রাত ১২:০১ মিনিটে অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে কল আসে৷ ঘুম ঘুম কষ্ঠে ফোনটা রিসিভ করে,,,
আকাশ: আসসালামু আলাইকুম।
নীলাশা: ওয়া আলাইকুম আসসালাম। কেমন আছো?
আকাশ: আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আপনাকে তো চিনলাম না। নাম কি আপনার?
নীলাশা: আমার নাম জেনে তোমার কাজ নেই৷ তোমাকে যে কারণে ফোন করা।
আকাশ: জি বলুন, কেনো কল দিয়েছেন।
নীলাশা: Happy Birthday my sweet future Husband.. Happy Birthday toooo you,,,, I love you so much ,, ummmhhaaa ! ummmmhhhhaaa, Ummmhhhaaaa!
মেয়েটি এভাবে উইস করবে, যা আকাশ ভাবতে ও পারে নি৷ কেনো না আকাশের যে জন্মদিন তা আকাশ নিজেই ভুলে গিয়েছে। ১ মিনিট তো আকাশ নিজেই অবাক হয়ে বসে থাকে। কেনো না কোন মেয়ে এরকম ভাবে যে হুট করে কল দিয়ে উইস করবে তা ভাবে নি৷ কেনো না আকাশের সাথে তেমন কোন মেয়ের পরিচয় তো দূরের কথা, মেয়েদের সাথে কথাই বলে না৷ কিন্তু এভাবে কেউ উইস করবে, তা আকাশ বুঝতে পারে নি।
নীলাশা: কি ব্যাপার অবাক হচ্ছো তাই না।
আকাশ: অবাক তো হবোই। এরকম ভাবে কেউ কাউকে উইস করে তা আগে জানা ছিলো না। তা আমার নাম্বার কোথায় ফেলেন।
নীলাশা: তোমার মোবাইল নাম্বার, Gmail ID, তোমার বাড়ির ঠিকানা, পরিবারে কেহ কেহ আছে, সব কিছু আমি জানি।
আকাশ: প্লিজ আর যাই জানুন না কেনো, আমার ক্ষতি করবেন না।
নীলাশা: আমি তোমার ক্ষতি কেনো করবো, আমি তো তোমাকে ভালোবাসি। যাকে ভালোবাসি, তার ক্ষতি কেনো করবে।
আকাশ: আমি তো আপনাকে ভালোবাসি না। আমি অন্য কাউকে ভালো বাসি।
নীলাশা: তুমি যে কাউকে ভালোবাসা তো দূরের কথা, মেয়েদের সাথে কথাই বলো না, সে সব কিছু আমি জানি৷ সেজন্য কোন রকম মিথ্যে কথা বলে, কোন কাজে দিবে না।
আকাশ: আপনি এত কিছু কি করে জানেন।
নীলাশা: আমি আরো অনেক কিছুই জানি৷ তুমি messenger, Whatsup, imo, ইউস করো। এর বাহিরে আর কোন কিছু ইউস করো না। কেনো না তুমি গল্প লিখতে লিখতে ব্যস্ত থাকো বলে, অন্য সব ছেলেদের মতো ভিডিও বানাতে পারো না। এবং কি তোমাকে কে কে মেসেজ করে আর কি কি মেসেজ করে সব কিছুই আমি জানি।
আকাশ: আপনি কি আমার আইডি হ্যাক করেছেন?
নীলাশা: এত কিছু জানতে হ্যাক করতে হয় না। আরো অনেক কিছুর মাধ্যমে জানতে পারা যায়। আচ্ছা তুমি তো আবার তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাও, তোমার জন্য একটা গ্রীপ্ট পাঠাবো৷ ওটা দেখে নিও। এখন তাহলে রাখি,,,,,
এই বলে নীলাশা কল কেঁটে দেয়৷ নীলাশা কেহ, তা আপনারা পরে জানতে পারবেন। কেনো না, নীলাশা পরিচয় জানতে হলে, আপনাদের পুরো গল্পটা পড়তে হবে৷ অল্প একটু পড়ে তা আপনারা জানতে পারবেন না। সকাল বেলায়,, প্রতিদিনের মতো আজকেও অনেক গুলো মেয়ের ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট আর মেসেজ আসতে থাকে। একেকটা মেয়ে একেক রকম রোমান্টিক সব মেসেজ করতে থাকে পটানোর জন্য। তার সাথে সবাই ওকে জন্মদিনের উইস করতে থাকে। এই গুলো করার কারণ হচ্ছে, আমাদের গল্পের হিরো একজন লেখক। আকাশ ওর লেখা অনেক গুলো বই ও বের করেছে৷ সেজন্য প্রতিদিন এরকম মেসেজ আসতেই থাকে। ওই সব মেসেজের কোন গুরুত্ব দেয় না, কেনো দেয় না তা আপনারা একটু পরেই জানতে পারবেন।,,, সকালে রেডি হয়ে চলে আসে ভার্সিটিতে। ওখানে আসা মাএই মেয়েরা কথা বলার জন্য পাশে চলে আসে। অনেকে তো উইস করতে থাকে। তখন আকাশের কিছু বন্ধুরা ও চলে আসে ওখানে৷
অন্তর: বুঝলাম না একটা কথা। ভার্সিটিতে এত ছেলে থাকতে, তোমরা সবাই আমাদের বন্ধুর পিছনে কেনো পড়ে আছো?
রিমু: এত ছেলে কোই দেখলে?
অন্তর: আমাদের কি ছেলে বলে মনে হয় না।
রিমু: অল্প একটু মনে হয়৷ কিন্তু তোমাদের বন্ধু একটা কিউটের ডিব্বা। যেমন ওহ কিউট, তেমনই ওর গল্প গুলো। মেসেজের কথা তো বাদই দিলাম।
অন্তর: তুমি ওকে মেসেজ ও করেছো( অবাক হয়ে)
রিমু: করেছি তো কি হয়েছে। ওর সাথে কথা বলতে কেহ না চায়।
শাকিল: বন্ধু তুই বরং মুখে মাস্ক পড়ে থাক। যেনো তোকে কেউ না দেখে। এরকম যদি চলতে থাকে, সব মেয়ে তোর দিকেই তাকিয়ে থাকবে, আমাদের তো কেউ কোন পাত্তাই দিবে না।
এদের মধ্যে তো কথা হতেই থাকে। কিন্তু গল্পের নায়ক কোথায়, সে কেনো চুপ করে আছে তাই ভাবছেন তো৷ আসলে আকাশ কেনো চুপ করে আছে তা পরে জানতে পারবেন। এখন সামনে কি কি হচ্ছে, আপনারা শুধু ওই গুলোই দেখতে থাকুন,,,
ওই দিনের মতো আড্ডা শেষ করে চলে আসতে চাইবে তখন,,,
বাবু: তোর জন্মদিন, কোথায় আমরা তোকে সারফ্রাইজ দিবো, কিন্তু তুই এখই চলে যেতে চাইছিস।
আকাশ: তোরা তো কেউ উইস ও করলি না আমাকে।
বাবু: তোকে Fb তে যে উইস করতে হবে এমনটা তো না। আমরা তোর ছোট বেলার বন্ধু, সেজন্য তোকে সরাসরি সারফ্রাইজ দিবো। এখন চল আমাদের সাথে৷
আকাশ: এখন আবার কোথায় যাবি।
বাবু: তোর জন্য সারফ্রাইজ আছে বললাম তো।
এরপর ওরা আকাশকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে আসে৷ তারপর ওখানে আকাশকে উইস করে। আর একটা ছোট খাটো পার্টি করে ওরা৷ ওই পার্টিতে কোন মেয়ে ছিলো না। কিন্তু একটা মেয়ে, দূরে দাড়িয়ে থেকে, আকাশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাঁসতে থাকে। সে মেয়েটি কেহ ছিলো, তা আপনারা জানতে পারবেন, তবে কখন জানাবো তা এখন ও জানি না। তবে এতটুকু বলবো, যখন প্রয়োজন হবে, তখন বলবো৷ ওদের সাথে কিছুক্ষণ থেকে আকাশ বাসায় চলে আসে। রুমের মধ্যে মোবাইলটা রেখে গোসলে যায়, এসে দেখে ঈশা ফোন হাতে নিয়ে কি যেনো পড়ছে।,,,
আকাশ: তুই কখন এলি?
ঈশা: এই তো ভাইয়া কিছুক্ষণ আগে,,, তা ভাইয়া এতো গুলো মেয়ের রিকুয়েষ্ট আর মেসেজ, এখানে আমার ভাবি কোনটা?
আকাশ: এখানে কেউ তো ভাবি না। তোকে না বলেছি, এই মেয়ে গুলোর মেসেজ পড়বি না।
ঈশা: ইস ভাইয়া আমি যদি ছেলে হতাম, এখান থেকে ১০-১২ টা মেয়েকে পটিয়ে নিতাম।। আর সে কাজে তুই আমাকে সাহায্য করতি, ইস কতই না রোমান্টিক একটা ব্যাপার হতো।
আকাশ: মাথার মধ্যে খালি প্রেম আর প্রেম।
ঈশা: তাহলে কি তোর মতো বলদ থাকবো নাকি! হাজার হাজার মেয়ে তোকে মেসেজ দিয়েছে, কিন্তু তুই কারো মেসেজের রিপ্লাই ও দিচ্ছিস না। সেজন্য ভাবতেছি আমি তোর হয়ে, রিপ্লাই দিয়ে দিবো। অন্তত মেয়ে হয়ে, মেয়েকে পটিয়ে নিবো।
আকাশ: আর একটা কথা বললে, তোর জন্য ছেলে দেখতে বলবো আব্বুকে৷ তখন দেখবো কিভাবে পটাস৷
ঈশা: দেখ ভাইয়া ভালো হবে না কিন্তু।
আকাশ: তাহলে এখন যা এখান থেকে।
ঈশা: আমি তো যাবোই, কিন্তু তোর জন্য একটা উপহার আছে৷
আকাশ: কি সেটা!
ঈশা: উপহারটা তো আমি আনি নাই৷ এটা কুরিয়ার লোক এসে দিয়ে গেলো৷ বললো তোকে দেওয়ার জন্য। তাছাড়া আজকে তোর জন্মদিন, তোকে তো রাতেই আমি বাবা মা এসে উইস করেছি, কিন্তু তুই যেভাবে ঘুমাচ্ছিলি, সেজন্য আর ডেকে উঠাই নি। তাছাড়া তুই তো আমারই ভাই, তোকে উপহার দেওয়া আর না দেওয়া একই কথা।
আকাশ: আমি তোর বড় ভাই, তুই আমার জন্য কোন উপহার আনবি না তাই বলে।
ঈশা: আমার জন্মদিনে তুই কোন উপহার কি দিয়েছিস?
আকাশ: উপহার দেই নি, কিন্তু তোর জন্মদিন পালন করতে যত টাকা খরচ হয়েছে, সব টাকা তো আমিই দিয়েছি।
ঈশা: আমি কি বলেছি, আমাকে টাকা দিতে। তুই যেমন কিছু দিলি না, তখন আমি ও দিলাম না।
আকাশ: সেটাও ঠিক,, তা কি আছে এতে,, তা তো বল আমাকে।
ঈশা: আমি কি করে জানবো৷ তোর উপরহার তুই দেখ। এটা খুঁলে চেক করে নিচে নেমে আয়। মা তোর পছন্দের সব খাবার রান্না করেছে। সবাই এক সাথে খাবো।
আকাশ: ঠিক আছে এটা এখন আমার হাতে দে। আমি এটা খুলে দেখি, তারপর আসতেছি৷
ঈশা আকাশের হাতে উপহার দিতে যাবে, তখনই একটা বোতামে চাপ লেগে, একটা ভয়েস চালু হয়। ভয়েসটা শুনে ঈশা তো অবাক হয়, সাথে আকাশ নিজেও। এমন ভয়েস আকাশ এর আগেও শুনেছো, তখনই মনে পড়লো,, কারণ ওই ভয়েসটা ছিলো,,,,,,,,,