, আর ঠিক ঐ সময়ই কোথা থেকে দৌড়ে এলো মামা আরিফ। এসেই ওর বাঁধন খুলে দিয়ে উৎকণ্ঠিত হয়ে বলতে লাগলঃ
—— তুই কোথায় ছিলি এতক্ষণ, তোর এই অবস্থা হলো কী করে? আমরা সবাই দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম।
নয়ন কেঁদেই যাচ্ছে, কোন কথা বলার অবস্থায় নাই। পরে অনেক কষ্টে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে। নয়নকে একটা রিকশায় উঠিয়ে, ওদের বাড়িতে নিয়ে যায়। তার বাড়ির সবাই তাঁকে ঝেঁকে ধরে নানান প্রশ্ন ছুড়েঃ
—– সে এতক্ষণ কইছিল, কী করছিল, তার এই অবস্থা হলো কী করে, সে খুঁড়িয়ে হাঁটছে কেন?
লজ্জায় নয়ন কোনো উত্তরই দিতে পারে না। শুধু চুপচাপ বসে থাকে। মামা আফসোসের সুরে বলেঃ
—– তোকে একা ভর দুপুরে, ঐ নির্জন জায়গায় পাঠানোই উচিত হয়নি। বোধহয় ছিনতাইকারী ধরেছিল।
তারপর অন্যান্যদের কে উদ্দেশ্য করে বলেঃ
—– নয়ন অনেক ভয় পেয়ে আছে। পরে ভয় কাটলে ওর কাছ থেকে সব জানা যাবে।
এইটুকু বলেই আরিফ বাড়ি ফিরে আসে এবং পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করে। আর মনে মনে ভাবে.. এই ধরনের একটা সঙ্গী, রিতুর না হলেও চলবে।
এক সপ্তাহ কেঁটে যায়। নয়ন শারীরিক ভাবে সুস্থ হলেও মানসিক ভাবে অনেক ভেঙে পড়েছে। আরিফের কাছে এই খবরটা এসেছে। নয়ন স্বাভাবিক ভাবে কলেজে যাতায়াত করলেও, সেইদিনের পর থেকেই মানসিক ভাবে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সব সময় অন্যমনস্ক থাকে। কারও সঙ্গে তেমন কথা বলে না।
তাই আরেকদিন, আরিফ অফিস কামাই করে নয়নের কলেজের সামনে দুপুর অব্দি দাঁড়িয়ে থাকে। আর নয়ন, মামাকে ঠিক সেই ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আৎকে উঠে। ও ধীরে ধীরে নয়নের কাছে যায় আর ওর কাঁধে হাত রেখে বলেঃ
—– চল আমার সাথে। তোর মন ঠিক করে দিচ্ছি।
নয়ন কিছুই বলে না, তবে মামার সাথে সাথে হাঁটতে শুরু করে। তাঁরা সেই পুরনো জমিদার বাড়িটার দিকেই হাঁটছে। তখন নয়ন ভয়ে বলে উঠলঃ
— মামা, আমি ঐদিকে যাব না।
—– [অভয় দিয়ে] তোর ভয় নেই, কারণ যেখান থেকে তোর ভয়ের শুরু হয়েছে সেখানেই তা শেষ হবে।
তাঁরা দুজনেই হাঁটতে হাঁটতে জমিদার বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। নয়ন ভয়ার্ত দৃষ্টিতে চারদিকে চোখ ভুলায়। কারণ সেই দিনের ঘটনার পর থেকে এই পর্যন্ত, কতবার যে স্বপ্নে এই জায়গা আর সেই মানুষ গুলোকে দেখেছে তার হিসাব নেই।
ওরা জমিদার বাড়ির সামনের একটা গাছের নিচে শিকড়ের ওপর বসলো। আরিফ, নয়নের দিকে মুখ করে স্পষ্ট স্বরে বল্লঃ
——- সেইদিন ধর্ষণ হতে তোর কেমন লাগল’রে নয়ন?
কথাটা শুনে নয়ন পুরো আৎকে উঠল। ভয়মিশ্রিত দৃষ্টিতে মামার দিকে তাঁকাল। আরিফ আবার বললঃ
——- তোর সাথে সেইদিন কী কী হয়েছিল, তা আমি জানি। আর জানবোই না কেন? সব কিছুর প্লানই তো ছিল আমার। আমি ইচ্ছে করেই সেই সমকামী লোকদের দিয়ে তোকে ধর্ষণ করিয়েছি।
নয়ন কথাটা শুনে পুরো বাকরুদ্ধ, হতভম্ব হয়ে যায়। বিস্ময়ে চোখ বড় বড় হয়ে যায়! কিন্তু মামা আরিফ বলতেই থাকেঃ
—— তোর বয়স যতই কম হোক , আমার বিশ্বাস আমি যা করিয়েছি সেটা অন্যায় কিছু করিনি। যা কিছু করেছি তোর ভবিষ্যতের ভালোর জন্যই করেছি। তোর “উলঙ্গ মনে” বস্ত্র পড়ানোর জন্যই করিয়েছি। তুই কী জানিস তুই কী ভয়ংকর পাপী? যেদিন রিতুর মুখে তোর ঘটানো কর্মকাণ্ডের কথা শুনি, আমার যা রাগ হয়েছিল তা বলার মতো না! আমার ইচ্ছা করছিল তোকে খুন করে ফেলতে। [একটু ধম নিয়ে, আবার শুরু করলো]
দেখ তুই আমার আপন ভাগ্নে, আমার ছেলের মতো। আমার ৬ বছরের বাচ্চা মেয়েটা তোকে ভাইয়া বলে ডাকে, ভালোবাসে এবং সম্মানও করে। তোদের সম্পর্ক ভাই-বোনের। এখন তুইই বল, একজন বাবা যদি তাঁর মেয়েকে তাঁর ছেলের কোলেই নিরাপদে না রাখতে পারে, যে ভাই হয়ে বাচ্চা একটা বোন যাঁর এখনও দুনিয়া সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানই হয়নি তাঁকে দিয়ে নিজের যৌন লালসা মেটাতে চায় তখন এই দুঃখ আমি কোথায় রাখবো? তুই বল? বোন তাঁর ভাইয়ের কাছে নিরাপদ থাকবে না? বাচ্চা মেয়ে তাঁর কাকা-মামার কাছে নিরাপদ থাকবে না? [দীর্ঘশ্বাস]
এখন বলতো, বাবা-মা কাদেরকে বিশ্বাস করবে? কি ভরসায় নিজের মেয়েকে বড় করবে? আজ তোর মতো কিছু বিকৃত মন, মস্তিষ্কের মানুষের জন্যই এত ছোট ছোট বাচ্চারা ধর্ষণ হচ্ছে, বাবা-মায়েরা নিজেদের পরিবারের মানুষদেরই বিশ্বাস করতে পারছে না! হীনমন্যতায় ভূগতে হচ্ছে নিরপরাধ পুরুষদের। হ্যাঁ তুই রিতুকে ধর্ষণ করিসনি কিন্তু করতি না তার গ্যারান্টি কী? এখন বাচ্চা অবুঝ মেয়ে দেখে মলেস্ট করিস, নিজের পুরুষাঙ্গ মুখে নিতে বলিস, হয়তো এমন করতে করতে একদিন তোর কাছে ধর্ষণও একটি অতি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে উঠবে আর তুই ধর্ষক হয়ে যাবি।
অতঃপর রিতুকেও একা পেয়ে ধর্ষণ করতি না, তার গ্যারান্টি কী? তোদের একটা মেয়ের শরীর হলেই হয়! হোক সে ৬ মাসের শিশু, ৬ বছরের বাচ্চা, মানসিক রোগী বা ৭০ বছরের বুড়ি। তোদের কাছে কী শুধু শরীরটাই আসল, আর কিছু না? প্রতিটা মানুষের যে একটা মন আছে এটা তোরা কেন মনে রাখিস না? যৌনতা মন থেকে আসে শরীর থেকে না! আর তোরা সেক্সের সুন্দর একটা নাম দিয়ে দিয়েছিস, শারীরিক চাহিদা! হয়তো এইগুলো তোদের মাথায় ঢুকে পর্ণ দেখে বা চটি গল্প পড়ে! যদিও তোরা জানিস ওইসবই মনগড়া। আসলেই কী এটা শুধু শরীরের চাহিদা? মনের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই? একজন ধর্ষককে ধর্ষণ করার পর যখন পুলিশ ধরে জিজ্ঞেস করল, তুই এই জঘন্য অন্যায় কাজ কেন করছিস? সে বিকৃত হাসি দিয়ে বলেঃ
— এইটা কোনো অন্যায় না! মিষ্টি নিজে নিজে খাইলে যেমন মিষ্টি লাগে, জোর কইরা খাওয়াইলেও মিষ্টি লাগে। মজা সবাই পায়। এইটা কোন অপরাধ না!
এখন তুই বল, মিষ্টি আর এইটা কী এক ? তোরা মুখে কিছু না বললেও, “অন্তর থেকেই” ধর্ষকের মতো তোরাও এটা জানিস বা বিশ্বাস করিস।
এখন বলতে পারিস কী, যদি সেক্স কেবল শরীরে শরীরের সম্পর্কই হয় তাহলে ধর্ষণের পর, কেন একটা মেয়ে এই এক ঘন্টার কথা ভুলে নতুন করে জীবন শুরু করতে পারে না?কেন একবার ধর্ষিত হওয়ার পর একটা মেয়ে মনে করে তার জীবন এখানেই শেষ? কেন ধর্ষিত হওয়ার পর এত মেয়ে প্রতি বছর আত্মহত্যা করে? মলেস্ট হওয়ার পর কেন সারাদিন ঘরের দরজা বন্ধ করে কাঁদে? এই জিনিসগুলো কী একটা বারও তোদের মাথায় আসে না? যখন তোরা বিকৃত যৌন ক্ষুধা মেটাতে একটা মেয়ের শরীর স্পর্শ করিস? যদি এগুলো তোরা এক মুহূর্তের জন্য ভাবতি তাহলেই বুঝতে পারতি সেক্স হচ্ছে মনের তৃপ্তি, এটা শুধু শরীর কেন্দ্রিক না। তাই জোর করে কারও অনুমতি ছাড়া তার গায়ে হাত দেওয়া , তার শরীর ভোগ করা সবই অন্যায়। হোক সে বুঝ বা অবুঝ। আর তুই একটা বাচ্চা মেয়ের শরীরের মধ্যে যৌনতা খুজিস? তাঁর মনের খবর কী কখনো তুই রেখেছিস? যদি একটাবার তার মনের ভেতরে তোর সম্পর্কে , পৃথিবীর সব পুরুষ সম্পর্কে যে পবিত্র বিশ্বাস, ধারণা জন্ম নিছে তা জানতে পারতি তাহলে কখনই এই শরীরে যৌনতা খুঁজে পেতি না! কোনো মেয়ের শরীরের ভেতরেই যৌনতা খোঁজার অধিকার তোর নাই যদি তার মনের অবস্হা তুই না জানিস!
এই যে তোরে এতগুলো কথা বললাম। যদি এই কথাগুলো রিতুর কাছ থেকে তোর বিকৃত রুচি জানার পর পরই বলতাম। তখন তুই এসব কথার আগা-মাথা কিছুই বুঝতি না। হয়তো মাথা নিচু করে আমার কথা শুনতি। তারপর কথাগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে হয়তো আমাদের বাসায় আসাও বন্ধ করে দিতি। রিতু মলেস্ট হওয়া থেকে বাঁচত কিন্তু তুই মানুষ হয়তি না। হয়তো আরেকটা মেয়ের জীবন এইভাবে নষ্ট করতি।
ভবিষ্যতে তোর মন প্রাণ এক সময় বিশ্বাস করতে শুরু করতো, যৌনতা হলো গিয়ে শরীরের ক্ষুধা। একটা শরীরের ক্ষুধা পেলে আরেকটা শরীর ছুঁবে। সেটা যার শরীরই হোক না কেন। বাচ্চা- বৃদ্ধা যেকোনো এক জনের শরীর হলেই হলো। আর এইসবের বিশ্বাস যাদের মনের ভেতর থাকে, তারাই তোর মতো মলেস্ট করে মেয়েদের, ধর্ষণ করে মেয়েদের। আর মনে করে এটা কোনো অপরাধ না।
আর তোর মনেও এই মানসিক রোগটা ছিল। তাই সমকামীদের হাতে তোকে ছেড়ে দিয়েছিলাম। তাঁরাও তো তোকে ধর্ষণ করে শারীরিক চাহিদাই মিটিয়েছে। এখন যদি যৌনতা কেবল শরীরের সাথে শরীরের সম্পর্কই হতো, তাহলে তাদের সাথে সঙ্গমে তুইও আনন্দ পেতি। কিন্তু তুই তা পাসনি! উল্টো পেয়েছিস মানসিক যন্ত্রণা। তুই এখন নিজেই ভালো করে বুঝতে পারছিস ধর্ষণ বা অন্যের অনিচ্ছায় তার গায়ে হাত দিলে সে মোটেও তা উপভোগ করে না। উল্টো তার মনে এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। যা তার জীবনটা ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট। এই জিনিসটা যে শরীরের চাইতে মনে বেশি প্রভাব ফেলে , আর প্রভাবটা কত বেশি আশা করি এইটা এই মুহূর্তে তোর চাইতে ভালো আর কেউ জানে না। এইটাই ছিল তোর পাপ, যৌনতা সম্পর্কে বিকৃত ধারণার শিক্ষা।
আমার মতে যে সমস্ত পুরুষেরা মনে করে যৌনতা কেবল শরীর কেন্দ্রিক তাদের সকলকেই এভাবে সমকামীদের ধারা ধর্ষণ করানো উচিত। তাহলে নারীদের মতো পুরুষেরাও ধর্ষণের কথা শুনলেই শিউরে উঠবে। কিছুদিন পরে পরেই পুরুষ ধর্ষণও প্রকোট আকার ধারণ করানো উচিৎ সমাজে। এছাড়া তো তোদের মতো পুরুষদের ধর্ষণ বা মলেস্টেশন যে নারীদের শরীরের চেয়ে মনে কী প্রভাব ফেলে তা বোঝানো সম্ভব না!
কথা গুলো শোনার পর নয়ন, মামার পা ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে আর ক্ষমা চায়। মিশকাত অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছিল। সে জানে নয়ন আর কখনো কারও সাথে এই ধরনের কোনো আচরণ করবে না বা করার চিন্তাও করবে না। কিন্তু বাবা হয়ে সে মাত্র একজন নয়নকে শোধরাতে পেরেছে, একজন নয়ন থেকে বাঁচাতে পেরেছেন তাঁর মেয়েকে।