রুনা বলল এটা আমার ছেলে ও আমার সাথে থাকবে
তুমি অন্য জায়গায় বিয়ে করে ফেলো
আমি তোমাকে আটকাবো না
সুমন বলল
তাহলে এটা তোমার ফাইনাল ডিসিশন
তুমি আর আমার সাথে সংসার করবে না ।
রুনা বলল
না আমি মরে যাব তারপরও তোমার সংসার করবো না
এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর
সুমন রুনাকে আবার ফোন করলো
আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও
আমাকে তুমি এবার মত ক্ষমা করে দাও
আমি কথা দিলাম আর জীবনে তোমাকে কষ্ট দেবো না
রুনা বলল
আমি তোমাকে অনেক সুযোগ দিয়েছে
কিন্তু তুমি ভালো হওনি
তোমার জন্য আমি অনেক কষ্ট করছি
এখন আর পারব না তুমি আমায় ভুলে যাও ।
সুমন রুনা বাবার কাছে ফোন করলো
বাবা আমাকে ক্ষমা করে দেন
আমি জীবনে অনেক অন্যায় করছি
এবার তো আমাকে ক্ষমা করে দেন
অনেকদিন হয় আমার ছেলেকে আমি দেখি না
আমার ছেলের কসম খেয়ে বললাম
আমি এখন থেকে ভালো হয়ে যাব ।
আপনি যদি একটু রুনাকে বোঝান
তাহলে রুনা আমাকে ক্ষমা করে দিবে ।
তারপর বাড়ির সবাই রুনাকে বুঝালো
দেখ এখন আর কি করবি
তোর তো এখন ছেলে হয়ে গেছে
ছেলেটি একটি পরিচয় দরকার আছে
সুমন আমাকে অনেকবার ফোন করে
আমার কাছে অনেকবার কান্নাকাটি করছে
মনে হল ও এবার মতন ভালো হয়ে যাবে ।
সবাই মিলে রুনাকে অনেক বুঝালো
তারপর রুনা রাজি হল
রুনার বাবা এবং ফুফু মিলে ঢাকায় দিয়ে আসলো
সুমনের বাসায় ।
রুনার বাবা সুমন কে বলল
আমার মেয়েকে এবারের মতন দিয়ে গেলাম
যদি তুমি আগের মতন করো
তাহলে আমার মেয়েকে একেবারে জন্য নিয়ে যাব ।
এভাবে দুই মাস কেটে গেল
সুমন এই দুই মাস অনেক ভালো ছিল
তারপর সেই আগের মতন হয়ে গেল
এখন বিবাহিত দুই সন্তানের মা
একটি মহিলাকে বিয়ে করতে চায় ।
যখন রুনা শুনতে পারলো
সুমন সেই আগের মত হয়ে গেছে
এখন সে বিবাহিত একটি মহিলার পিছনে ঘুরে
তাকে সে বিয়ে করতে চায়।
রুনা বাসায় ফোন করে সবকিছু খুলে বলল
রুনা বাবা বলল
তোকে আর ওর সংসার করতে হবে না
তোর ভাইকে আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি
তুই আজকে মধ্যে চলে আয়
রুনার বড় ভাই রুনাকে এসে নিয়ে যায় ।
সুমন বাসায় এসে রুনাকে না পেয়ে
আবার ফোন করে রুনার কাছে
তুমি কিছু না বলে কথা চলে গেলে ।
রুনা বলল
আমি এবার একেবারে জন্য চলে আসছি
তোর মতো লম্পট ছেলের সাথে আমি আর সংসার করবো না তোকে অনেক ভালো হওয়ার সুযোগ দিয়েছি কিন্তু তুই আর ভালো হাসনাই এবার আর না।
সুমন বলল
আমি এমন কি কাজ করছি যে তুমি চলে গেলা
আমি তো অনেক ভালো হয়ে গেছি
আগের মত কোন মেয়ের সাথে কথা বলি না ।।
রুনা বলল
তুই একটি বিবাহিত মেয়ের পেছনে ঘুরো
শুনছি তুই তাকে বিয়ে করবি ।
সুমন বলল
তোমাকে এসব কথা কে বলছে
আমি শুধু ওই মেয়ের সাথে কথা বলি
খারাপ কোন কিছু করি না
তুমি যা শুনেছ আমার নামে সম্পূর্ণ ভুল ।
রুনা বলল
প্রথমে আমিও বিশ্বাস করিনি
তারপর ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে দেখলাম
আমি যা শুনছি সব সঠিক
রুনা ফোন কেটে দিয়ে ফোনটি বন্ধ করে দিল ।
সুমন ওই বিবাহিত মহিলা টা কে বিয়ে করেছে আলাদা একটা ঘর নিয়ে ভাড়া থাকে
সুমনের মা এসব ব্যাপারে কিছু জানে না ।
সুমনের মা রুনার বাবার কাছে ফোন করলো
বিয়াই আর কতদিন আপনার মেয়েকে এভাবে রাখবেন
আমার ছেলে আগে থেকে ভালো হয়ে গেছে
রুনাকে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দিন ।
রুনার বাবা বলল
আমার মেয়েকে দরকার পড়লে মেরে ফেলবো
তবুও আপনার ছেলের সাথে সংসার করাবো না
সুমনের মা বলল
আচ্ছা ঠিক আছে আপনার মেয়েকে যদি না পাঠান
আমাদের নাতিকে আমরা দেখাবেন না
কতদিন হয় আমার নাতিকে আমি দেখি না ।
রুনার বাবা বলল
আপনাদের নাতিকে কেন দেখাবো না
আপনার যখন মন চাবে আপনি এসে দেখে যাবেন ।
দুইদিন পর সুমনের মা এবং সুমনের খালা আসলো
রুনাদের বাসায় দুইদিন ছিল
সকালবেলা নাতিকে নিয়ে হাঁটতে বের হইছে
সুমনের মা এবং সুমনের খালা
তারপর গাড়িতে চড়ে টাকা চলে আসছে নাতিকে নিয়ে
রুনার ফ্যামিলিতে কেউ বুঝতে পারেনি
যে অনুরান নাতিকে নেওয়ার জন্য আসছে
উনাদের প্ল্যান হচ্ছে যদি নাতিকে ঢাকায় নিতে পারে
তাহলে রুনা চলে আসবে ।
এদিকে রুনা তার ছেলেকে না পেয়ে
পাগলের মতন কান্নাকাটি করতে থাকে
ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করে না
সারাদিন ছেলের জন্য কান্নাকাটি করে
আমার ছেলেকে তোমরা যে করে হোক এনে দাও
তা না হলে আমি বাঁচবো না ।
কিছুদিন পর রুনা বড় ভাই রুনা কে বলল
তুই কি সারাদিন এভাবে চলবি
যা হয়ে গেছে তা নিয়ে আর কান্নাকাটি করে লাভ নেই
আর যদি ছেলের জন্য এতই মন খারাপ হয়
তাহলে তুই ঢাকায় চলেযা সুমনের কাছে ।
রুনা বলল
আমি দরকার পড়লে মরে যাব
তবুও ওদের কাছে ফিরে যাবো না
রুনার বড় ভাই বলল
যদি এখানে থাকতে চাস তাহলে ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করতে হবে সবসময় হাসিখুশি থাকতে হবে আমরা তোকে আবার বিয়ে দেব ।
রুনা বললা
আমি আর কোন বিয়ে করব না
আমাকে নিয়ে যদি তোমাদের কোন সমস্যা হয়
তাহলে আমি এখান থেকে চলে যাব ।
কিছুদিন পর রুনার এক বান্ধবী আচ্ছা
রুনা ফোন করলো
রুনার বান্ধবী ঢাকা একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো
কথাবার্তা বলে রুনা ঢাকা চলে আসে
রুনা ঢাকা চাকরি করে বাবা মার জন্য খরচ পাঠাতো
মাঝেমধ্যে সুমনের কাছে ফোন করে
জিসানের কথা বলতো
অনেকদিন হয় আমার ছেলেকে আমি দেখি না
আমাকে একটু দেখার সুযোগ করবে ।
সুমন বলল
যদি দেখতে মন চায়
তাহলে আমার কাছে ফিরে আসতে হবে
আমার সাথে সংসার করতে হবে ।
রুনা বলল
তোর সাথে আমি জীবনে সংসার করবো না
তুই আমার কথা ভুলে যা
শুনছি তুই বিবাহিত মহিলাটাকে বিয়ে করছোস
ওই মহিলার সাথে সংসার কর
আমার ছেলে যদি বড় হয় তাহলে ঠিক আমার কাছে ফিরে আসবে এটা আমার বিশ্বাস ।
সুমন বলল
তুমি আমার বিবাহিত স্ত্রী
দরকার পড়লে আমি তোমাকে তুলে নিয়ে আসব
সুমন ফেসবুকে জিসানের ছবি পোস্ট করতো
আর রুনা ছবিগুলো দেখে ডাউনলোড করে রাখত
মাঝেমধ্যে রাত্রেবেলা ছবির দিকে তাকিয়ে কান্নাকাটি করতো রুনা।
একদিন হঠাৎ করে
সুমনের তৃতীয় বউ বিবাহিত মেয়েটি বিয়ে করছিল
সে মেয়েটি রুনার কাছে ফোন করে
আমি অনেক বড় একটা ভুল করছি
সুমনের মতন লম্পট ছেলেকে বিয়ে করে
সুমন অনেক খারাপ একটি ছেলে
তুমি ওকে ছেড়ে চলে গেছো অনেক ভালো একটি কাজ করছো আমি আগে জানতাম না ও আগে বিয়ে করছে
আমি আর সুমনেন সংসার করবো না
সুমনকে আমি ডিভোর্স দিয়ে দেব ।
এসব কথা শুনে রুনার মন আরো ভেঙ্গে যায়
রুনা বাসায় গিয়ে
বাসার সবার সাথে ডিসিশন নিল
আমি সুমনকে ডিভোর্স দিয়ে দেবো তোমার সবকিছু ব্যবস্থা কর যত তাড়াতাড়ি পারো ।
কিছুদিন পর
রুনা তার হাজবেন্ডকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়
রুনা এখনো ঢাকা চাকরি করে
রুনা আর দ্বিতীয়বারের মতো কোন বিয়ে করেনি