অতীতের কথা মনে পড়ে কেঁপে উঠলো রুমি। যে সোহেল এক বছর আগে মারা গেছে সে কোথা থেকে আসবে। এমন সময় ড্রয়িং রুমে আবিরের চিৎকার শুনতে পেলো রুমি। দ্রুত রুমে যেয়ে দেখে আবির ডান হাত দিয়ে বাম হাতের বাহু শক্ত করে চেপে ধরে আছে। রক্তে সম্পূর্ণ হাত লাল টুকটুকে হয়ে আছে। চোখ দুটো বড় বড় করে বললো সে,
” আবির হাত কাটলো কি ভাবে?”
ব্যথায় কাতর আবির। ভারী গলায় বললো,
” বুঝতে পারছি না। কাটার মত কোন ঘটনা ঘটেনি।”
বুকের ভেতর ছেদ করে উঠলো রুমির। কপাল বেয়ে টুপটাপ ঘাম ঝরছে। সমস্ত চেষ্টা করেও ব্লিডিং বন্ধ করতে পারছে না। অবশেষে তার ঠিকানা হলো হাসপাতাল।
বেডে আড়মোড়া হয়ে শুয়ে আছে আবির। অতিরিক্ত ব্লিডিং এর ফলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেছে। শীঘ্রই তাকে ব্লাড ট্রান্সফিউশন করতে হবে। কিছুক্ষণ পর একজন নার্স এসে বললো,
” টেনশন করার কিছু নেই। একজন ডোনার পাওয়া গেছে।”
রুমি খুশিতে আপ্লুত। নামটা জানার ও খেয়াল নেই তার। একটু পর আবিরের শরীরে ব্লাড দেওয়া হলো। ডোনারের মুখটা পরিস্কার দেখতে পাচ্ছে না রুমি। ব্লাড দেওয়া শেষ হলে কেবিনে নেওয়া হলো আবিরকে। ততক্ষণে ডোনার লাপাত্তা। অনেক খুঁজাখুঁজি করেও তার কোন হুদিশ পেলো না। রুমি নার্সকে বললো,
” আমার হাজব্যান্ড কে যে ব্লাড দিয়েছে তার ব্যাপারে কিছু জানেন?”
” তেমন কিছু বললো না। স্ক্রিনিং টেস্ট করে ট্রান্সফিউশন করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম।”
” এটলিস্ট নামটা তো জানেন।”
নার্স মাথায় হাত দিয়ে বললো,
” মনে হয় সোহেল।”
নার্সের মুখে এমন কথা শুনে তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। বুকের ভেতরটা ধরফর করছে তার। কেবিনে যেয়ে দেখে শুয়ে আছে আবির। রুমি পাশে বসে তার মাথায় হাত দিয়ে বললো,
” আবির এখন কেমন লাগছে?”
আবির তার হাতটা ধরে বললো,
” এত টেনশন করছো কেনো আমি পুরোপুরি ঠিক আছি।”
রুমি দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললো,
” তুমি একটু বিশ্রাম করো আমি আসছি। ডাক্তার বলছে একটু পরেই তোমাকে নিয়ে বাসায় ফিরতে পারবো।”
” তুমি আবার একা একা কোথায় যাবে?”
” কোথাও যাবো না। আমি তোমার পাশেই আছি। একটু ওয়েট করো আমি আসছি।”
” ঠিক আছে তারাতাড়ি এসো কিন্তু।”
হাসপাতালের বারান্দায় পায়েচারি করছে রুমি। তার সাথে এমন অলৌকিক ঘটনা কেনো ঘটছে। ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে তার এক পুরোনো বান্ধুবীর নাম্বারে ফোন দিলো সে। ওইপাশ থেকে বললো,
” হ্যালো কে বলছেন?”
” রুম্পা আমি রুমি।”
” আরে রুমি কি ব্যাপার এতদিন পর হঠাৎ বান্ধুবীর কথা মনে হলো?”
” একটু ব্যস্ত থাকি। কারও সাথে কথা বলার মত সময় পায় না।”
” তারপর কি অবস্থা তোর? ভাইয়া ভালো আছে তো?”
রুমি একটু সরে যেয়ে চুপিচুপি বললো,
” রুম্পা তোকে একটা কুয়েশ্চন করছি। দুজনের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকবে।”
” ঠিক আছে বল।”
” ইউনিভার্সিটিতে একটা ছেলে আমাকে ডিস্টার্ব করতো তার কথা মনে আছে?”
” মনে থাকবে না কেনো? মনে থাকার মতই ঘটনা। শেষ পর্যন্ত তার শাস্তি সে পেলো।”
” সে কি ভাবে এক্সিডেন্ট করেছিলো?”
” এত কিছু তো জানি না। তবে তার বন্ধু বলেছে বাইক এক্সিডেন্ট করেছে।”
” তুই শিউর এক্সিডেন্ট এর পর সোহেল মারা গেছিলো?”
” কি বলছিস এসব? এত দিন পর হঠাৎ সোহেল ভাইয়ার ব্যাপারে ইন্টারেস্টেড।”
” তেমন কিছু না। আমি শুধু সত্যিটা জানতে চাচ্ছি।”
” মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেয়েছিলো। এক পাশের অংশ প্রায় পুরোটা থেতলে গেছিলো। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।”
এমন সময় পেছনের দিকে ঘুরতেই চমকে উঠলো রুমি। আবির তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। সম্ভবত সব কথা শুনে নিয়েছে। রুমি স্বাভাবিক হয়ে বললো,
” তুমি এখানে কেনো? ডাক্তার কি বলেছে শুনতে পাওনি?”
” তোমার কি হয়েছে বলো তো।”
রুমি এক হাতে চোখের জল মুছে বললো,
” আমার আবার কি হবে?”
” সেটাই তো জিজ্ঞাসা করেছি। কখন থেকে কার সাথে ফোনে কথা বলছো। আমাকে দেখা মাত্রই ফোন কেটে দিলে। নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে।”
রুমি মনে মনে বললো, যাক আবির কিছু বুঝতে পারেনি।
” তোমাকে রুম্পার কথা বলেছিলাম না হঠাৎ সে ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করছে। তার হাজব্যান্ড নাকি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এসব বিষয়েই টুকটাক কথাবার্তা বলছিলাম।”
” ঠিক আছে। আমি পুরোপুরি সুস্থ আছি। ডাক্তার কে বললো বাসায় চলে যাবো।”
” তুমি বেডে যেয়ো বসো। আমি কথা বলে আসছি।”
হাসপাতালের ফর্মালিটি কমপ্লিট করে বাসায় আসলো দুজন। সোফায় আনমনে বসে আছে আবির। তার ঠিক পাশে কাঁধে মাথা দিয়ে আছে রুমি। নরম গলায় বললো,
” আবির তোমার কি মনে হয় না আমাদের সাথে অদ্ভুত কিছু একটা ঘটছে?”
আবির চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে। রুমির কথা না শোনার ভান ধরে সে বললো,
” হাসপাতাল থেকে আসছো গোসল করে নাও।”
রুমি মাথাটা কাঁধ থেকে সরিয়ে বললো,
” আমি কি বললাম তোমাকে?”
” কি বলেছো?”
” আমার কোন কথায় তুমি বুঝতে চাও না। দিন দিন আমার প্রতি থেকে তোমার ভালো লাগার অনুভূতি টুকু কমে যাচ্ছে। সেটা কি তুমি বুঝতে পারো না?”
উচ্চস্বরে কথা গুলো বলে প্রস্থান নিলো রুমি। আবিরের মাথায় হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক করছে। উত্তর অজানা। আচ্ছা রুমি হাসপাতালে কার সাথে কথা বললো? আমি স্পষ্ট শুনতে পেয়েছি সোহেল নামে কাউকে নিয়ে কথা বলছে রুম্পার সাথে। কে এই সোহেল? তার সাথেই বা রুমির কি সম্পর্ক। দু বছর যাবত রুমির সাথে আছি। কখনো ও তো তার মুখে সোহেল নাম উচ্চারণ করতে শুনিনি। তবে কি সে আমার থেকে কিছু একটা লোকাচ্ছে? আমি কি একবার তাকে জিজ্ঞাসা করবো সোহেল এর কথা? যদি সে ওভার রিয়েক্ট করে। না না এখনি কিছু বলা যাবে না। বিষয়টা আমাকে খতিয়ে দেখতে হবে। মনে মনে কথা গুলো বলছে আবির। হাতে প্রচন্ড ব্যথা। নাড়াচাড়া করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। সোফা থেকে ধীরে ধীরে দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো সে। বিস্ফোরক দৃষ্টিতে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে। মাঝে মাঝে হাত দিয়ে চ্যাক করছে। তার স্পষ্ট খেয়াল আছে দরজায় ধারালো কিছু একটার স্পর্শে হাত কেটে যায়। কিন্তু সে ধারালো জিনিসটা আসলে কি। এমন সময় রুমি এসে উপস্থিত।
” এত মনোযোগ দিয়ে দরজায় কি দেখছো?”
আবির দরজায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
” একটা বিষয় মাথায় ঢুকছে না। দরজা অতিক্রম করার সাথে সাথে হাত কেটে যায়। কিন্তু কেটে যাওয়ার মত কোন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। তুমি জানো ডাক্তার বলেছে ধারালো শার্প জাতীয় চাকু বা ব্লেড দিয়ে কেটেছে। এমন কিছুর উপস্থিতি নেই এখানে।”
কথাগুলো শুনে কেঁপে উঠলো রুমি। সব কিছুর মাঝে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে। আবির অসুস্থ ব্যাপারটা এখানেই ক্ষ্যান্ত দেওয়া যাক। বাকীটা পড়ে দেখা যাবে।
” আবির এত এক্সপেরিমেন্ট করতে হবে না। হয়তো কোন ভাবে কেটেছে। এখন রুমে যেয়ে রেস্ট নাও দেখি ফ্রিজে কি আছে।”
আবির কথা না বাড়িয়ে ধীরে ধীরে রুমে চলে গেলো।
রাতের বেলা বাহিরে শু শু করে পূবালী বাতাস বইছে। আবির জানালার গ্রীলের সাথে মাথা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দমকা বাতাস আচড়ে পড়লো রুমির মুখের উপর। নিমিষেই সজাগ হয়ে গেলো রুমি। পাশে দেখে আবির নেই। রুমের লাইট অন করতেই চমকে উঠে আবির।
” এখনো ঘুমাও নি?”
রুমি লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে বললো,
” এত রাতে জানালার পাশে কি করছো? আমি তো রীতিমত ভয়ে পেয়ে গেছি।”
মুচকি হেসে সে বললো,
” তুমি সব কিছুতেই বড্ড বেশী ভয় পাও। মনে হয় প্রেতাত্মা আমাদের বাসায় আশ্রয় নিয়েছে।”
প্রেতাত্মার কথা শুনে নড়েচড়ে বসলো রুমি। মনের ভেতর ভয়ের পাহাড় দিন দিন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। ছোট বেলায় বাবার কাছে প্রেতাত্মার গল্প শুনেছিলাম। যারা অধীর শোকে মৃত্যুবরণ করে তাদের আত্মারা নাকি পুনরায় পৃথিবীতে এসে প্রতিশোধ নেয়। তাহলে কি সোহেলের আত্মা আমাদের বাসার আশপাশে বাসা বেধেছে। সত্যিই কি গল্পের সাথে বাস্তবের অবাধ মিল রয়েছে।
কথাগুলো ভাবতেই শিউরে উঠলো রুমি। আবির বললো,
” এতো নিমগ্ন হয়ে কি ভাবছো?”
” তুমি হঠাৎ প্রেতাত্মার কথা বললা কেনো?”
” শুনেই ভয়ে চুপ হয়ে আছো? এতটা ভীতু তুমি জানো ছিলো না। আমি তো এমনি মজা করে বলেছি। এত সিরিয়াস হওয়ার কিছু নেই।”
” আমি মোটেও ভয় পায় না ওকে।”
” সেটা তোমার নাক মুখ দেখেই বুঝতে পারছি।”
” নাক মুখ দেখে আর কি বুঝো?”
” এই যে আমার সাথে অনেক কথা লুকানো শিখে গেছো।”
মুহূর্তেই রুমির মুখখানা মলিন হয়ে গেলো। তবে কি আবির আমাকে সন্দেহ করছে। তার নিরবতা দেখে পুনরায় খিলখিল করে হাসছে আবির।
” তোমার সাথে একটু মজা করতেও পারি না। সব ব্যাপার নিয়ে সিরিয়াস হয়ে যাও। আগে তো এমন ছিলে না তুমি?”
” তোমার কোনটা মজা আর কোনটা সিরিয়াস পার্থক্য করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তুমি অলওয়েজ রহস্যজনকভাবে কথা বার্তা বলো। আমার মাথায় কিছু ঢুকে না।”
আবির ঠোঁটের কোনে হাসি দিয়ে বললো,
” আচ্ছা তোমাকে একটা কুয়েশ্চন করি। আশা করি মনের মত উত্তর দিবে।
” এত রাতে না ঘুমিয়ে গল্প করবে এখন?”
” একটা রাতই মাত্র। একটু কম ঘুম হলে তেমন একটা ক্ষতি হবে না।”
” আচ্ছা বলো কি কুয়েশ্চন।”
আবির আমতা আমতা করে বললো,
” রুমি তুমি কি আমার সাথে সুখী নয়? বা এমন কিছুর অভাব অনুভব করছো যেটা আমাকে সহজ ভাবে বলতে পারছো না? নিরদ্বিধায় বলো কোন সমস্যা নেই। একজন হাজব্যান্ড বন্ধুর অনুরূপ। সো দুঃখ কষ্ট এভরিথিং বন্ধুর মত শেয়ার করা যায়।”
রুমির বুকের ভেতরটা ধুক করে উঠলো। আবিরের এমন কুয়েশ্চন শোনে মোটামুটি ঘাবড়ে গেলো সে। স্বাভাবিকভাবে উত্তর দিলো,
” কি সব অদ্ভুত কথাবার্তা বলছো? কখনো আমি এমন কিছু বলেছি তোমাকে নাকি কোন ভাবে বুঝানোর ট্রাই করেছি। তাহলে এমন কুয়েশ্চন করার মানেটা কি?”
” আমার জানার অধীকার নেই?”
” সব কিছু অধিকার দিয়ে বিবেচনা করো না আবির। হয়তো কোন কিছুর ইঙ্গিতে কথা গুলো বলছো আমায়। আমি চাইনা আমার প্রতি তোমার দ্বিমত কখনো কাজ করুক। কোন কথার পরিপ্রেক্ষিতে এধরণের কুয়েশ্চন করেছো কাইন্ডলি আমাকে বলো। আমি সব কিছু ক্লিয়ার করে দিচ্ছি।”
” তুমি সব কিছু গভীর ভাবে চিন্তা করো। চিন্তাধারা পরিবর্তন করো। অনেক রাত হয়েছে ঘুমাতে যাও।”
রুমি আর কিছু না বলে বালিশটা মাঝখানে রেখে শুয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পর আবির ও শুয়ে পড়লো। দুজন ঘুমে তলিয়ে আছে। এমন সময় দরজায় ঠুকঠুক আওয়াজ আবিষ্কার করলো আবির। এত রাতে বাসায় কে আসবে। গুটিগুটি পায়ে দরজার দিকে এগোলো। দরজা খুলতেই চিৎকার দিয়ে উঠলো আবির। তার চিৎকারে রুমি এসেও হাজির। একটা কুচকুচে কালো মৃত বিড়াল লম্বা হয়ে দরজার সামনে শুয়ে আছে। দেহটা সাদা কাপড় দিয়ে জড়ানো। ভয়ে চুপসে আছে রুমি।
” আবির বিড়ালটা এখানে আসলো কি ভাবে?”
” আমি বলবো কি করে। আমার মনে হয় ভয় দেখানোর জন্য কেউ ইচ্ছে করে এমনটা করেছে।”
” এত রাতে কে আসবে এখানে?”
” এক কাজ করো তুমি শুয়ে পড়ো। আমি দেখছি কি করা যায়।”
পরের দিন সকাল বেলা বারান্দায় পুনরায় পায়ের ছাপ আবিষ্কার করলো রুমি। পরোক্ষণে আবির ও উপস্থিত হয়ে ব্যাপারটা স্বচক্ষে দেখলো। পায়ের ছাপ গুলো বেলকনির কর্নারে যেয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
” রুমি মনে হয় আমাদের বাসার বেলকনি দিয়ে কেউ একজন রুমে প্রবেশ করে। ভালো ভাবে খেয়াল করে দেখো প্রতিটা ছাপে বালির কনা চকচক করছে।”
” তুমি এত নিশ্চিত হয়ে কি ভাবে বলছো? রাস্তার পাশে বাসা থাকলে হরহামেশাই এমন ধূলা ময়লা দেখা যায়। তাছাড়া একজন মানুষের পক্ষে বেলকনি বেয়ে রুমে প্রবেশ করা অসম্ভব।”
” তার মানে তুমি কি বলতে চাচ্ছো?”
” আবির চলো আমরা এ বাসা বিক্রি করে অন্য কোথাও চলে যায়।”
” মাথা ঠিক আছে তোমার? কি বলছো এসব একবার ভেবে দেখছো?”
” কি করবো বলো কিছুদিন যাবত অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটছে।”
” মাথা ঠান্ডা করো। দেখি কি করা যায়।
টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে বৃষ্টির স্পর্শ অনুভব করছে রুমি। রাস্তার পাশে চোখ পড়তেই খেয়াল করে একজন লোক ছাতা মাথায় দাঁড়িয়ে আছে। গায়ে কালো রেইন কোর্ট জড়ানো। অন্যদিকে ফিরে আছে। অনেকক্ষণ যাবত লোকটা তাদের বাসার সামনের রাস্তায় মূর্তির মত স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বারবার উঁকি দিয়ে বৃথা চেষ্টা করলো সে। হঠাৎ লোকটা তাদের বাসার দিকে তাকাতেই চোখ কপালে উঠে গেলো তার। এটা তো সোহেল। ওর মুখের এক পাশ থেতলে আছে। কিন্তু এটা সম্ভব কি করে। আমি আবিরের কাছে বিষয়টা খুলে বলবো। ওর প্রতি বিশ্বাস আছে আমার। কখনো অবিশ্বাস করবে না। বিড়বিড় করে কথাগুলো বললো রুমি। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ভয়ে ভয়ে রুমে গেলো সে। ভেতরে এক পা রাখতেই অবাক হয়ে গেলো সে। রুমে আবির নেই। বিছানার উপর কালো একটা বিড়াল বসে আছে।