বেইমান জামাই প্রথম পর্ব / ০৩

এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর
সুমনের আরেকটি গোপন তথ্য জানতে পারলো রুনা
সুমন এর আগে আরো একটি বিয়ে করছে
গ্রামের বাড়িতে।
সেই সংসার একটি ছেলে হয়েছিল
কিন্তু ছেলেটি অল্প বয়সেই মারা যায় ।
যখন ছেলেটি মারা যায়
তখন সুমন তার প্রথম স্ত্রী কে
ডিভোর দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় ।
মেয়েটিকে কাবিনের টাকা দেওয়ার মতো টাকা ছিল না
সেজন্য বাড়ির জমির বিক্রি করতে হয় ।
এসব কথা শুনে
রুনার টেনশন এ পড়ে যায় সারাদিন কান্নাকাটি করে আর ভাবতে থাকে জীবনে কি ভুল তাই না
আমি করলাম ভালো করে সুমনের খোঁজ-খবর নেয়ার দরকার ছিল বিয়ের আগে।
এভাবে আরো ছয়টি মাস কেটে যায়
সুমন রুনাকে বলল
আমার একা পক্ষে সংসার চালানো সম্ভব না
আমি একজন কতজনকে চালাবো
এখন আমাদের সন্তান হয়েছে
সন্তানের পিছনে আমার অনেক খরচ হয় ।
যদি তুমি আর আমি আগের মত চাকরি করি
তাহলে আমাদের সংসারটা
খুব সুন্দরভাবে কাটবে ।
রুনা বলল
আমি যদি চাকরি করি
তাহলে আমার ছেলেকে দেখাশোনা করবে কে
সুমন বললো
আমাদের সন্তানকে
তোমার বাবা-মার কাছে রেখে আসো
রুনা বলল না
আমার ছেলেকে আমি কোথাও পাঠাবো না
আমার ছেলে আমার সাথে থাকবে ।
তখন সুমন বললো
আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে
গ্রাম থেকে আমি মাকে ফোন করে নিয়ে আসি
মা আমাদের সন্তানকে দেখাশোনা করবে ।
রুনা বলল আচ্ছা ঠিক আছে
যদি মা এখানে আসে
তাহলে আমি চাকরিতে যাব।
সুমনের মা গ্রামে একাই থাকে
কারণ সুমনের বাবা আরেকটি বিয়ে করেছে
দ্বিতীয় বউয়ের সাথে
সুমনে বাবা সংসার করে
তার প্রথম স্ত্রীর সাথে ভালো সম্পর্ক নেই ।
সুমনের মা গ্রাম থেকে শহরে আসলো
আর রুনা ও চাকরিতে জয়েন করল
রুনা চাকরি করে যা বেতন পেতো
সব টাকা সমুন নিয়ে নিতো ।
এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর
রুনা খেয়াল করল
সুমন ঠিকমতো বাসার সময় দেয় না
সংসার সব দায়িত্ব রুনা দেখাশোনা করত
সুমন অন্য মেয়েদের সাথে সময় দিত ।
রুনা যদি সুমনকে কিছু বলতো
তাহলে সুমন রুনাকে মারধর করতো
এসব ব্যাপার নিয়ে সবসময় ঝগড়া হতো
রুনা তার শাশুড়িকে সবকিছু বলতো
কিন্তু রুনার শাশুড়ির কিছু বলতো না সুমনকে।
এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর
সুমনের এক বন্ধু রুনাকে ফোন করে বলল
সুমন একটি মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে গেছে
ওদের সম্পর্কটা আমার কাছে ভালো লাগছে না
শুনছি ওর নাকি বিয়ে করবে ।
ভাবি আপনি সুমনকে একটু বোঝেন
আমরা সুমনকে অনেক বুঝেছি
সুমন আমাদের কোন কথা শোনে না
আমাদের কিছু না জানিয়ে ও মেয়েদের সাথে ঘুরতে যায় আরো অনেক কিছু করে ।
সুমন রাতের বেলা বাসায় ফিরে আসলো
রুনা সুমনকে বলল
তোমার যদি বিয়ে করতে মন চায়
তাহলে তুমি দিয়ে করতে পারো
আমি তোমাকে বাধা দেব না
আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাব ।
সুমন বললো
তুমি এগুলা কি বলতেছো
তোমাকে এসব কথা কে বলছে
আমি তোমাকে ভালবাসি
আর তোমাকে নিয়ে সবসময় থাকবো ।
রুনা বলল
আমি তোমার সব খবর রাখি
তুমি কই যাও কি কর
কোন মেয়ের সাথে ঘুরতে যাও
সব খবরই আমি রাখি ।
সুমন বললো
আচ্ছা ঠিক আছে
আজকের পর থেকে আমি আর কোন মেয়ের সাথে ঘুরতে যাব না আর তোমার সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করব না আমি ভুল করছি
আমায় তুমি ক্ষমা করে দাও ।
কিছুদিন সুমন ভালই ছিল
তারপর সেই আগের মত হয়ে গেল
সুমনের এক বন্ধু রুনাকে এসে বলল
সুমন আজকে একটি মেয়েকে বিয়ে করতে গিয়েছিল
কিন্তু বিয়ে করতে সাক্ষী লাগে
সেজন্য আজকে সুমন বিয়ে করতে পারিনি
আমাদের সবাইকে সুমন ফোন করছিল
আমরা বলছি আজকে আমরা পারবো না
আমরা আর এভাবে কতদিন ওর কাছ থেকে লুকিয়ে থাকবো সুমন অনেক খারাপ হয়ে গেছে ।
রুনা এসব কথা শুনে
ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে আসে
রুনা তার বাবা মাকে সবকিছু খুলে বলল
রুনার বাবা বলল
তোকে আরো ওর ভাত খাওয়াবো না
আজকের পর তুই এখানে থাকবি ।
সুমন বাসায় এসে রুনাকে না পেয়ে
বুঝতে পারলো রুনা চলে গেছে
সমন তার মাকে জিজ্ঞাসা করল
তুমি কই ছিলা তুমি রুনাকে আটকাতে পারলা না।
সুমনের মা বলল
আমি বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম
রুনা বাসা থেকে কিছু নিয়ে যায়নি
যেকাপ পড়া ছিল ওই কাপড় পড়ে তো ছেলেকে নিয়ে চলে গেছে তার বাবার বাড়ি ।
সুমন রুনাকে ফোন করলো
তুমি এভাবে কিছু না বলে চলে গেলে কেন
রুনা বলল
আজকের পর থেকে আমি আর তোমার সাথে থাকবো না আমি একেবারে চলে আসছি
তোমায় অনেক সুযোগ দিয়েছি
তোমায় অনেক ক্ষমা করছি
এবার আর করব না ।
সুমন বলল
তুমি চলে গেছো সমস্যা নাই
কিন্তু আমার ছেলেকে তুমি নিয়ে গেছো কেন
আমার ছেলেকে তুমি ফিরিয়ে দিয়ে যাও
রুনা বলল
এটা আমার ছেলে ও আমার সাথে থাকবে
তুমি অন্য জায়গায় বিয়ে করে ফেলো
আমি তোমাকে আটকাবো না

Be the first to write a review

Leave a Reply

We’re sorry you’ve had a bad experience. Before you post your review, feel free to contact us, so we can help resolve your issue.

Post Review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক গল্প