হ্যাকার_গ্রালফ্রেন্ড পর্ব: ০২

ওই ভয়েসটা ছিলো নীলাশার৷ নীলাশা রাতে কল দিয়ে যা যা বলেছিলো, এখন সেইম সে ভয়েসটা গ্রীপ্ট এর ভিতর থেকে আসতেছে৷ পুরো ভয়েস শুনার পরে, ঈশা কি আর লজ্জা পাবে, ঈশার চেয়ে বেশি লজ্জা আকাশ নিজেই ফেয়েছে।
ঈশা: ওয়াও ভাইয়া, তোকে এরকম ভাবে কেউ উইস ও করতে পারে জানা তো ছিলো না। ভাবির পরিচয় কি তুই নিজে দিবি? নাকি আমি মোবাইল থেকে জেনে নিবো।
আকাশ: বিশ্বাস কর বোন, আমি ওই মেয়েকে চিনি না। রাত ১২:০১ কল দিয়ে আমাকে এই ভাবে উইস করেছে। বলেছে আমার জন্য একটা পার্সেল দিবে। হতে পারে এটাই সে পার্সেল।
ঈশা: চল তাহলে খুলে দেখি আর কি কি আছে।
ওরা খুলে দেখে, ভিতরে একটা পাঞ্জাবি আর একটা কাপল পুতুল ছিলো কাঁচের। সাথে কিছু গোলাপ।, বাক্সের ভিতরে আরো একটা বাক্স ছিলো, ওটার মধ্যে ঈশার নাম ছিলো লেখাা। তার সাথে একটা চিঠি ও ছিলো৷ চিঠি পড়ে বুঝতে পারে, এটা ঈশার জন্য ছিলো।
ঈশা: বুঝলাম না ভাইয়া, আমাকে কেনো দিলো?
আকাশ: চিঠিতে তো লিখলো, ওই মেয়ের একমাএ ননদ তুই। সেজন্য তোর জন্য ও পাঠিয়েছে।
ঈশা: তাহলে বাবা-মা জন্য পাঠিয়ে দিতো। একসাথে পুরো ফ্যামেলি প্যাকেজ হয়ে যেতো।
আকাশ: তুই চুপ করবি! তোর এটা নিয়ে রুমে যা।
ঈশা: ভাইয়া ভুলে যাস না।
আকাশ : কি ভুলে যাবো না, সেটা তো বল৷
ঈশা: তোকে কিন্তু এই পাঞ্জাবি পড়ে দেখা করতে বলেছে, সাথে ঠিকানাও দিলো। তুই তাহলে এখনই বেরিয়ে পড়।
আকাশ: তোর কি মাথা খারাপ, আমি একটা অপরিচিত মেয়ের সাথে এভাবে ঘুরতে যাবো।
ঈশা: তুই না গেলে, ওই মেয়ে তো আমাদের বাসায় চলে আসবে৷
আকাশ: সে আসলে আসুক, আমি যাবো না।
এই দিকে ইরা ওর পার্সেল নিয়ে রুমে যায়। এই দিকে নীলাশা কল দেয়।
আকাশ: কেহ বলছেন?
নীলাশা: তুমি তোমার হবু বউয়ের নাম্বার সেইভ করে রাখলে না কেনো( রেগে)
আকাশ: কার বউ কিসের বউ, আমি আপনাকে চিনি না, জানি না, বললেই নাম্বার সেইভ করে রাখবো নাকি।
নীলাশা: এরকম করবে সব সময়। আচ্ছা
একটা পার্সেল পাঠিয়েছি, পেয়েছো?
আকাশ: জি পেয়েছি৷
নীলাশা: এবার লক্ষী ছেলের মতো ওটা পড়ে, আমি যে ঠিকানা দিলাম, সে ঠিকানায় চলে আসো।
আকাশ: আমি তো আপনাকে চিনি না, তাহলে আপনার কথায় আসবো কেনো৷ তাছাড়া আপনি ছেলে হলে একটা কথা ছিলো, মেয়েদের সাথে তো প্রশ্নই উঠে না।
নীলাশা: আচ্ছা তোমার শারিরীক কোন সমস্যা নেই তো ?
আকাশ: শারিরীক সমস্যা বলতে?
নীলাশা: এই বিয়ের পরে অনেক পুরুষ,,,,
আকাশ: ছি ছি এই সব বলছেন।
নীলাশা: তাহলে মেয়েদের থেকে এত দূরে থাকো কেনো। দেখো ১ ঘন্টার ভিতরে যদি তুমি ওই ঠিকানায় না আসো, আমি কিন্তু তোমার বাসায় চলে আসবো।
আকাশ: বাসায় আপনাকে ডুকতে কে দিবে শুনি। দারোয়ান তো গেইটের মধ্যে আটকে রাখবে। তাছাড়া আমি দারোয়ানকে বলে দিবো, কোন মেয়েকে যেনো বাসায় ডুকতে না দেয়।
নীলাশা: তা মানে তুমি আসবে না তাই তো!!
আকাশ: জি আসবো না।
নীলাশা: ঠিক আছে আসতেছি আমি।
এই দিকে আকাশ বের হয়ে দারোয়ানকে বলে দেয় সবটা। তারপর রুমে চলে আসে। এই দিকে ঈশা বার বার আকাশকে ওই পাঞ্জাবি পড়ার জন্য বলতেছে।
আকাশ: একটা মেয়ে দিয়েছে বলে আমি পড়বো নাকি?
ঈশা: তুই পড়বি কি না সেটা বল। আমার তো দেখতে হবে, হবু ভাবির পছন্দ কেমন।
আকাশ: তুই ও দেখি,,,
ঈশা: তুই যদি না পড়িস, ভালো হবে না কিন্তু।
আকাশ: তুই ও দেখি ওই মেয়েটার মতো শুরু করলি।
ঈশা: তুই পড়ে নিচে আয়।
এই দিকে আকাশ পাঞ্জাবি পড়ে নিচে নামে তাও ৩০ মিনিট পরে। এই দিকে আকাশের বাবা-মা আর বোন নিচে বসে আছে কেক নিয়ে। আকাশ নিচে আসলে সবাই ওকে শুভেচ্ছা জানাতে থাকে। এই দিকে,,, আকাশ কেক কাঁটতে যাবে তখনই, ঈশা বাঁধা দেয়।
মা: কিরে ঈশা, কি হলো।
বাবা: ঈশা, আকাশকে এভাবে আটকালে কেনো?
ঈশা: আব্বু আর ২ মিনিট অপেক্ষা করো, আমার বান্ধবী আসতেছে। ওহ এলে এক সাথে কেক কাঁটবো।
আকাশ: আমাদের পরিবারের ভিতরে, ওই মেয়েকে আবার কেনো ডাকতে এলি।
ঈশা: তুই চুপ কর। বেশি বুঝিস কেনো! ( ধকম দিয়ে)
আকাশ: ওই আমি তোর বড় না ছোট বল তো।
ঈশা: শুন, আমার যখন ইচ্ছে হবে, তোকে আপনি, তুই, তুমি করে বলবো। তুই শুধু চুপচাপ শুনে যাবি। এখন অপেক্ষা করতে বলেছি অপেক্ষা কর।
এই দিকে বাড়িতে একটা গাড়ি ডুকে৷ গাড়ি থেকে একটা মেয়ে বের হয়ে আসতে থাকে৷ দরজার সামনে এসে কলিং বেল দেয়।
ঈশা: এসে গেছে, আমি ওকে নিয়ে আসতেছি। তোমরা এখানেই অপেক্ষা করো।
ঈশা এসে দরজা খুঁলে দেয়। দরজা খুলে দিয়ে তাকিয়ে থাকে সামনের দিকে।
ঈশা: এতক্ষণ লাগলো তোর। আমি সে কখন থেকে বসে আছি তোর জন্য।
ইরা: Sorryy,, কি করবো রাস্তায় এত জ্যাম ছিলো, সেজন্য আসতে লেট হয়ে গেলো।
ঈশা: আসতে লেট হয়েছে নাকি সাঁজতে লেট হয়েছে। এত সাঁজ আজকে কাকে দেখানোর জন্য শুনি,,
ঈশার এমন কথায় ইরা কিছুটা লজ্জা পায়।
ঈশা: এত লজ্জা পেতে হবে না৷ সবাই অপেক্ষা করছে। আর হ্যাঁ, একদম লজ্জা পাবি না। তাছাড়া এমনিতে ও তোর যে লজ্জা নেই সেটা আমি জানি৷ তাও বলে দিলাম।
ইরা: তুই কিন্তু এভার বেশি বলছিস।
ঈশা: চল সবাই অপেক্ষা করছে।
ঈশা ইরাকে নিয়ে ড্রয়িং রুমের দিকে আসতে থাকে৷ এই দিকে আকাশ উল্টো দিকে ফিরে আছে বলে, আকাশ এখন ও ইরাকে দেখতে পায় নি৷ কিন্তু ইরা ঠিকই দেখতে পেরেছে। কিন্তু ইরা কখন যে আকাশের পাশে বসে গেলো তা ওহ নিজেও বুঝতে পারে নি। এই দিকে আকাশ পিছনের দিকে ঘুরে ঠিক হতে যাবে, তখনই ইরা আর আকাশের মুখ একদম সামনা সামনি হয়ে যায়৷ প্রায় ২ ইন্চির ফাঁক ছিলো আকাশ আর ইরার ঠোঁটের মাঝখানে। আকাশ তো ইরার দিকে তাকিয়ে আছে, চোঁখই ফেরাতে পারছে না। কেনো না ইরাকে এতটাই সুন্দর লাগছিলো, যে কেউ শুধু তাকিয়ে থাকবে। এই দিকে তাও নিজেকে সামলে নিয়েছে।
ঈশাা: ভাইয়া এভার কেক কাঁট।
মা: তা ঈশা, তোর বান্ধবী সাথে আমাদের পরিচয় তো করিয়ে দিবি।
ঈশা: বাবা-মা, ওহ হচ্ছে আমার এক মাএ বেস্টফ্রেন্ড। তোমরা যদিও ওর ব্যাপারে আগে জানতে না। কারণ আমি তোমাদের কোন কিছু জানাই নি৷ আর নাই ভাইয়ার কারণে আমার কোন বান্ধবীকে আমি বাসায় আনতে ফেরেছি। আর ইরাা ওনি আমার বাবা, শাহাজাহান চৌধুরী আর ওনি আমার আম্মু পারুল আক্তার। আর এই হলো আমার গুণধর ভাই, যার সাথে আমার সারাক্ষণ মারামারি জগড়া লেগেই থাকে।
ইরা: আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল, আন্টি। কেমন আছেন আপনারা।
বাবা: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷ তা তুমি কেমন আছো।
ইরা: জি আঙ্কেল, আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
মাা: তুমি দেখতে বারি মিষ্টি। আমার ছেলের জন্য, ঈশা ওর কোন বান্ধবীকে নিয়ে আসতে পারে না বাসায়।
ইরা: কেনো আন্টি, আনলে সমস্যা কি?
মা: আসলে আমার ছেলে মেয়েদের থেকে দূরে থাকে৷ সারাক্ষণ পড়াশোনা আর লেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকে৷ ঈশা বান্ধবী গুলো বাসায় একদিন এসে আকাশকে অনেক বিরক্ত করে, সেজন্য আকাশ ঈশাকে বলে দিয়েছে, যেনো ওর কোন বান্ধুবিকে না আনে।
ইরা: কি রকম বিরক্ত?
ঈশা: ওটা আমি তোকে পরে বলবো। ভাইয়া তুই কেক কাঁট আগে।
এই দিকে ওরা ৫ জন দাড়ায়। এই দিকে ওরা কিছু ছবি ও উঠিয়ে নেয়। একেক বার একেক জনের সাথে ছবি উঠাতে থাকে। ইরা ও সে সুযোগে আকাশের সাথে কিছু ছবি উঠিয়ে নেয়। এরপর আকাশ কেক কেঁটে এক এক করে সবাইকে খাইয়ে দিতে থাকে৷ কিন্তু ইরাকে খাওয়াচ্ছে না। ঈশা অনেক জোর করাতে ইরাকে খাইয়ে দেয়৷ এতে ইরা অনেক খুশি হয়৷ আর এক টুকুরো কেক আকাশকে খাইয়ে দিতে গেলে, আকাশ মুখটা সরিয়ে নিলে, কেক মুখে লাগে৷ তাও ইরা জোর করে খাইয়ে দেয়। এত আকাশ,,,,,

Be the first to write a review

Leave a Reply

We’re sorry you’ve had a bad experience. Before you post your review, feel free to contact us, so we can help resolve your issue.

Post Review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক গল্প