বৃহস্পতিবারের সকাল।আজ অফিসে একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রেজেন্টেশন। মূলত আবির রহমান নিজে উপস্থিত থাকবেন, এবং ক্লায়েন্টদের সামনে নতুন একটি পরিকল্পনার খসড়া তুলে ধরা হবে।আমি সাধারণত শুধু রিসিপশন সামলাই, কিন্তু হঠাৎ রাশেদ সাহেব এসে বললেন,মিথিলা, তুমি এই ফাইলগুলো প্রেজেন্টেশনের আগে গুছিয়ে দেবে। আর একটু সময় পেলে আমাকে স্লাইডগুলো সাজাতে সাহায্য করবে?আমি রাজি হয়ে গেলাম। ভিতরে ভিতরে উত্তেজনা, কারণ আজকের দিনটা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রেজেন্টেশন শুরু হলো।হঠাৎ রাশেদ সাহেবের ল্যাপটপে টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা দিল। আরিজ রহমান চোখ গরম করে তাকালেন—এভাবে কি মিটিং হয়?সবাই চুপ।আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম,স্যার, আপনি যদি আমাকে একটু সময় দেন, আমি আমার ল্যাপটপে ফাইলগুলো খুলে দিতে পারি। আমি সকালে কাজ করেছি এগুলোর ওপর।
আবির খানিকটা অবাক। তারপর বললেন,তুমি পারবে?আমি বললাম,আমি বিশ্বাস করি, পারবো।আমি খুব সুন্দরভাবে পুরো প্রেজেন্টেশনটি পরিচালনা করলাম। স্লাইড পরিবর্তন, ক্লায়েন্টের প্রশ্নের উত্তর, এবং পরিসংখ্যান ব্যাখ্যা—সব মিলিয়ে সবাই আমাকে প্রশংসা করতে লাগল।
আবির রহমান একটু পেছনে দাঁড়িয়ে চুপচাপ তাকিয়ে রইলেন।কিন্তু তার চোখে প্রথমবারের মতো একটা স্পষ্ট অনুভূতি ফুটে উঠল—এই মেয়েটা আলাদা। ভীষণ আলাদা।
চা বিরতির সময় আমি একা ক্যান্টিনে বসেছিলাম।
আবির এসে বললেন,তুমি আজ খুব ভালো করেছো।আমি তাকিয়ে বললাম,ধন্যবাদ স্যার। আপনি আমাকে বিশ্বাস করেছিলেন বলে সাহস পেয়েছি।তিনি চোখের দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে বললেন,আমি বিশ্বাস করিনি। কিন্তু এখন ভাবছি—তুমি হয়তো বিশ্বাসযোগ্য।আমরা দুইজনেই একটু চুপচাপ।
অদ্ভুত এক নীরবতা, কিন্তু চোখে একরকম বোঝাপড়া।
সেই রাতেই আবির রহমান অফিসের রেকর্ড ঘাঁটতে লাগলেন—মিথিলার জীবন, আগের কাজ, পারিবারিক তথ্য… কিন্তু খুব বেশি কিছু পাননি।তিনি মুচকি হেসে বললেন,এই মেয়ে… কেমন একটা রহস্যময় জিনিস। একটা যুদ্ধ আর কোমলতার মিশেল।
এরপরের কিছুদিন আবির মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করতেন—
তুমি কোথা থেকে এসেছো?তোমার লেখাপড়া কোথায় শেষ?বই পড়ো?মিথিলা সব প্রশ্নের জবাবে হাসতেন। কখনো সরাসরি, কখনো এড়িয়ে যেতেন।
তবে এতদিনের কঠিন হৃদয়ের মানুষ আবির রহমান এবার আর কড়া চোখে নয়, মায়ার চোখে দেখতে শুরু করলেন।
সে নিজেকেই প্রশ্ন করতে লাগলেন—আমি কি তাকে অপমান করেছিলাম? নাকি আমি আমার সীমাবদ্ধতা ঢাকতে চেয়েছিলাম?
একদিন মিথিলা অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে হঠাৎ আবির তার গাড়ি নিয়ে পাশে এসে দাঁড়ালেন।আমি তোমাকে একটু ড্রপ দিতে পারি?মিথিলা প্রথমে না বললেও আবির জোর করলেন না, শুধু বললেন,আমি তোমার সম্পর্কে অনেক কিছু না জেনেই ভুল ধারণা করেছিলাম। এখন মনে হয়, আমি ভুল করেছি।
মিথিলা চোখে পানি চলে এলো।কিন্তু সে মুখে হাসি রেখে বলল,আপনি যদি সত্যি বুঝে থাকেন, তাহলে এটাই আমার সবচেয়ে বড় সাফল্য।চুপচাপ বসে আছে মিথিলা অফিসের রুফটপে। বিকেলের নরম রোদে তার মুখটা ঝলমল করছে না, বরং চোখ দুটো গভীর।একটা ফোন এসেছিল একটু আগে—আবির রহমান।সে বলেছিল:তোমার সাথে কিছু কথা আছে। জরুরি।
মিথিলা ভাবছে,হয়তো আজ সে বুঝিয়ে দেবে আমি তার যোগ্য না। হয়তো আজ আমার স্বপ্নটা থেমে যাবে।
কিছুক্ষণ পর আবির এল। তার মুখে আজ কোনো গাম্ভীর্য নেই। বরং একধরনের টানটান উত্তেজনা।সে চুপচাপ পাশে বসে বলল,তুমি আমার চিন্তা থেকে যাচ্ছো না, মিথিলা। তুমি শুধু একজন দক্ষ কর্মী না, তুমি এক অসাধারণ মেয়ে। আমি… আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
মিথিলা নিঃশ্বাস আটকে ফেলল।তারপর ধীরে ধীরে বলল,
আবির, তুমি জানো না আমি কে… তুমি আমার সম্পর্কে কিছুই জানো না।আবির বলল,জানি না। কিন্তু জানতে চাই। সব কিছু। সত্য।
মিথিলা চোখ বন্ধ করে নিল। তারপর আস্তে আস্তে খুলে বলল,আমি ছোটবেলায় বাবা হারিয়েছি। মা আর দুই বোন নিয়ে কষ্টে বড় হয়েছি। পড়াশোনা চালাতে টিউশন করতাম।
একদিন বড় বোনের অসুস্থতার খবর পেয়ে তার বাড়ি গিয়েছিলাম। সেদিন… তার স্বামী আমাকে একা পেয়ে… আমার জীবনটা শেষ করে দেয়।
আবিরের চোখ স্থির।
আমি কাউকে কিছু বলতে পারিনি। ভয়ে, লজ্জায় চুপ ছিলাম। এক মাস পর মা বুঝতে পারে, আমি অন্তঃসত্ত্বা। তখন সবাই মিলে একটা সিদ্ধান্ত নেয়—আমাকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেওয়া হবে।একজন মানুষ… আমার স্বামী… বাসর রাতে আমার পেটে লাথি মেরে বলেছিল—তুই নষ্ট মেয়ে।তারপর দিনের পর দিন অত্যাচার, গর্ভপাত, নির্যাতন, গালিগালাজ… শেষমেশ আমি সব ছেড়ে একা চলে আসি।
এই শহরে এসে আবার বাঁচতে শিখছি। কিন্তু আমি জানি, আমি আর সাধারণ কেউ না। আমার শরীর, মন, আত্মা—সবকিছু ভেঙে গেছে একবার।
চোখ দিয়ে অশ্রু গড়াচ্ছে।সে বলল,এই আমি, আবির। তুমি যদি চাও, এখানেই থেমে যেতে পারো। আমি তোমার ভালোবাসার উপযুক্ত না।
আবির কিছু বলছে না। সে শুধু স্থির চোখে মিথিলার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।তারপর সে ধীরে ধীরে বলল,
তোমার শরীর ভেঙেছে, মন ভেঙেছে, তবু তুমি ভাঙনি। তুমি এখনও নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছো। আমি এমন একজনকেই চাই।তোমার অতীত আমার ভালোবাসাকে ছোট করে না, বরং আরও গভীর করে তোলে।
তোমার সাহস, তোমার সত্য বলা—এটাই তোমার সবচেয়ে বড় পরিচয়।আমি তোমার পাশে থাকতেই চাই। না দয়া করে, বরং গর্ব করে।
মিথিলার চোখে এবার আনন্দের অশ্রু।
সে বলল,তুমি জানো তো, এই সমাজ তোমার এই সিদ্ধান্ত সহজে মেনে নেবে না?আবির হেসে বলল,তোমার হাতটা ধরার পর আমি জানি, এখন আমাকে সমাজকে নয়, তোমাকে জয় করতে হবে।
রাতের আকাশে চাঁদ ছিল, কিন্তু মেঘের আড়ালে।
তেমনই, আজ মিথিলা আর আবিরের ভালোবাসাও ছিল — সমাজের চোখে লুকোনো, কিন্তু হৃদয়ের আকাশে উজ্জ্বল।
একটা ছোট্ট কাবিন হলো।দুজন সাক্ষী, জেরিন আর তার এক পরিচিত বন্ধু।
আবির সাদা পাঞ্জাবি পরে দাঁড়িয়ে ছিল। মিথিলার পরেছিল সাদামাটা একটা সালোয়ার কামিজ। কপালে ছোট্ট টিপ, চোখে সজাগ আর শ্রদ্ধায় ভরা এক নতুন বিশ্বাস।
কাজী সাহেব জিজ্ঞেস করলেন —আপনি মিথিলা ইসলাম আবির রহমানকে স্বামী হিসেবে কবুল করছেন?
মিথিলা চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস নিল,তারপর ধীরে বলল —
কবুল করি।
তাদের প্রথম রাত, কোনো লজ্জার নয়, শুধু শ্রদ্ধার
রাতটা কাটল এক নিঃশব্দ ভালোবাসায়।কোনো স্পর্শ ছিল না শরীরের দিকে, বরং মনকে জড়িয়ে রাখার এক অদ্ভুত আন্তরিকতায়।
আবির বলল —আমি চাই না তুমি ভয় পাও। তুমি যখনই মনে করবে, তখনই আমার হাত ধরো। আমি অপেক্ষা করব।
মিথিলা বলল —তোমার মতো কেউ যদি আমার জীবন শুরুর মানুষ হয়, তবে আমার সব ভাঙা জায়গা জোড়া লাগবেই একদিন।
তিন দিন পরে খবরটা পৌঁছে গেল আবিরের পরিবারে।
তখন দুপুর।আবিরের বাবা, আব্দুল কাইয়ুম সাহেব, ফোন করে বললেন —এই খবরটা কি সত্যি? তুমি ওই মেয়েটাকে বিয়ে করেছো?
আবির বলল —জি, আমি ওকে ভালোবেসে, সম্মানের সাথে বিয়ে করেছি।তুমি জানো এই মেয়ে কে? কোথা থেকে এসেছে, কী ইতিহাস তার?আমি জানি, সে সব বলেছে। আমি জানি সে কত সাহসী। আর সেই কারণেই আমি তাকে বিয়ে করেছি।
তুমি যদি ওকে ছাড়ো না, তবে তুমি আর আমার ছেলে না! আমি সমাজে মুখ দেখাতে পারব না!আবিরের গলায় রাগ বা ভয় কিছুই ছিল না।শুধু একটাই কথা বলল —আমি বহুদিন আপনার মতো হওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু এখন আমি আমার মতো হতে চাই। আমি মিথিলার পাশে থাকব।
আবির ফোন রেখে চুপচাপ বসে রইল। মিথিলা বুঝে ফেলল — সে তার পরিবার হারাচ্ছে আমার জন্য।
সে বলল —তুমি চাইলে… আমিও চলে যেতে পারি। আমি আবার একা চলতে পারব।
আবির বলল —তুমি যাবে না। আমি কারও অনুমতির জন্য ভালোবাসিনি। আমি ভালোবেসেছি কারণ তুমি তা পাওয়ার যোগ্য।দুজন মিলে শহরের এক কোণায় ছোট্ট একটা ভাড়া বাসা নিলো। পুরনো চেয়ার, একটা খাট, একটা চুলা আর একফালি বারান্দা।তবে এতকিছুর মধ্যেও এক রকম শান্তি।
সকালে মিথিলা রান্না করে, আবির অফিসে যায়। রাতে একসাথে চা খায়, বই পড়ে, ভবিষ্যতের স্বপ্ন আঁকে।
মিথিলা মাঝে মাঝে বলে —আমার তো স্বপ্নই ছিল না। তুমি দিলে।
আবির হাসে —তোমার স্বপ্ন ছিল, শুধু তুমি ভুলে গিয়েছিলে।ভোরবেলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে মিথিলা এক কাপ চা হাতে নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল।
আকাশে সূর্য উঠেছে, কিন্তু এই সংসারে এখনও রোদের মতো উজ্জ্বল কিছু আসেনি।
ছোট্ট ঘর, দুটো প্লাস্টিকের চেয়ার, এক পুরনো বিছানা। রান্নার চুলাটা মাঝেমধ্যে কাজ করে, মাঝেমধ্যে হঠাৎ নিভে যায়।আবির এখন একটা প্রজেক্টের ছোট চাকরি করছে। খুব বেশি বেতন না, তবু তাদের দুইজনের জীবন চালানোর মতো।
একদিন সকালে বাজারে গিয়ে মিথিলা ফিরল হাতে অল্প কিছু সবজি।আবির তাকিয়ে বলল —তুমি এত কম আনলে কেন?
মিথিলা মুচকি হেসে বলল —তোমার টাকায় আমি রাজা-রানীর মতোই খুশি। শুধু একটাই অনুরোধ—তুমি কখনো আমাকে ছেড়ে যেও না।আবির তার কপালে চুমু খেয়ে বলল —তোমার পাশে থাকাটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।
একদিন পাশের বাসার একজন মহিলা এল।
মিথিলার দিকে তাকিয়ে বলল —তোমরা নাকি পালিয়ে বিয়ে করেছো? মেয়েটা তো নাকি… ঘরে বসার মতো না!
আবির ছিল না তখন। মিথিলা মুখে কিছু বলল না, শুধু শান্তভাবে দরজা বন্ধ করে দিল।কিন্তু ভেতরে কেঁপে উঠল।
রাতে আবির ফিরলে কিছু না বললেও, আবির বুঝে গেল।
তারা যা খুশি বলুক। আমি জানি তুমি কে। আমি তোমাকে জানি, বুঝি, ভালোবাসি।
সেই রাতেই মিথিলা সিদ্ধান্ত নেয়—আমি আর শুধু ঘরে বসে থাকব না। আমি নিজেকে প্রমাণ করব। আমি আবার টিউশন ধরব, আবার লিখতে শুরু করব, নিজের পায়ে দাঁড়াব।
সে জেরিনকে ফোন করল।আপু, তুমি কি আমাকে আবার কোনো জব খুঁজে দিতে পারো? ছোট চাকরি হলেও হবে। আমি কাজ করতে চাই।জেরিন বলল —তুই আমার গর্ব, মিথিলা। আমি দেখছি একটা ব্যবস্থা করতে পারি।
পরদিন সকালে মিথিলা তার পুরনো খাতা, কলম বের করে বসল।সে আবার পড়তে শুরু করল—ইংরেজি, বাংলা, অঙ্ক… যেন নিজের সেই পুরনো মিথিলা কে আবার খুঁজে আনছে।আবির জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখল মিথিলার সেই দৃশ্য।তার চোখে পানি এলো।
সে চুপচাপ বলল —তুমি শুধু আমার বউ না, তুমি আমার অনুপ্রেরণা।মিথিলার চোখে সকালটা ছিল সাহসের নতুন সকাল।পুরনো ব্যাগ, ভাঁজ করা সার্টিফিকেটের ফাইল, আর মন ভরা আশার আলো নিয়ে সে রওনা হলো চাকরির ইন্টারভিউ দিতে।জেরিন একটা ছোট প্রাইভেট স্কুলের ঠিকানা দিয়েছিল — একটা টিচার পদের জন্য।
বাসে বসে সে চারপাশের মানুষদের তাকানো লক্ষ্য করল। অনেকেই তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
কেউ বোঝে না, তার এই চেহারার পেছনে কতটা যন্ত্রণা আর কতটা যুদ্ধ লুকানো।
স্কুলে পৌঁছে সে সোজা গেটের সামনে গেল। হেড টিচারের কক্ষে বসে তার সিভি জমা দিল।কিন্তু প্রশ্ন শুরু হতেই নাইকা চমকে উঠল।আপনি কি সেই মেয়ে না? যে একটা ঘটনাকে ঘিরে পত্রিকায় এসেছিলেন?আপনার স্বামী কি এখনও আপনাকে রাখে?একজন ধর্ষণের ভিকটিমের জায়গা কি স্কুলে আছে?
মিথিলা চোখ নামিয়ে বলল —আমি শিক্ষক হতে এসেছি, দয়া নয়। আমার যা ঘটেছে, সেটা আমার নিয়তি ছিল। কিন্তু আমি নিজেকে বদলেছি। সমাজ বদলায়নি।
আপনি যদি শিক্ষক খুঁজে থাকেন, তাহলে আমার শিক্ষার দিকে তাকান—আমার ক্ষত নয়।
কিন্তু হেড টিচার কাগজ রেখে বললেন,আমাদের স্কুলে এমন ‘সমস্যাসৃষ্টিকারী’ মেয়েদের রাখা যায় না। দুঃখিত।
মিথিলা বাসায় ফিরল চুপচাপ।আবির কিছু না জিজ্ঞেস করেই তার পাশে এসে বসল।পেলেন না, তাই না?
মিথিলা শুধু মাথা নেড়ে বলল —তারা আমার চোখে শিক্ষিকা খুঁজছিল না, তারা আমার জীবনের দাগ খুঁজছিল।
আবির তার হাত ধরে বলল —তারা না চিনুক, আমি চিনেছি। তুমি শুধু চেষ্টা করে যাও। আমি জানি, তুমি একদিন এমন জায়গায় দাঁড়াবে, যেখানে এই সমাজের মুখ ঝুলে যাবে।
সেই রাতে জেরিন আবার ফোন করল।তুই স্কুলে নিলি না তো কী হয়েছে? আমি একটুর মধ্যে একটা নতুন জায়গা পেয়ে গেছি—একটা অনলাইন কনটেন্ট লেখার কাজ। ঘরে বসেই করা যাবে। আগ্রহী?
মিথিলা বলল —আমি যত কষ্টই পাই না কেন, এখন আর থামব না। আমাকে বাঁচতেই হবে নিজের নামে।
রাতে আবির আর মিথিলা বারান্দায় বসে।চাঁদের আলোয় মিথিলার চোখ জ্বলজ্বল করছে।সে বলল —আমি একটা কথা মনে রাখি আবির—আমার শরীরটা একবার ভেঙে পড়েছিল, কিন্তু আমার আত্মা এখনো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। ওটাই আমার শক্তি।
আবির হাত ধরে বলল —তুমি শুধু নিজের জন্য না, হাজারটা মিথিলার প্রতিনিধি হয়ে দাঁড়িয়ে আছো। তোমার যুদ্ধই হবে ভবিষ্যতের আশার নাম।