নিয়তির_লিখা পর্বঃ ০১

কাল দুলাভাইয়ের সাথে আমার বিয়ে।যাকে আমি আমার বড় ভাইয়ের মত মানতাম তার সাথে আমার বিয়ে কখনো কল্পনাও করতে পারিনি।কিন্তু আমার ভাগ্যে হয়তো এইটাই ছিল।আমার আপুর দুইটা মেয়ের জন্যই দুলাভাইকে আমার বিয়ে করতে হচ্ছে।এই বিয়েটা সম্পূর্ণ আমার আর দুলাভাইয়ের অমতে হচ্ছে।
আপু আর দুলাভাই প্রেম করে বিয়ে করেছিল।দুইজন দুইজনকে অনেক ভালোবাসতো।তাদের প্রেম চলাকালে আমি তাদেরকে অনেক সাহায্য করেছি।তাদের বিয়ের ব্যাপার আমার বাবাকে আমি রাজি করিয়েছি।পরিবারের ছোট মেয়ে ছিলাম তাই বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসতো।আমার কথা বাবা ফেলতে পারেনি।কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস যাকে আপন বড় ভাই মানতাম তাকেই আমার বিয়ে করতে হচ্ছে।আপু আর দুলাভাইয়ের বিয়ে হয়েছিল প্রায় ৫বছর আগে।কিন্তু এতোগুলো বছরে তাদের বাচ্চা হচ্ছিল না।কারণ ডাক্তার বলেছিল আপুর একটা প্রব্লেম আছে যার কারণে আপুর বাচ্চা হলে বাচ্চা বাঁচলেও আপুকে বাঁচানো যাবে না।এই বাচ্চা না হওয়া নিয়ে আপুর শ্বশুড়বাড়িতে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছিল আপুকে।শেষমেশ আল্লাহর উপরে ভরসা করে আপু কন্সিভ করে।আপুর দুটো ফুটফুটে মেয়ে হয়।মেয়ে হওয়ার পর আপু বেঁচে ছিল।যখন শুনলাম আপু বেঁচে আছে খুব খুশি হয়েছিলাম সবাই।কিন্তু সেই খুশি বেশি দিন স্থায়ী ছিল না।বেবি হওয়ার ২মাস পরেই আপু মারা যায়।আপু মারা যাওয়ার পর বাচ্চারা আমার সাথেই থাকতো।এইদিকে দুলাভাইয়ের জন্যও মেয়ে দেখা শুরু করে।কিন্তু কোনো মেয়ে বাচ্চা নিয়ে দুলাভাইকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি।আমি বলেছিলাম বাচ্চাগুলাকে আমি বড় করবো।কিন্তু দুলাভাই তাতেও রাজি হয়নি।আমারও একটা ভবিষ্যৎ আছে তাই।এইদিকে আমার সাথে সৈকতের ৭বছরের রিলেশন।আমরা দুইজন একে অপরকে ছাড়া অচল।সৈকত বলেছিল আপুর বাচ্চাগুলো সহ আমাকে বিয়ে করবে।কিন্তু তার মা বাবা কোনোভাবে রাজী না।আমিও দু টানায় পড়ে গেলাম।একদিকে আমার আপুর বেবিরা আরেক দিকে সৈকত।দুলাভাইয়ের জন্য যখন কোনো পাত্রী পাচ্ছিল না তখন দুলাভাইয়ের মা বাবা আমার বাড়িতে প্রস্তাব পাঠায়।আপুর বেবিগুলোর জন্য আমি বিয়েটাতে রাজী হয়ে যাই।দুলাভাই জানতো আমার সৈকতের রিলেশনের কথা।তিনি বলেছিলেন আমাকে সৈকতকে বিয়ে করে ফেলতে উনি বাচ্চাদেরকে একা বড় করবেন।কিন্তু আপুর বেবিদেরকে ছাড়া থাকা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।ওরা যেন আমার নিজের বাচ্চা।তাই আমি কাল দুলাভাইয়ের সাথে বিয়ের পীড়িতে বসতে যাচ্ছি।এইদিকে সৈকত আমাকে বার বার কল দিচ্ছে তার সাথে পালিয়ে যেতে।

Be the first to write a review

Leave a Reply

We’re sorry you’ve had a bad experience. Before you post your review, feel free to contact us, so we can help resolve your issue.

Post Review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক গল্প