হ্যাকার_গ্রালফ্রেন্ড পর্ব: ০৩+০৪+০৫

এতে আকাশ লজ্জা পেয়ে নিজের রুমে চলে আসে। কেনো না এই প্রথম আকাশ অপরিচিত কোন মেয়ের হাতে কিছু খেলো। এই দিকে আকাশের এভাবে লজ্জা দেখে ইরা আর ঈশা তো হাঁসতে হাঁসতে শেষ৷ এই দিকে ঈশা, ইরাকে নিয়ে ওর রুমে আসে।
ইরা: তোর ভাই আছে আমাকে আগে কেনো বলিস নি?
ঈশা: ওরকম ভাই কোন কাজের না।
ইরা: মানে ঠিক বুঝি নাই৷
ঈশা: আমার ভাই মেয়েদের সাথে তো কথাই বলে না। সারাক্ষণ লেখালেখি আর পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে৷ মেয়েরা এত্তো এত্তো মেসেজ করে কিন্তু কোন রিপ্লাই পর্যন্ত দেয় না। ওহ যদি চাইতো, দিনে ১০-১২ টা মেয়ের সাথে লাইন মারতে পারতো।
ইরা: তোর ভাই তো অনেক লয়াল৷ এরকম ছেলে তো সব মেয়ে চায়।
ঈশা: আমার তো এই ভেবে ভয় হচ্ছে যে, বিয়ের পর বউয়ের সাথে যদি কথা বলতে না চায়৷ কাছে আসতে না চায়৷ তখন তো মেয়েটি ভাববে, ভাইয়ার কোন সমস্যা আছে।।
ইরা: আরেহ এরকম কিছু হবে না। তাছাড়া এত গুলো মেয়ে মেসেজ করে, তা তুই জানলি কি করে?
ঈশা: তুই ২ মিনিট অপেক্ষা কর। আমি ভাইয়ার মোবাইল নিয়ে আসতেছি।
২ মিনিট পরে ঈশা মোবাইল এনে দেখাতে থাকে। ইরা তো সবটা দেখে অবাক হয়। কেনো না ছেলেদের থেকেও মেয়েদের রিকুয়েষ্ট বেশি তার উপর মেসেজের কথা তো বাদই দিলাম। ইরা কিছু কিছু মেসেজ পড়ে অবাক হয়৷ কেনো না বেশিভাগ মেয়েই I love you, আমি তোমাকে ভালোবাসি, আমি তোমাকে পছন্দ করি, তোমার গল্প আর তোমার প্রেমে পড়ে গেলাম ইত্যাদি আরো অনেক রকমের মেসেজ দেখে, ওই সব মেসেজের ভিতরে তানু আর রিমুর মেসেজ ও দেখে ঈশা আর ইরা অবাক হয়।
ইরা: ওরা ও দেখি তোর ভাইয়ের পিছনে পড়ে আছে৷
ঈশা: সেটাই তো দেখছি৷
ইরা: এখন তাহলে উপায়।
ঈশা: দূর উপায় জেনে কি করবি। ভাইয়া তো রিপ্লাই দিবে না।
ইরা: আচ্ছা তোর ভাইয়ার রুমে যাই।
ঈশা: তুই ভাইয়ার রুমে এসে কি করবি?
ইরা: মোবাইলটা দিয়ে চলে যাবো আমি।
ঈশা: ঠিক আছে চল।
এই দিকে ইরা মোবাইল এনে আকাশের দিকে হাত বাড়ায়।
ইরা: এই নিন মোবাইল
আকাশ: আমার মোবাইল আপনার কাছে কেনো?
ইরা: ঈশার কাছে ছিলো, ঈশা বলেছে আপনাকে দিয়ে আসতে৷
আকাশ: আচ্ছা দিন মোবাইল।
ইরা: বাহ আপনার রুম তো মেয়েদের রুমের মতো বেশি ঘুছালো।
আকাশ: আমি আঘোছালো পছন্দ করি না। সেজন্য সাঁজিয়ে রাখি।
ইরা: বাহ, তাহলে তো আপনার বউয়ের কোন কষ্টই হবে না।
আকাশ: এতে আপনার কি?
ইরা: আমারই তো সব। পাঞ্জাবিটা আপনাকে ধারুন মানিয়েছে৷ তা একটা সেল্ফি নেওয়া যাবে কি?
আকাশ: আমি মেয়েদের সাথে ছবি উঠাই না। তাছাড়া ড্রয়িং রুমে তো অনেক গুলো ছবি তুলেছেন, এখন আবার ছবি দিয়ে কি করবেন।
ইরা: ওখানে তো সবাই ছিলো। সবার মাঝে ভালো ছবি কি আর উঠানো সম্ভব হয়। সেজন্য এখন তুলতে এসেছি।
আকাশ: ঠিক আছে তবে একটা ছবির বেশি কিন্তু হবে না।
ইরা: আচ্ছা তাহলে সুন্দর মতো থাকো।
এই দিকে আকাশের সাথে কিছু কাফল ছবি উঠিয়ে নেয় কৌশলে। যে কেউ ছবি গুলো দেখলে মনে করবে, ওরা দুজন স্বামী স্ত্রী। এই দিকে ইরা খুশি হয়ে আকাশে মুখে একটা চুমু দিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে পড়ে। আকাশ যে কিছু বলবে, তা বলার সময় টুকু ও পায় নি৷ গাড়ি নিয়ে একটা ফটোকপি দোকানে আসে, আর ওদের একটা ছবি বড় কাগজে ফ্রিন্ট করে। কেনো না এই ছবি ইরা ওর রুমে টানিয়ে রাখবে সেজন্য একটা ভালো দেখে কাগজে করে নেয়৷ যেনো ছবিটা নষ্ট না হয়ে যায়৷ তারপর বাসায় এনে ওর রুমে ওটা টানিয়ে রাখে। এই দিকে প্রায় ৫০০ জনের বেশি লোক আকাশকে জন্মদিনে উইস করে। সেজন্য ওদের সবার জন্য আর বাকিদের জন্য একটা পোস্ট লিখে শুয়ে পড়বে, তখনই নীলাশা কল দেয়।
নীলাশা: কি করে আমার বাবুটা?
আকাশ: আপনার বাবু কেহ?
নীলাশা: কেহ আবার তুমি নিজেই তো একটা বাবু।
আকাশ: উফ, কেনো কল দিয়েছেন, তা তো বলেন।
নীলাশা: তোমাকে না বলেছি, পাঞ্জাবি পড়ে বের হতে।
আকাশ: আমি আপনাকে চিনি না জানি না, তাহলে আপনার কথায় আসবো কেনো শুনি?
নীলাশা: অবশ্য কথাটা তুমি ভুল বলো নি।
আকাশ: সবই যখন ঠিক বলেছি, তখন বিরক্ত করবেন না আমাকে।
নীলাশা: তুমি কি জানো, আমি তোমার কি কি ক্ষতি করতে পারি।
আকাশ: আমি তো আপনার কোন ক্ষতি করি নি, তাহলে আমার ক্ষতি কেনো করবেন।
নীলাশা: তোমাকে আমার সাথে প্রেম করতে হবে।
আকাশ: তা আমি পারবো না
নীলাশা: তাহলে তোমাকে আমি এভাবে প্রতিদিন জালাবো। যদি তুমি আমার নাম্বার ব্লক করেছো, তাহলে তোমার আইডির সাথে সাথে, মোবাইলটা ও হ্যাক করে নিবো। তাছাড়া এত গুলো মেয়ে তোমাকে মেসেজ কেনো দিবে।
আকাশ: তা আমি কি জানি, আমি তো কারো কোন মেসেজের রিপ্লাই ও দেই না।
নীলাশা: সে সব তো আমি দেখি।।
আকাশ: কি করে?
নীলাশা: কি করে আবার তোমার আইডিতে তো আমি ডুকি৷ সেখান থেকে,,,
আকাশ: একটা ছেলের আইডিতে অনেক কিছু থাকতে পারে, সে সব দেখে আপনার কি লজ্জা করে না।
নীলাশা: আমার কেনো লজ্জা হবে। লজ্জা তো হবে তোমার৷ আচ্ছা রাত হয়েছে এভার ঘুমিয়ে পড়ো সোনা।
এই দিকে কল কেটে দিয়ে নীলাশা মুছকি হাঁসি দিতে থাকে৷ এই দিকে আকাশ ও ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন সকালে চলে আসে ভাসিটিতে,, ওখানে এসেই ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে শুরু করে। তখন ঈশা ওর বান্ধবীদের নিয়ে আসে, ওদের সাথে ইরা ও ছিলো৷ ইরা তো বার বার আকাশকে চোঁখ টিপ দিয়ে ইশারা করতেছে। কিন্তু তাতে আকাশ কোন কিছুই বলে না,,,,,
অন্তর: কিরে ঈশা তুই হঠাৎ এখানে কেনো?
ঈশা: এসেছি ভাইয়ার সাথে গল্প করার জন্য।
শাকিল: সাথে তোর বান্ধবী গুলো কেনো?
ঈশা: ওরা তো আমার বান্ধবী, আমি যেখানে যাবো, ওরা ও সেখানে যাবে।।
বাবু: সেটাও ঠিক কথা। তা ওদের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দে।
ঈশা: তোমাদের সাথে পরিচয় হতে হবে না। ভাইয়াকে এখন আমার সাথে যেতে হবে।
আকাশ: আমি একা কিন্তু যাবো না।
ঈশা: তোকে একাই আসতে হবে৷ ভাইয়া, আপনারা অপেক্ষা করুন, ৩০ মিনিট পরে ভাইয়াকে এখানে দিয়ে যাবো৷
অন্তর: ঠিক আছে, আমরা বরং ক্লাস শেষ করে আসি, আকাশ তুই তাহলে যা ওদের সাথে।
এই দিকে জোরাজোরি করাতে আকাশকে নিয়ে ওরা ক্যান্টিনে আসে।,,
ঈশা: ভাইয়া এভার অডার কর!
আকাশ: আপনারা কেহ কি খাবেন, ওখানে বলেন।
ঈশা: ওই তোরা কি কি খাবি বল৷
এই দিকে ওরা একে একে খাবারের নাম বলে, ঈশা ক্যান্টিনে এসে বলে যায়৷ এই দিকে ওরা কথা বলতে থাকে, তখন ওখানে রানা চলে আসে৷ রানা এই ভার্সিটিতে রাজনৈতি করে, সেজন্য বুঝতেই পাচ্ছেস,,, নতুন করে যে কোন কিছু বলবো, আশা করি তার তোর প্রয়োজন হবে না। তাও আর কিছু না বলে, সামনে কি হচ্ছে, তা একটু দেখি। রানা, ওদের দেখতে পেয়ে কাছে যায়।
রানা: একি ঈশা তুমি এখানে?
ঈশা: জি ভাইয়া, আমার বান্ধবী আর ভাইয়াকে নিয়ে খাবার খেতে এসেছি।
রানা: তা আমার জন্য কিছু অডার করো।
ঈশা: জি ভাইয়া করতেছি।
এই দিকে আকাশ কোন কথাই বলছে না। শুধু চুপচাপ বসে আছে৷ এই দিকে খাবার আসে৷ রানা ও খেতে থাকে৷ অন্য দিকে রানার বখাটে ছেলেরা আসলে, রানা ওদের অন্য দিকে চলে যাওয়ার বলে। কেনো না রানা এসেছে এখানে অন্য একটা কাজে। যে কাজের জন্য রানা অনেক দিন ধরে ঈশার সাথে কথা বলার জন্য ঘুরতেছে। এই দিকে ঈশা তো কিছুটা নার্ভাস হয়ে আছে৷ কি জন্য নার্ভাস হচ্ছে, তা আপনারা রানার মুখ থেকে যখন কথাটা শুনবেন, তখনই বুঝতে পারবেন।
রানা: ঈশা তোমাকে না বলেছি, ইরার সাথে আমার সেটিং করিয়ে দিতে৷
এই দিকে কথাটা শুনে ইরার ঠেকুর উঠে যায়৷ আকাশ পানি এগিয়ে দিলে ইরা সে পানি খেয়ে নেয়।
ইরা: মানে কি এই সবের?
রানা: আমি তোমাকে ভালোবাসি ইরা।
ইরা: আপনার কি মাথা ঠিক আছে, ভাবলেন কি করে, আমি আপনার মতো ছেলেকে বিয়ে করবো।
রানা: আমি দেখতে খারাপ নাকি আমার টাকা, ক্ষমতা কোন দিক দিয়ে কম আছে।
ইরা: আপনার মতো ছেলের সাথে আমি তো কখনো প্রেম করার তো দূরের কথা, কথাই বলি না। ( রেগে)
এই দিকে রানা ও কিছুটা রেগে যায়৷ এতে বাকিরা কি বলবে বুঝে উঠতে পাচ্ছে না।
রানা: ঈশা তোমাকে না বলেছি ইরাকে বুঝাতে।
ঈশা: দেখুন ভাইয়া, আপনি যা চাইছেন, তা কখনো সম্ভব না। সেজন্য আমি আপনাকে কোন সাহায্য করবো না।
রানা: তাহলে আমি আজ থেকে তোদের দুজনেরই ক্ষতি,,,,,
ক্ষতির পরে আর কিছু বলার আগেই আকাশ রানার মুখে ঘুষি মারে। এতে রানা কিছুটা দূরে এসে পড়ে আর মুখ দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। এতে ঈশা আর ইরা অবাক হয়৷ সবচেয়ে বেশি অবাক হয় ঈশা। কেনো না, আকাশ যে মারামারি করতে পারে, তা তো ঈশা জানতোই না।
আকাশ: তোর সাহস তো কম না। তুই আমার বোনকে নিয়ে বাজে কথা বলিস ( রেগে)
রানা: আমি কোথায় কি বললাম।
আকাশ: দেখ, আমার বোনকে নিয়ে বাজে কথা বলবে, এরকম কোন কথাই আমি সয্য করবো না। দেখো রানা তোমার মতো, ১০ টা নেতা আসলেও আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। সেটা তুমি ভালো করেই জানো৷ তাই আমার বোনের পিছনে লাগা বন্ধ করো৷ তার সাথে আমার বোনের কোন বান্ধবী দিকে যদি খারাপ নজর দাও, আমি কিন্তু তা সয্য করবো না।
রানা: ঠিক আছে আমি এই গুলো নিয়ে আর কথা বলবো না। আমাকে মাপ করে দিবেন ভাইয়া, প্লিজ,,,
আকাশ: ঠিক আছে যাও তাহলে।।
এই দিকে ইরা তো পুরোই ফিদা হয়ে যায়। কেনো না আকাশ যে কাউকে ধমক দিতে পারে, তা জানতোই না। এই দিকে ঈশাকে নিয়ে আসতে যাবে, তখন ঈশা বলে,,
ঈশা: আমার বান্ধবীদের ও নিয়ে চল।
আকাশ: ঠিক আছে, আমি গাড়ি বের করতেছি৷ তোরা এখানেই থাক,,,
এই দিকে গাড়ি বের করে আনে। তখন ঈশার বাকি বান্ধবী গুলো ও বসে পড়ে গাড়িতে৷ এই দিকে ২ জনকে একটা জায়গায় নামিয়ে দেয়। তারপর গাড়ি আবার চালাতে থাকে, এই দিকে,,
আকাশ: আপনাকে কোথায় নামাবো?
ইরা: কথাটা কি আমাকে বলছো?
আকাশ: আপনি ছাড়া আর তো কেউ নেই যে বলবো।
ইরা: আমি তো আপনাদের বাড়িতে যাবো।
আকাশ: আমাদের বাড়িতে কেনো?
ইরা: বাড়িতে মানুষ কেনো যায়, থাকার জন্যই তো।
আকাশ: তাহলে নিজের বাসায় না এসে, আমাদের সাথে কেনো আসতেছেন।
ইরা: বাহ রেহ, একদিন তো এখানেই থাকতে হবে, সেজন্য আগে থেকে তো অভ্যাস করতে হবে।
আকাশ: আমি আপনার কথার কোন মানে বুঝতেছি না।
ইরা: আপনাকে বুঝতে হবে না, আপনি বাসায় চলুন তো।
এরপর ওরা চলে আসে বাসায়। এই দিকে ইরা আর ঈশা চলে যায় ওদের রুমে। আকাশ ওর রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে, সন্ধের দিকে বারান্দায় বসে বসে গল্প লিখতে থাকে, যা ইরা পিছনে এসে পড়তে থাকে, ইরা যে এসেছে তা খেয়াল করে নি। কেনো না আকাশ যখন গল্প লিখে, তখন সব ধ্যান কিন্তু গল্পের মধ্যের মধ্যেই থাকে, সেজন্য আশেপাশে কি হচ্ছে না হচ্ছে, কোন কিছু নিয়ে খেয়াল নেই,, এই দিকে ইরা ও লুকিয়ে লুকিয়ে গল্পের অনেক কাহিনি পড়ে ফেলে। রাত ১১ টা বাজে, আকাশের গল্প লেখা অনেকটা শেষ হয়ে আসে৷ সেজন্য রুমে চলে আসে৷ কিন্তু ইরা কতক্ষণ আর লুকিয়ে লুকিয়ে দেখবে, সেজন্য চলে আসে ছাদের মধ্যে আর দোলনায় দোল দিতে থাকে,,,, এই দিকে আকাশকে আবার ও কল দেয়, কল রিসিভ করে,,,
আকাশ: জি! কেহ বলছেন?
নীলাশা: তুমি কি এখন ও আমার নাম্বার সেইভ করো নি ( রেগে(
আকাশ: বিশ্বাস করুন, আমি নাম্বার যে সেইভ করবো, কি নামে করবো! আপনি তো আপনার নাম কখনো আমাকে বলেন নি ( ভয়ে)
নীলাশা: উফস, স্বরি, স্বরি, স্বরি। আমি তো তোমাকে নাম বলতেই ভুলে গেছি। আমার নাম নীলাশা চৌধুরী।
আকাশ: অনেক সুন্দর তো আপনার নামটা।
নীলাশা: শুধু নামটাই সুন্দর না, আমি ও কিন্তু অনেক সুন্দর।
আকাশ: তা হতেই পারেন। যেমন সুন্দর নাম, তেমনই মিষ্ঠি কষ্ঠ।
নীলাশা: বাহ, আজকে আমার এত প্রশংসা করতেছো। ব্যাপারটা কি বলো তো?
আকাশ: ব্যাপার তেমন কিছুই নেই।
নীলাশা: তা এখন বলো দিন কাল কেমন যাচ্ছে তোমার।
আকাশ: যাচ্ছে পড়াশোনা আর লেখালেখি নিয়ে।।
নীলাশা: তা তোমাদের বাসায় একটা মেয়ে এসেছে, তা সে মেয়েটা কেহ শুনি?
আকাশ: ওই মেয়ে তো আমার ছোট বোনের বান্ধবী।
নীলাশা: সে না হয় বুৃঝেছি৷ কিন্তু তোমাদের বাসায় কেনো থাকবে, ওর কি নিজের বাসা নেই।
আকাশ: আছে কিন্তু এই বাসায় কেনো থাকবে তা তো আমি নিজেও জানি না।
নীলাশা: আমি তোমাকে একটা কথা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই,, ওই মেয়ের থেকে দূরে থাকবে৷ যদি আমি দেখেছি, তুমি ওই মেয়ের আশেপাশে গেছো বা কথা বলতেছো, তাহলে কিন্তু তোমার খবর আছে বলে দিলাম।
আকাশ: নাহ নাহ, আমি ওই মেয়ের সাথে কথাই বলবো না।
নীলাশা: এই তো গুড বয়।। তা এখন রাত হয়েছে অনেক, ঘুমাও তুমি।
আকাশ: আপনি ঘুমাবেন না।
নীলাশা: কিছু কাজ আছে, সে কাজ শেষ করতে ৩০-৪৫ মিনিট লাগবে।
আকাশ: আচ্ছা ঘুমাই তাহলে আমি৷।
নীলাশা: হুম সেটাই করো৷
এই দিকে আকাশ ঘুমাই যায়। নীলাশা ওর কাজ করতে থাকে৷ ইরা ছাদের থেকে নেমে চলে আসে রুমে। এসে ঈশার সাথে ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন সকালে, ইরা এসে আকাশের পাশে বসে থাকে৷ এই দিকে আকাশ তো ঘুমাচ্ছে, কি করবে, না করবে, কোন কিছু বুঝে উঠতে পারছে না৷ কেনো না আকাশকে তো জাগিয়ে দিতে হবে। কেনো না ভার্সিটিতে যেতে হবে সেজন্য ।
তাই আকাশের বুকে হাতটা রাখে, এতে আকাশ ঘুমের ঘোরে ইরার হাতটাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে। এই দিকে ইরা চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু কোন ভাবে ছাড়াতে পারছে না। সেজন্য একটু জোরে টান দিয়ে ছাড়িয়ে নেয় এতে হাত লাল হয় কিছুটা৷ সাথে আকাশের ঘুম ও ভেঙে যায়। ইরাকে রুমে দেখে আকাশ একটু ভয়ই পায়।
আকাশ: আমি আপনার রুমে, নাকি আপনি আমার রুমে।
ইরা: চারপাশে তাকিয়ে দেখো, এটা কার রুম।
আকাশ: এটা তো আমারই রুম। কিন্তু আপনি এই রুমে কেনো?
ইরা: আমি তো এসেছি তোমাকে জাগিয়ে দিতে, কিন্তু তুমি তো দেখতেছি আমার হাত এমন ভাবে চেপে ধরেছো, এই দেখো কতটা লাল করে ফেলেছো।
কথাটা বলে আকাশের দিকে হাত এগিয়ে দেয়। হাত দেখতে থাকে, সত্যি সত্যি হাত লাল দেখে,,
আকাশ: স্বরি আমি সত্যি খেয়াল করি নি। আমার জন্য আপনার হাত লাল হয়ে গেছে, একটু দাঁড়ান আমি বরফ এনে লাগিয়ে দিচ্ছি।
ইরা: এতো উতলা হতে হবে না৷
আকাশ: বললাম তো স্বরি, আমি বুঝতে পারি নি৷
ইরা: আরেহ আমি ওভাবে বলি নি। একটু পরে ঠিক হয়ে যাবে। নিচে আসুন, সবাই অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।
আকাশ: আপনি যান আমি গোসল শেষ করে আসতেছি।
ইরা: এত সকাল সকাল গোসল, ব্যাপারটা কি বলুন তো ( হেসে হেসে)
আকাশ: আপনি যা ভাবছেন, সে গুলো কিছুই হয় নি।
ইরা: কোই আমি তো কোন কিছু ভাবি নি।
আকাশ: না ভাবলে এভাবে হাঁসছেন কেনো?
ইরা: আমার কি হাঁসতেও বাঁধা আছে নাকি?
আকাশ: তা নেই, কিন্তু আমার কথায় হাঁসছেন, তাই বললাম। আচ্ছা আমি গেলাম গোসলে, আপনি বরং যান।
এই দিকে বিছানা থেকে আকাশ উঠে নিচে পা দিবে তখনই ইরা আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে শরিলের উপরের অংশে কিছুই নেই। কিন্তু
নিচে কিছু আছে কি না, তা দেখার জন্য ইরা দাঁড়িয়ে থাকে দরজার সামনে৷ এই দিকে আকাশ তো কোন কিছু খেয়াল না করে, কাঁথাটা সরাতে যাবে, তখনই ইরা চিৎকার করে,,,
ইরা: আমি কিছু দেখি নি সত্যি বলছি ( চিৎকার করে(
আকাশ: আপনি তো বড্ড অসভ্য মেয়ে। আমাকে এই রকম ভাবে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন দরজার সামনে।
ইরা: দাঁড়িয়ে ছিলাম তো, তো কি হয়েছে। দরকার পড়লে আমাকেও ওই ভাবে দেখে নিন। তাহলে শোধবোধ হয়ে যাবে।
আকাশ: ছি ছি এই সব কি বলছেন। আমি একটা ছেলে হয়ে, আপনাকে দেখতে যাবো কেনো?
ইরা: তাহলে দেখেছি তো কি হয়েছে ( ধমক দিয়ে)
আকাশ : তাই এভাবে লুকিয়ে দেখবেন।
ইরা: ঠিক আছে এখন সামনে আছি, এখন খুলে দেখা।
আকাশ: আপনার দেখি একটুও লজ্জা শরম নেই।
ইরা: আমার অনেক লজ্জা। কিন্তু তোমার সামনে আসলে, কেনো জানি লজ্জা ঘায়েব হয়ে যাায়।
আকাশ: মানে কি এই সবের?
ইরা: মানে বুঝতে হলো চলো, দুজনে একসাথে গোসল সেরে নেই।
আকাশ: ধ্যাত, গোসলই করবো না।
এই বলে ব্রাশ নিয়ে চলে আসে ওয়াশরুমে। এই দিকে ইরা কেনো এরকমটা করতেছে, তা আপনারা জানতে পারবেন আরো পরে। কেনো না গল্পের এখন ও অনেক কিছু বাকি আছে, যা আপনারা গল্পের সাথে থাকলে ঠিকই বুঝে নিতে পারবেন। এই দিকে ইরা তো নিচে এসে নাস্তা করতে থাকে৷ এই দিকে ঈশা বসে বসে কি যেনো ভাবছে সেজন্য ইরা প্রশ্ন করাতে,,,
ইরা: কি ভাবছিস ঈশা।
ঈশা: ভাবছি ভাইয়া আজকে এত তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে গেলো কি করে!,
ইরা: কেনো তোমার ভাই কি ঘুম থেকে উঠতে লেট করে?
ঈশা: লেট করে মানে ৯ টার আগে তো উঠেই না। কিন্তু আজকে তাড়াতাড়ি উঠলো সেজন্য। আচ্ছা এখন খেতে থাক, আমাদের আবার বের হতে হবে।
ইরা: ঠিক আছে।
এই দিকে ইরা আর ঈশা বেরিয়ে পড়ে খাওয়া শেষ করে৷ অন্য দিকে আকাশ নিচে নেমে দেখে ওর বাবা-মা ছাড়া কেউই নেই এখানে,
আকাশ: কি ব্যাপার আম্মু, ঈশা কোথায়?
মা: ওরা তো চলে গেছে ১০ মিনিট আগে।
আকাশ: আচ্ছা খেতে দাও আমাকে।
মা: সব কিছু সামনেই আছে।
আকাশ: কিন্তু আমি যেটা খাই, ওটাই তো নেই।
মা: ওটা তো ইরা খেয়ে চলে গেলো।
আকাশ: তুমি ওই বজ্জাত মেয়েকে দিয়ে দিয়েছো?
বাবা: আকাশ ইরাকে কেনো বজ্জাত বলছো। তুমি লেট করে উঠবে আর কেউ তোমার খাবার খেলে, তাকে দোষ দিবে এটা কেমন কথা।
আকাশ: আব্বু এত বছর ধরে তো এখানেই থাকতো, কেউ খেতো না। তাহলে এখন কেনো খেলো।
মা: আচ্ছা এখন এটা দিয়ে খেয়ে নে।
বাবা: আকাশ ভাসিটি শেষ করে, একবার আমাদের অফিসে এসো। তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
আকাশ: এখানেই বলে দাও। অফিসে যাওয়ার আর কি দরকার।
বাবা: বললাম না, অফিসে এসো তখন বলবো।
আকাশ: ঠিক আছে কিন্তু আমার আসতে আসতে লেট হবে, এই ধরো দুপুর ৩ টা হয়ে যাবে।
বাবা: সমস্যা নেই চলে আসিছ।
এই দিকে আকাশ ও খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়ে। এই দিকে ক্লাশ শেষ করে আকাশ আড্ডা দিতে থাকে, তখন ঈশা আর ইরা সাথে তানু আর রিমু ও এসেছে ওদের সাথে।
আকাশ: কি ব্যাপার তোমরা এখানে কেনো?
তানু: আমরা কি আসতে পারি না।
শাকিল: বন্ধু, থাক না ওরা আমাদের সাথে, তাহলে আমরা ও কিছুক্ষণ আড্ডা দিতে পারবো ওদের সাথে।
রিমু: সত্যি শাকিল ভাইয়া, আপনার মাথায় অনেক বুদ্ধি তো।
শাকিল: এই কথায় কথায় ভাই বলে, মনটাকে এভাবে ভেঙে দিও না।
রিমু: কি বলেন, এই মনে কি তাহলে অন্য কিছু ছিলো?
শাকিল: আরেহ সে সব কিছু না। তোমরা আমাকে, অন্তরকে, বাবুকে ভাইয়া বলো৷ কিন্তু আকাশকে বলো না কেনো?
বাবু: আমাকে কখন ভাই বললো।
অন্তর: আমাকে ও তো কখনো বলে নি।
শাকিল: বলবে কি করে, তোদের সাথে তো কথাই বলে না।
অন্তর: আচ্ছা এখন ওরা যেহেতু এসেছে, তখন আর জগড়া করে কাজ নেই। এখন চল একটা কাজ করি!
আকাশ: এই সময়ে তোর আবার কি কাজ মনে পড়লো?
অন্তর: ওদের সাথে তো আমাদের Facebook এড নেই। সেজন্য আমরা সবাই সবার সাথে এড হয়ে নিচ্ছি।
এই দিকে একে একে ওরা এড হতে থাকে। এই দিকে আকাশ তো ঈশার কোন বান্ধবী সাথে এড হয় নি। এই দিকে আকাশের বন্ধুরা ইরার সাথে এড হতে চাইছে, তখন ইরা বলে,,,,
ইরা: আমি একটা শর্তে, আপনাদের ৩ জনের সাথে এড হবো।
শাকিল: কি শর্ত?
ইরা: আপনাদের বন্ধুকে বলুন, আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠানোর জন্য৷ তারপর আমি আপনাদের এড করবো।
শাকিল: আরেহ এটা কোন ব্যাপার নাকি।
আকাশ ওকে রিকুয়েষ্ট পাঠা তো।
আকাশ: তোরা জানিস, আমি কোন মেয়েকে আমার ফ্রেন্ড লিস্টে রাখি না। তাও তোরা আমাকে জোর করছিস কেনো?
বাবু: কারণ তোর জন্য এখন আমরা নিজেরাই ঝুলে আছি৷ সেজন্য তুই যদি এখন রিকুয়েষ্ট না পাঠাস, তাহলে তোর একদিন আর আমাদের যতদিন লাগে।
আকাশ: এমনটা করিছ না!
অন্তর: তুই মোবাইল দিবি, নাকি তোকে এখন কেলাবো আমরা।
আকাশ: থাক মারামারি করতে হবে না। আমি পাঠাচ্ছি।
তানু: তাহলে আমি আর রিমু কি দোষ করলাম।
রিমু: আমি তো তাই বলতেছি।
আকাশ: দেখলি তো, একটা ঝামেলা না আসতেই, আরো কয়েকটা এসে পড়লো।
অন্তর: চুপ কর তো। তাড়াতাড়ি পাঠা।
এই দিকে অনেক লড়াইয়ের পরে, ইরাকে রিকুয়েষ্ট পাঠায়। ইরা তো ১ সেকেন্ড ও লেট করলো না। এই দিকে পরে তানু আর রিমু রিকুয়েষ্ট পাঠায়, এতে আকাশকে দিয়ে জোর করে রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করে নেয়। তারপর ওরা নিজেদের মধ্যে একটা গ্রুপ খুলে নেয়।
শাকিল: আজকে থেকে এই গ্রুপে আমরা ৮ জন থাকবো। যা কথা হবে, এখানেই হবে। যদি কারো আলাদা কোন কথা থাকে, তাহলে সে আলাদা মেসেজ করতে পারে।
ইরা: আমার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আপনাদের ৩ জনের মধ্যে, কেউ কিন্তু আমাকে জালাবেন না। পারসোনাল ভাবে কিছু বলার থাকলে, আগে গ্রুপে মেসেজ দিয়ে নিবেন। তারপর আমি রাজি হলে, পারসোনাল ভাবে মেসেজ করবেন।
শাকিল: ঠিক আছে, এই নিয়ম কিন্তু সবার জন্য। তাহলে এখন যে যার কাজে যাও।
আকাশ: কাজের কথা বলাতে ভুলে গেছি।
শাকিল: তুই আবার কি ভুলে গেলি।
আকাশ: আমাকে একবার অফিসে যেতে হবে।
শাকিল: আচ্ছা চল আমি তোকে নামিয়ে দিবো
আকাশ: কিন্তু ওরা দুজন যাবে কি করে?
ঈশা: আমি আর ইরা ট্যাক্সি করে চলে যাবো। তুই বরং অফিসে যা।
আকাশ: সাবধানে যাবি, বাসায় পৌঁছে কিন্তু আমাকে জানাবি।
ঈশা: ঠিক আছে।
এই দিকে আকাশ বেরিয়ে পড়ে অফিসের দিকে। অফিসে এসে ওর বাবার রুমে চলে আসে। ওখানে আরো অনেক মানুষ ছিলো।সেজন্য,,,,
বাবা: আকাশ তুমি আমার কেবিনে এসে অপেক্ষা করো, আমি ১০ মিনিটে আসতেছি।
আকাশ: ঠিক আছে আব্বু।
এই দিকে রুমে এসে আকাশ একজন লোককে দেখতে পায়৷ লোকটা প্রায় আকাশের বাবা বয়সই হবে। আকাশ ওনাকে দেখে সালাম দেয়। ওনি ও আকাশের সালামের জবাব দিয়ে কথা বলতে থাকে। এভাবে অনেকটা সময় কথা শেষ করে। লোকটা আকাশের ব্যাপারে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করে, আকাশ ওহ ওনাকে সবটা বলতে থাকে ,এভাবে ৩০ মিনিট যে পার হয়ে গেলো, যা আকাশ বুঝতে পারে নি৷ এই দিকে লোকটা চলে যায়৷ তবে যাওয়ার আগে আকাশের দিকে মুশকি হাসি দিয়ে চলে যায়। এখন হয় তো আপনারা ভাবছেন, কেহ ছিলো লোকটা। কিন্তু সত্য কথা বলতে, লোকটা কেহ ছিলো। তা আপনারা পরে জানতে পারবেন। কেনো না এখন বলে দিলে, গল্পের রহস্য কিছুটা কমে যাবে, সেজন্য এখন তা প্রকাশ করবো না। এই দিকে আকাশের বাবা রুমে আসে।
বাবা: অনেক লেট করে ফেলেছি আমি?
আকাশ: আচ্ছা আব্বু, তোমার কেবিনে একজন লোককে দেখলাম তা ওনি কেহ?
বাবা: ওনি হচ্ছে,,,,,,

Be the first to write a review

Leave a Reply

We’re sorry you’ve had a bad experience. Before you post your review, feel free to contact us, so we can help resolve your issue.

Post Review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক গল্প