ভাগ্যাকাশের ধ্রুবতারা। পর্বঃ০১.

ভাগ্যাকাশের ধ্রুবতারা।
কলমেঃ জাহান
পর্বঃ১.
ঐশানির নতুন চাকরি। একজন ম্যানেজারের সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেছে সে। অফিসের নিয়মকানুন, নতুন পরিবেশ—সবকিছু শেখার মাঝেই দিনগুলো কেটে যাচ্ছে। কাজের চাপ তো থাকবেই, নতুন কর্মী বলে একটু বেশিই যেন।

প্রতিদিন নির্ধারিত সময়েই অফিসে যায় ঐশানি। মন দিয়ে কাজ শেখে, চেষ্টা করে কোনো ভুল না করতে। তবে ইকতিদার স্যারের সঙ্গে তার দেখা-সাক্ষাৎ খুব কমই হয়। একটা দূরত্ব থেকেই গেছে।

এভাবে কয়েক মাস কেটে যায়। হঠাৎ একদিন অফিসে খবর আসে—ইকতিদারের ব্যক্তিগত সহকারী মারুফ ছুটিতে চলে গেছে। ফলে কিছুদিনের জন্য ঐশানিকে ইকতিদারের সহকারী হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে।

ঐশানির ম্যানেজার আসিফ আহমেদ ভীষণ রকম ভীতু ইকতিদারের ব্যাপারে। তিনি ঐশানিকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন,
“সব কিছু ম্যানেজ করে রাখো, যেন কোনো সমস্যা না হয়। ফাইল, খাবার, মিটিং—সব কিছু ঠিকঠাক থাকবে।”

ঐশানি যথাসম্ভব গুছিয়ে রাখে।

সকালবেলা, ইকতিদারের কেবিনে—

ঐশানি ভদ্রভাবে দরজা ঠেলে বলে,
“গুড মর্নিং, স্যার।”

ইকতিদার চোখ তুলে তাকায়, “হু, আপনি কে? আসিফ আহমেদ কোথায়?”

“স্যার, আমি আসিফ আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ করছি। উনি আজ মিটিং এবং ফাইলের কাজে ব্যস্ত, তাই আজ আমি আপনার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছি।”

ইকতিদার ঠাণ্ডা স্বরে বলল, “বুঝতে পেরেছি, এত জ্ঞান দেয়ার দরকার নেই। আমার জন্য ব্রেকফাস্টের ব্যবস্থা করুন।”

“জি, স্যার। আপনি কী খাবেন ব্রেকফাস্টে?”

ইকতিদার কটুকণ্ঠে বলে ওঠে, “হোয়াট! আপনি জানেন না আমি সকালে কী খাই? সকালবেলা এসব জিজ্ঞেস করে মুড নষ্ট করছেন!”

ঐশানি একটু কেঁপে ওঠে, “জি জি স্যার। সরি স্যার। আমি ব্যবস্থা করছি।”

সকালবেলার সেই টানটান পরিস্থিতির পরে বেলা ১১:৩০টায় মিটিং শুরু হয়। মিটিং শুরু হলে ঐশানির দায়িত্ব কিছুটা হালকা হয়ে আসে। এবার শুধু দুপুরের খাবার প্রস্তুত করতে হবে। অতিথিদের জন্যও ব্যবস্থা করতে হয়, তাই ঐশানি ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

দিনটি মোটামুটি ভালোভাবেই শেষ হয়।

পরের দিন—

ঐশানি যথারীতি সকাল সকাল অফিসে আসে, কাজ করে। বিকাল ৩টার দিকে ইকতিদার তাকে ডেকে বলে,
“এই সব ফাইলগুলো দুদিনের মধ্যে চেক করে রিপোর্ট তৈরি করে দিন।”

ঐশানির যেন মাথায় বাজ পড়ে। এত ফাইল? কখনো তো সে এমন কাজ করেনি! কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে আসিফকে জানায়।

আসিফ কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলে, “তুমি এখন স্যারের সহকারী। তুমি জানো কীভাবে কাজ করতে হয়, তাই না?”

ঐশানির মাথায় হাত! সে কি পারবে এই কাজ? ইকতিদার কি ইচ্ছে করেই ফাঁসাতে চাইছে? নাকি এটাই তার স্বভাব?

ঐশানি রাতে বাসায় গিয়ে রাত ৪টা পর্যন্ত কাজ করে। পরের দিন অফিসে পুরো সময় কাটিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করেও শেষ করতে পারে না।

সন্ধ্যা ৬টা—
ইকতিদার অফিস ছাড়ে। যাওয়ার সময় সিসি টিভিতে দেখে ঐশানি এখনো কাজ করছে।

ঐশানি বাসায় ফেরে রাত ৮টায়। পরদিন সকাল ১১টায় জমা দিতে হবে ফাইলগুলো, তাই সে রাত ৪টা পর্যন্ত কাজ করে যায়।

পরদিন—

সকাল ১০টায় অফিসে ঢোকে ঐশানি। অফিসে অদ্ভুত থমথমে পরিবেশ। সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক সহকর্মী বলে উঠল,
“স্যার খুব রেগে আছেন। আপনাকে খুঁজছেন। ফাইলগুলো জমা দেননি এখনো, ফাইলগুলো খুব ইম্পরটেন্ট, ম্যাম।”

ঐশানির পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে। ভয়ে ভয়ে ইকতিদারের চেম্বারের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,
“May I come in, sir?”

ইকতিদার চিৎকার করে উঠে,
“এখন আপনার আসার সময় হয়েছে? আপনি কি মালকিন হয়ে গেছেন, যখন খুশি তখন আসবেন?”

ঐশানি কাঁপতে কাঁপতে ফাইলগুলো এগিয়ে দেয়, “এই যে, স্যার…”

ইকতিদার ফাইল দেখতে শুরু করল। পাশে বেশ কিছু ফাইলের কাজ অসম্পূর্ণ দেখে সে রাগে ফেটে পড়ল।

“গেট আউট!”

ঐশানি চোখের জল গোপন করতে না পেরে নিজের ডেস্কে ফিরে গিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল।

ইকতিদার তখন নিজের কক্ষে একা বসে বলতে লাগল,
“কোত্থেকে যে আসে এসব! কোনো প্রফেশনালিজম নেই। না আছে অভিজ্ঞতা, না আছে দক্ষতা। একটা কাজ ঠিকমতো করে না। আসিফ কোনো কাজের না, মারুফের তো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না—দেশেই আছে কি না কে জানে! সব কটাকে ছাঁটাই করে দেব।”

দিন যেতে থাকে। অফিসে কাজের চাপ বাড়ে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে ঐশানির উপর মানসিক নির্যাতন। ঐশানি কিছুই বলতে পারে না—এক বছরের কনট্রাক্ট বেঁধে রেখেছে তাকে।

ইকতিদারের প্রতিযোগীও কম নয়। শেয়ার বাজারের ওঠানামায় ইকতিদারের মেজাজ তীব্র রকম খারাপ থাকে। রোজ অফিসে কোনো না কোনো কারণে রাগারাগি হয়। আর প্রতিদিনই অপমানিত হতে হয় ঐশানিকে।

ঐশানির পরিবারের সদস্যরাও অসন্তুষ্ট। এমন চাকরির জন্য ঐশানির নিজেরও শরীর-মন ভেঙে পড়েছে। সময়মতো খাওয়া-দাওয়া নেই, ছুটিও পাচ্ছে না। কলেজের পড়াশোনাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

একদিন—

ইকতিদার হঠাৎ বলল,
“LM সাইটে কনস্ট্রাকশনের যে কাজ চলছে, আপনি (ঐশানি), ড্রাইভার আর মিরাজকে নিয়ে সেখানে যাবেন। বিকালে এসে আমাকে রিপোর্ট দেবেন। আমরা তখন মিটিংয়ে থাকব। ওকে?”

ঐশানি মাথা নাড়ল, “জি, স্যার।”

ঐশানির নতুন চাকরি। একজন ম্যানেজারের সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেছে সে। অফিসের নিয়মকানুন, নতুন পরিবেশ—সবকিছু শেখার মাঝেই দিনগুলো কেটে যাচ্ছে। কাজের চাপ তো থাকবেই, নতুন কর্মী বলে একটু বেশিই যেন।

প্রতিদিন নির্ধারিত সময়েই অফিসে যায় ঐশানি। মন দিয়ে কাজ শেখে, চেষ্টা করে কোনো ভুল না করতে। তবে ইকতিদার স্যারের সঙ্গে তার দেখা-সাক্ষাৎ খুব কমই হয়। একটা দূরত্ব থেকেই গেছে।

এভাবে কয়েক মাস কেটে যায়। হঠাৎ একদিন অফিসে খবর আসে—ইকতিদারের ব্যক্তিগত সহকারী মারুফ ছুটিতে চলে গেছে। ফলে কিছুদিনের জন্য ঐশানিকে ইকতিদারের সহকারী হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে।

ঐশানির ম্যানেজার আসিফ আহমেদ ভীষণ রকম ভীতু ইকতিদারের ব্যাপারে। তিনি ঐশানিকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন,
“সব কিছু ম্যানেজ করে রাখো, যেন কোনো সমস্যা না হয়। ফাইল, খাবার, মিটিং—সব কিছু ঠিকঠাক থাকবে।”

ঐশানি যথাসম্ভব গুছিয়ে রাখে।

সকালবেলা, ইকতিদারের কেবিনে—

ঐশানি ভদ্রভাবে দরজা ঠেলে বলে,
“গুড মর্নিং, স্যার।”

ইকতিদার চোখ তুলে তাকায়, “হু, আপনি কে? আসিফ আহমেদ কোথায়?”

“স্যার, আমি আসিফ আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ করছি। উনি আজ মিটিং এবং ফাইলের কাজে ব্যস্ত, তাই আজ আমি আপনার সহকারী হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছি।”

ইকতিদার ঠাণ্ডা স্বরে বলল, “বুঝতে পেরেছি, এত জ্ঞান দেয়ার দরকার নেই। আমার জন্য ব্রেকফাস্টের ব্যবস্থা করুন।”

“জি, স্যার। আপনি কী খাবেন ব্রেকফাস্টে?”

ইকতিদার কটুকণ্ঠে বলে ওঠে, “হোয়াট! আপনি জানেন না আমি সকালে কী খাই? সকালবেলা এসব জিজ্ঞেস করে মুড নষ্ট করছেন!”

ঐশানি একটু কেঁপে ওঠে, “জি জি স্যার। সরি স্যার। আমি ব্যবস্থা করছি।”

সকালবেলার সেই টানটান পরিস্থিতির পরে বেলা ১১:৩০টায় মিটিং শুরু হয়। মিটিং শুরু হলে ঐশানির দায়িত্ব কিছুটা হালকা হয়ে আসে। এবার শুধু দুপুরের খাবার প্রস্তুত করতে হবে। অতিথিদের জন্যও ব্যবস্থা করতে হয়, তাই ঐশানি ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

দিনটি মোটামুটি ভালোভাবেই শেষ হয়।

পরের দিন—

ঐশানি যথারীতি সকাল সকাল অফিসে আসে, কাজ করে। বিকাল ৩টার দিকে ইকতিদার তাকে ডেকে বলে,
“এই সব ফাইলগুলো দুদিনের মধ্যে চেক করে রিপোর্ট তৈরি করে দিন।”

ঐশানির যেন মাথায় বাজ পড়ে। এত ফাইল? কখনো তো সে এমন কাজ করেনি! কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে আসিফকে জানায়।

আসিফ কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলে, “তুমি এখন স্যারের সহকারী। তুমি জানো কীভাবে কাজ করতে হয়, তাই না?”

ঐশানির মাথায় হাত! সে কি পারবে এই কাজ? ইকতিদার কি ইচ্ছে করেই ফাঁসাতে চাইছে? নাকি এটাই তার স্বভাব?

ঐশানি রাতে বাসায় গিয়ে রাত ৪টা পর্যন্ত কাজ করে। পরের দিন অফিসে পুরো সময় কাটিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করেও শেষ করতে পারে না।

সন্ধ্যা ৬টা—
ইকতিদার অফিস ছাড়ে। যাওয়ার সময় সিসি টিভিতে দেখে ঐশানি এখনো কাজ করছে।

ঐশানি বাসায় ফেরে রাত ৮টায়। পরদিন সকাল ১১টায় জমা দিতে হবে ফাইলগুলো, তাই সে রাত ৪টা পর্যন্ত কাজ করে যায়।

পরদিন—

সকাল ১০টায় অফিসে ঢোকে ঐশানি। অফিসে অদ্ভুত থমথমে পরিবেশ। সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক সহকর্মী বলে উঠল,
“স্যার খুব রেগে আছেন। আপনাকে খুঁজছেন। ফাইলগুলো জমা দেননি এখনো, ফাইলগুলো খুব ইম্পরটেন্ট, ম্যাম।”

ঐশানির পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে। ভয়ে ভয়ে ইকতিদারের চেম্বারের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,
“May I come in, sir?”

ইকতিদার চিৎকার করে উঠে,
“এখন আপনার আসার সময় হয়েছে? আপনি কি মালকিন হয়ে গেছেন, যখন খুশি তখন আসবেন?”

ঐশানি কাঁপতে কাঁপতে ফাইলগুলো এগিয়ে দেয়, “এই যে, স্যার…”

ইকতিদার ফাইল দেখতে শুরু করল। পাশে বেশ কিছু ফাইলের কাজ অসম্পূর্ণ দেখে সে রাগে ফেটে পড়ল।

“গেট আউট!”

ঐশানি চোখের জল গোপন করতে না পেরে নিজের ডেস্কে ফিরে গিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল।

ইকতিদার তখন নিজের কক্ষে একা বসে বলতে লাগল,
“কোত্থেকে যে আসে এসব! কোনো প্রফেশনালিজম নেই। না আছে অভিজ্ঞতা, না আছে দক্ষতা। একটা কাজ ঠিকমতো করে না। আসিফ কোনো কাজের না, মারুফের তো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না—দেশেই আছে কি না কে জানে! সব কটাকে ছাঁটাই করে দেব।”

দিন যেতে থাকে। অফিসে কাজের চাপ বাড়ে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে ঐশানির উপর মানসিক নির্যাতন। ঐশানি কিছুই বলতে পারে না—এক বছরের কনট্রাক্ট বেঁধে রেখেছে তাকে।

ইকতিদারের প্রতিযোগীও কম নয়। শেয়ার বাজারের ওঠানামায় ইকতিদারের মেজাজ তীব্র রকম খারাপ থাকে। রোজ অফিসে কোনো না কোনো কারণে রাগারাগি হয়। আর প্রতিদিনই অপমানিত হতে হয় ঐশানিকে।

ঐশানির পরিবারের সদস্যরাও অসন্তুষ্ট। এমন চাকরির জন্য ঐশানির নিজেরও শরীর-মন ভেঙে পড়েছে। সময়মতো খাওয়া-দাওয়া নেই, ছুটিও পাচ্ছে না। কলেজের পড়াশোনাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

একদিন—

ইকতিদার হঠাৎ বলল,
“LM সাইটে কনস্ট্রাকশনের যে কাজ চলছে, আপনি (ঐশানি), ড্রাইভার আর মিরাজকে নিয়ে সেখানে যাবেন। বিকালে এসে আমাকে রিপোর্ট দেবেন। আমরা তখন মিটিংয়ে থাকব। ওকে?”

ঐশানি মাথা নাড়ল, “জি, স্যার।”


#ভাগ্যাকাশের ধ্রুবতারা
#Jahan
#everyone
#followers
কেমন হলো সবাই কমেন্ট করবেন।
আপনাদের উৎসাহ পেলে লিখবো।

Be the first to write a review

Leave a Reply

We’re sorry you’ve had a bad experience. Before you post your review, feel free to contact us, so we can help resolve your issue.

Post Review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক গল্প