প্রিয় সুবন্ধু সমীপে,
আমি একজন মেয়ে, বয়স ২৭ বছর, বিবাহিত। খুব বিপদে পড়ে আপনাদের লিখছি। আপনাদের গ্রুপে যেভাবে সকলের মানসিক সমস্যার সমাধান দেয়া হয়, সেটা আমার খুবই ভালো লাগে। আপনাদের গ্রুপের সব পোস্ট আমি পড়লেও, কখনো যে এ গ্রুপে লিখবো ভাবতে পারিনি। আমার সমস্যাটা বেশ অদ্ভুত, জানি না এই সমস্যার সমাধান পাবো কিনা।
আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় দুবছর হলো। দুবছরের বিবাহিত জীবন আমার খুব ভালোভাবেই কাটছিলো। আমার স্বামী সরকারি ১০ম গ্রেডের চাকরিতে আছেন, সংসারে কেবল আমার শাশুড়ি আর স্বামীই আছেন। আমার শ্বশুর মারা গেছেন আমাদের বিয়ের অনেক আগেই। আমার এক ননদ আছে, সে জামাইকে নিয়ে কানাডায় সেটেল। আমার স্বামী যথেষ্ট কেয়ারিং, আমাদের অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হলেও প্রেম জমে উঠতে খুব বেশি সময় লাগেনি। সত্যি বলতে, এই দুবছরে ওর সাথে আমার সম্পর্ক একটুও খারাপ হয়নি, এখনো একদম নতুন বউয়ের মতোই সে আমায় কেয়ার করেন। আমার শাশুড়িমাও ভীষণ ভালো। বউ-শাশুড়ির যেমন একটা দা-কুমড়া সম্পর্ক থাকে সবজায়গাতেই শুনি, আমাদের সম্পর্কটা একদমই সেরকম ছিলো না। তার সাথে আমার সম্পর্কটা ছিলো ঠিক বন্ধুর মতো। বলতে দ্বিধা নাই, আমাদের খুনসুটি দেখে অনেকে আমাদের অসম বয়সী বন্ধু বলেই ভুল করতো। আমার ননদটাও ভীষণ ভালো। বিদেশ থাকলেও নিয়মিত আমার খোঁজখবর নেয়, আমার সাথে কথা বলে। মোট কথা, আমার ম্যারিড লাইফটা মানুষ যেমন স্বপ্ন দেখে, ঠিক সেরকম স্বপ্নের মতো কেটে যাচ্ছিলো।
আমার এই স্বপ্নটা দুঃস্বপ্ন হয়ে যায় মাস তিনেক আগে। আমার শাশুড়ি হঠাৎ করেই স্ট্রোক করেন।হাসপাতালে নিতে নিতে বেশ দেরি হয়ে যায়। আমার শাশুড়ি লাইফ সাপোর্টে চলে যান। ডাক্তাররা বলছিলেন এ অবস্থায় কোনোভাবেই কারো রিকভার করা নাকি সম্ভব নয়। কিন্তু ওপরওয়ালার রহমতে আমার শাশুড়ি ভালো হয়ে ওঠেন। একমাস হাসপাতালে রাখার পর তাকে রিলিজ দেয়া হয়। তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের সাথে বাড়ি ফিরে আসেন।
তিনি সুস্থ হয়েছেন বলছি ঠিকই, কিন্তু কতোটা সুস্থ হয়েছিলেন বা আদৌ সুস্থ হয়েছিলেন কিনা আমি জানি না। এ কথাটা কেন বললাম বলছি। আমার মনে হচ্ছিলো বাসায় যাকে আনা হয়েছে তিনি আমার শাশুড়ি নন, একদম অন্য একজন মানুষ। তার কথাবার্তা কেমন যেন হয়ে গেলো। আমার হাসিখুশি শাশুড়িমা কেমন যেন গম্ভীর হয়ে গেলেন। কম কথা বলা শুরু করলেন। কারো সাথে তেমন কথা বলতেন না।এই যে আমার সাথে এতো ভালো সম্পর্ক, আমার সাথেও না। তার এই বদলে যাওয়াটায় আমি খুব টেনশনে পড়ে গেলাম।
তবে এটুকু পরিবর্তন হলেও মানা যেত। স্ট্রোকের পর অসুস্থতার এমনটা হতেই পারে, অনেকেরই নাকি হয়। কিন্তু সমস্যা শুধু এটুকু না, সমস্যা আরো গুরুতর। যে কথাগুলো এখন বলবো সেগুলো হয়তো আপনাদের কাছে অদ্ভুত লাগতে পারে, কিন্তু বিশ্বাস করুন, কথাগুলো একদম সত্যি। আমি নিজেই এই ঘটনাগুলো ফেস করেছিলাম।
আমার শাশুড়ি অন্ধকারে থাকা শুরু করলেন। যে মানুষ পারলে দিনের বেলাতেও ঘরে লাইট জ্বালিয়ে রাখতেন, তিনি রাতের বেলাতেও ঘরের সামনে মোটা পর্দা ঝুলিয়ে রাখতেন বাইরের কড়া আলো যেন তার ঘরে না ঢোকে সেজন্য। তার ঘরে কম পাওয়ারের একটা ডিমলাইট জ্বালানো থাকতো। সকাল বেলাতেও তিনি ঘরের দরজা জানালা সব বন্ধ করে রাখতেন, জানালার ওপর মোটা পর্দা দিয়ে রাখতেন।
এছাড়া মাঝেমাঝে তিনি অদ্ভুত সব কথা বলতেন। একবার তার রুমে ঘর গোছাতে গেছি, তিনি আমাকে বললেন, ‘বউমা, তুমি অন্ধকারে কখনো ছেলে ভোলানো গান শুনতে পাও?’ আমি অবাক হয়ে বললাম, ‘না তো মা।’ তিনি বললেন, ‘আমি শুনি। গভীর রাতে।শুনলেই বুকের রক্ত হিম হয়ে যায়।’ তার কথাটা শুনে আমার বুকের ভেতর পর্যন্ত ভয়ে জমে গেলো। অথচ তাকে দেখে মনে হলো তিনি একদম ভয় পাননি। অদ্ভুত হাসি লেগে ছিলো তার মুখে।
আরেকদিন আমার বোনের মেয়ে এসেছে আমাদের বাসায়। সে আমার শাশুড়িকে খুব ভালোভাবে চেনে, শাশুড়ি তাকে খুব আদর করতেন। সে আমাদের বাসায় এলেই আমার শাশুড়ির রুমে গিয়ে বসে থাকতো। সেদিনও সে তেমনি আমাদের বাসায় এসেই শাশুড়িমার রুমে ঢুকে গেছে। কিন্তু পনের মিনিট পরেই ভয়ে চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে এলো। তারপর ঝরঝর করে কান্না। তার কান্না আর থামেই না। শেষে তার কান্না থামাতে আপু তাকে বাড়িতেই নিয়ে গেলো। কি জন্য সে এতো ভয় পেলো, সেটা কিন্তু বললো না।
দুদিন পর আপু ফোন দিয়েছে। আমার ভাগ্নীর জ্বর ছিলো দুদিন, সেদিন একটু সুস্থ হয়েছে। আমি আপুকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কেন এতো ভয় পেয়েছে ও, বলেছে?’
আপু বললো, ‘কি সব যে বলে। তোর শাশুড়িকে বলিস তো এই বাচ্চা মেয়েটাকে আর যেন ভয় না দেখায়।’
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কি বলেছে আম্মা ওকে?’
আপু বললো, ‘আন্টি নাকি ওকে বলেছে অন্ধকারে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলে কেউ একজন নাকি তার দিকেও অমনিভাবে তাকিয়ে থাকবে অন্ধকারের মধ্যে থেকে।’
‘এটা কিরকম কথা?’
‘এটাই কথা। শোন, ও আরো কি বলে। আন্টির কথা শুনে নাকি সে আন্টির রুমের অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে ছিলো বেশ কিছুক্ষণ। এরপর নাকি দেখেছে ঠিকই, অন্ধকার থেকে কেউ একজন ওর দিকে তাকিয়ে আছে।’
আমার গা শিরশির করে উঠলো। আমি শাশুড়িকে গিয়ে বললাম, ‘আম্মা, বাচ্চা মেয়েটাকে এভাবে ভয় দেখালেন কেন?’
আম্মা কেমন অদ্ভুতভাবে হেসে বললেন, ‘যারা ঘরেই থাকে তাদের দেখে ভয় পাওয়ার কি আছে?’
আমার কি যে ভয় লাগলো কথাটা শুনে, বোঝাতে পারবো না। রাতে আমার স্বামীকে আমি ব্যাপারটা বললাম। কিন্তু ও এসব ব্যাপারে পাত্তাই দিলো না। বললো, ‘দেখো, মা আমাদের জন্য অনেক করেছেন। এখন উনি স্ট্রোকের পর একটু অসুস্থ, হয়তো উল্টোপাল্টা বলছেন। স্ট্রোকের পর সবারই অনেক সমস্যা হয়। অনেকে তো আপনজনদের চিনতে পারেন না, বিছানা থেকে উঠতে পারে না,বিছানা বালিশ সব নোংরা করে ফেলে। আম্মুর তো এমন কোনো বিষয় নেই। খালি একটু উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। এটুকুও নিতে পারছো না তুমি?’
কথাটা শুনে আমার খুব খারাপ লেগেছিলো। ঠিক করলাম ওকে আর কিছু বলবো না।
আমার পোস্টটা হয়তো একটু বড় হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার মানসিক অবস্থা বোঝানোর জন্য এইসব কিছু লিখতেই হবে আমাকে। এই ঘটনার কিছুদিন পর আরো বিপদ শুরু হলো। আমি কাদের কাদের যেন দেখতে লাগলাম। মাঝরাতে ঘুম ভেঙেছে, পানি খেতে উঠেছি, হঠাৎ মনে হলো মায়ের ঘর থেকে কে যেন বের হলো। আমি মায়ের ঘরের পর্দা সরিয়ে উঁকি দিয়ে ভয়ে জমে গেলাম। দেখি মা বিছানায় বসে আমার দিকে হাসিমুখে তাকিয়ে আছেন।
আমি একটা চিৎকার করে দূরে সরে গেলাম। মা হাসিমুখে বললেন, ‘কাউকে যেতে দেখেছো?’
আমি মিথ্যা করে বললাম, ‘না তো মা।’
মা বললেন, ‘মিথ্যা কেন বলো। ও তো তোমার সামনে দিয়েই বের হলো।’
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘ও কে?’
মার হাসিহাসি মুখটা হঠাৎ গম্ভীর হয়ে গেলো। তিনি বললেন, ‘ও অন্যজগতের মানুষ। ও আসবে, আবার আসবে। একা না, বেশ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আসবে। এই ঘরে এসে দাঁড়িয়ে থাকবে। তুমি থাকো, বসো আমার পাশে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখতে পাবে ওদের।’
আমার আর সেখানে দাঁড়ানোর সাহসটুকু রইলো না। দৌড়ে ঘরে চলে এলাম।
এরপর থেকে আমি মাকে খুব এড়িয়ে চলবার চেষ্টা করতাম। কিন্তু তবুও ভয়ানক ঘটনা আমার পিছু ছাড়লো না। মাঝরাতে শুয়ে শুয়ে ঘরে ছোটাছুটির শব্দ শুনতাম। একজন না, বেশ কয়েকজনের। মায়ের ওভাবে ছোটাছুটির বয়স নেই। তবে কারা ছোটাছুটি করতো ওভাবে? আমি জানি না।জানার সাহস হয়নি কখনো।
একরাতে, আমার স্বামী অফিসের কাজে গেছে চট্টগ্রাম। আমি আর মা আছি কেবল বাসায়। মাঝরাতে কেমন শব্দে আমার ঘুম ভাঙলো। আমার ঘর থেকে বের হয়ে দেখলাম, মায়ের ঘরের ভেতর থেকে কেমন গমগম শব্দ আসছে। অনেক মানুষ একসাথে কথা বললে যেমন শব্দ হয়, তেমন শব্দ।
আমি ঘরে এসে তাড়াতাড়ি দরজা আটকে শুয়ে পড়লাম। একটু পর মনে হলো পায়ের আওয়াজ পাচ্ছি। অনেকগুলো পায়ের আওয়াজ। কারা যেন হাঁটছে। আর, হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে আসছে আমার ঘরের দিকে।
আমি ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে রইলাম। পায়ের শব্দ আমার দরজার সামনে আসতে লাগলো। অনেকগুলো মানুষ এসেছে আমার দরজার সামনে। তারপর, হঠাৎ সব চুপচাপ।কোন শব্দ নেই। নিশুতি রাত যেমন নিস্তব্ধ, তেমন নিস্তব্ধ হয়ে রইলো চারদিক।
আমি হাফ ছেড়ে মাত্র বালিশ থেকে মাথা একটু উঠিয়েছি, হঠাৎ, হঠাৎ করেই আমার দরজায় কে যেন টোকা দিলো। ভয়ে আমি স্থির হয়ে গেলাম, একটা পেশিও নড়াচড়া করতে পারলাম না। টোকার শব্দটা হয়ে আবার বেশ কিছুক্ষণ নীরবতা। এরপর আবার ধপ। এবার কে যেন বাড়ি দিয়েছে দরজায়।
আর সাথে সাথেই, অনেকগুলো বাড়ির আওয়াজ শুরু হয়ে গেলো। কারা যেন প্রবল আক্রোশে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দরজার ওপর। আমি চিৎকার করতে লাগলাম, কাঁদলাম, কিন্তু বাড়ির আওয়াজ থামলো না। যেমন ছিলো, তেমনি বাড়ি পড়তে লাগলো।
এরপর, সব যেমন হঠাৎ শুরু হয়েছিলো, তেমনি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলো। কিন্তু আমি ভয়ে সারারাত ঘুমাতে পারলাম না। মনে হচ্ছিলো, ঘুমাতে গেলেই আমি আবার দরজায় বাড়ির আওয়াজ শুনবো।
আমার স্বামী ফিরে এলেন পরদিন দুপুরে। ততক্ষণে আমি আমার ডিসিশন ফাইনাল করে ফেলেছি। বললাম, ‘তোমার মা যতোদিন আছে, আমি তোমার বাসায় থাকতে পারবো না। আমি বাবার বাসায় গিয়ে থাকবো। তোমার মায়ের সাথে একসঙ্গে থাকা আমার সম্ভব নয়।’
আমার স্বামী প্রচন্ড অবাক হলো। অনেক অনুনয় বিনয় করলো, সবকিছু তাকে বলার জন্য অনুরোধ করলো, একটিবার আবার ভালোভাবে ভাবার জন্য বললো, কিন্তু আমি কিছুই শুনলাম না। আমি বাবার বাসায় চলে যাবো, এটাই তখন শেষ সিদ্ধান্ত।
কিন্তু আমি বাবার বাসায় যেতে পারলাম না। কারণ বিকেলেই আমার শাশুড়িমা মারা গেলেন। তিনি মারাও গেলেন খুব অদ্ভুতভাবে। তার ছেলে এসেছে, তিনি ছেলের সাথে দেখাও করেছেন। বিকেলে বাড়ি ছাড়ার আগে যখন মায়ের সাথে দেখা করতে যাবো, দেখি তিনি বিছানায় পড়ে আছেন। তার শরীরে প্রাণের স্পন্দন নেই। একদম হঠাৎ করে, নিভৃতেই তিনি চলে গেলেন।
সেই রাতেই তার জানাজা হয়ে গেলো। আত্মীয় স্বজনদের ভীড়ের মাঝে আমি একজন বুড়ো মতো মহিলাকে দেখলাম আমাদের বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করছে।প্রথমে আমি তাকে চিনতে পারিনি। কোথায় যেন দেখেছিলাম মনে হচ্ছিলো, কিন্তু চিনতে পারছিলাম না। একটু ভাবার পরই আমার মনে পড়লো। আমি তাকে দেখেছিলাম হসপিটালে। মা স্ট্রোক করার পর সুস্থ হয়ে যেদিন বাড়ি ফিরে আসছিলেন, সেদিন তিনি হসপিটালের গেটের সামনে বসেছিলেন। আমাকে ফিসফিস করে বলেছিলেন, ‘যারে নিয়ে যাচ্ছোস, এইটা তোর শাশুড়িমা না।তোর শাশুড়িমা মইরা গেছে। এটা অন্য জিনিস। তোরা পালা, এখনি পালা। নাইলে অনেক বিপদ আছে তোদের কপালে।’
মহিলাটার কথায় সেদিন গুরুত্ব দেই নাই, ভেবেছিলাম পাগল। কিন্তু আজ উনাকে দেখেই ভয়ে চমকে উঠলাম। আমার সাথে চোখাচোখি হতেই তিনি হেসে বাড়ির সামনে থেকে চলে গেলেন। তার হাসি দেখে মনে হলো, তিনি যেন বলছেন, ‘মানা করছিলাম না? দেখ, এখন কেমুন বিপদে পড়োস।’
প্রিয় সুবন্ধু সমীপে, আমি সত্যিই খুব বিপদে পড়েছি। মা মারা গেছেন আজ একমাস হলো। এই একমাস পর, এখনও আমি মাঝরাতে উঠলে কাদের যেন হাঁটাচলার শব্দ পাই। কারা যেন রাতের অন্ধকারে পুরো বাড়িজুড়ে হাঁটে, ফিসফিস করে কথা বলে। মাঝেমাঝে আমি তাদের দেখতেও পাই। অন্ধকার বাড়িতে ছায়ার মতো মানুষের অবয়ব হেঁটে বেড়ায়।
একরাতে মায়ের ঘর থেকে গমগম শব্দ আসছিলো, অনেক মানুষ একসাথে কথা বললে যেমন শব্দ আসে তেমন। আমি আস্তে আস্তে ঘরের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলাম এমন শব্দ কেন হচ্ছে দেখার জন্য। ঘরের দরজার পর্দা সরিয়ে আমি কি দেখেছিলাম জানেন? দেখি মা বিছানার ওপর বসে হাসিমুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি চিৎকার করে আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে এসেছিলাম। এসে দেখলাম, কেউ নেই।
আমার কথা কেউ বিশ্বাস করে না। কারণ আমি বাদে কেউ এসব দেখতে পায় না। প্রিয় সুবন্ধু সমীপে, আমাকে বাঁচান, আমাকে বাঁচান। এসব চলতে থাকলে হয়তো আমি পাগল হয়ে যাবো, নয়তো মারা যাবো। আমি এমন হতে চাই না, আরো অনেকদিন বাঁচতে চাই। প্লিজ, কেউ কোনো উপায় বলে দেন আমাকে। আমি আর সহ্য করতে পারছি না।
(এই লেখাটি আমাদের ‘সুবন্ধু সমীপে’ গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছিলো ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখে, অর্থাৎ আজ থেকে দুদিন আগে। আমাদের টিম আজ আপুটির সাথে যোগাযোগ করতে গিয়ে দেখে, তার আইডি ডিঅ্যাক্টিভেট। তার পরিচয় সম্পর্কে কিছুই জানি না আমরা, শুধু জানি একটি আসল আইডি থেকেই তার ঘটনাটা পোস্ট করা হয়েছিলো। তার পোস্টটি আমাদের এক মেম্বার সেভ করে রেখেছিলেন, তার কাছ থেকে নিয়ে ঘটনাটা পুনরায় পোস্ট করা হলো। কেউ যদি ঘটনাটি পড়ে আপুকে চিনতে পারেন, দয়া করে আমাদের সাথে যত দ্রুত সম্ভব যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। আমরা চাই, আপু যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন। কোনো খারাপ পরিণতির কথা চিন্তাও করতে চাচ্ছি না আমরা, যদিও আমাদের মন কেন যেন বলছে, হয়তো এমন কিছুই হয়েছে আসলে…)