বাবা: ওনি হচ্ছে,, আচ্ছা তুমি কি ওনাকে কিছু বলেছো?
আকাশ: বলেছি বলতে, ওনি অনেক প্রশ্ন করলো। আমি উওর দিলাম। আবার আমি প্রশ্ন করলাম, ওনি উওর দিলো। এভাবে কথা বলছিলাম আমরা অনেক্ক্ষণ ধরে।
বাবা: তা লোকটাকে কেমন লাগলো।
আকাশ: অনেক ভালো লাগলো।
বাবা: আচ্ছা তুমি এখন বাসায় যাও। আর যাওয়ার সময়ে এই ব্যাগটা ইরার কাছে দিয়ে দিও।
আকাশ: কি আছে এই ব্যাগে।
বাবা: তা তোমাকে জানতে হবে না। তুমি যার ব্যাগ তাকে দিয়ে দিলেই হবে।।।
আকাশ: ঠিক আছে আব্বু।। শুধু বলছো বলে নিয়ে যাচ্ছি, আচ্ছা তুমি কি আমাকে ব্যাগ আনার জন্য ডেকেছো অফিসে।
বাবা: আরেহ তোকে একটা জায়গায় পাঠাবো আমি, সেজন্য ডেকেছি। এই নিয়ে আমি তোকে বাসায় এসে বলবো।
আকাশ: আমি তাহলে এখন বাসায় গেলাম।
এই দিকে আকাশ তো বাসায় এসে ইরার হাতে ব্যাগ দিয়ে রুমে চলে আসে৷ এই দিকে আকাশের বাবা কাউকে কল দিয়ে কথা শেষ করে নেয়, তার সাথে বাসায় মিষ্টি নিয়ে আসে।
বাবা: এই নাও সবাই মিষ্টি খাও।
আকাশ: বাবা হঠাৎ করে এটা কিসের মিষ্টি!
বাবা: আগে সবাই তো মিষ্টি তো খাও
এই দিকে সবাইকে মিষ্টি খাওয়াতে থাকে। এই মিষ্টি কোন উদ্দেশ্য খাওয়ানো হচ্ছে তা শুধু আকাশের বাবা আর ইরা জানে৷ কিছুক্ষণ পরে,,, রাতের বেলায় আকাশ রুমে আসে তখন সে অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসে। এভার আর চিনতে অসুবিধা হলো না আকাশের। সেজন্য কল রিসিভ করেই,,
আকাশ: কেমন আছেন।
নীলাশা: বাহ, আজকে তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করতেছো! আমি সপ্ন দেখছি নাতো।
আকাশ: সপ্ন না, এটা বাস্তব।
নীলাশা: তা এত দিন হলো আমাকে কোন মেসেজ বা কল করো নি কেনো?
আকাশ: অনেক বার করেছিলাম, কিন্তু নাম্বার বন্ধ।
নীলাশা: সত্যি তুমি আমাকে কল দিয়েছো? (খুশি হয়ে)
আকাশ: অনেক বার কল দিয়েছি, কিন্তু নাম্বার বন্ধ থাকে বলে আর কিছু করা হয় নি। তাছাড়া আরেকটা কথা, তোমার সাথে দেখা করতে পারবো কি!!
আকাশের মুখে এমন কথা শুনে নীলাশার মুখে হাঁসির চাপ, কিন্তু এখানে একটা সমস্যা আছে, সে সমস্যাটা এখন বলবো না। বলবো অন্য একটা সময়ে। এখন চলুন এখানে কি হয়, তা দেখে আসি।
নীলাশা: অবশ্যই, তুমি দেখা করবে, অথচ আমি আসবো না, এটা কি করে হয়। তবে একটা কথা!
আকাশ: কি কথা বলো!
নীলাশা: আমি যে পাঞ্জাবি দিয়েছি, সে পাঞ্জাবি পড়ে আসতে হবে। আর আমি ওই দিন যে ঠিকানা দিয়েছি, সে ঠিকানায় আসতে হবে।
আকাশ: ঠিক আছে, তবে তোমাকে ও একটা শাড়ি পড়ে আসতে হবে।
নীলাশা: কিন্তু আমার তো শাড়ি নেই।
আকাশ: তুমি একটা ঠিকানা দাও, আমি ওই ঠিকানায় পাঠিয়ে দিবো। তার সাথে, এমন একটা নাম্বার দাও, যে নাম্বারে আমি কল দিয়ে তোমার সাথে যোগাযোগ বা কথা বলতে পারবো সব সময়।
নীলাশা: তাহলে একটা ঠিকানা নোট করে রাখো। আর হ্যাঁ, যে দিন দেখা হবে, ওই দিনই সব কিছু শুনবো।
আকাশ: ঠিক আছে তাই হবে।
নীলাশা: তা তোমার মেসেন্জারে একটা গ্রুপ দেখলাম, ওই গ্রুপে ৪ টা মেয়ে, ব্যাপারটা কি বলো তো।
আকাশ: বিশ্বাস করো, একটা আমার আপন বোন আর বাকি গুলো ওর বান্ধবী। আর আমি কারো সাথে তো দূরের কথা, গ্রুপে ও মেসেজ করি না।
নীলাশা: তা তো আমি দেখেছি।। তাও জিজ্ঞেস করলাম, তাছাড়া তুমি কারো সাথে মেসেজ করলে, সেটা তো আমি দেখতেই পারবো।।
আকাশ: হুম তা তো পারবে। আচ্ছা আমার একটা কাজ করে দিতে পারবে,,
নীলাশা: তোমার জন্য তো আমি সব করতে পারবো, তুমি শুধু বলো কি করতে হবে।
আকাশ: ওই গ্রুপে ইরা নামে একটা মেয়ে আছে। ওহ আমাকে অনেক জালায়।
নীলাশা: চিন্তা করো না, আমি ওর এমন অবস্থা করবো, যে ওহ তোমার দিকে আর তাকাবেও না।
কথাটা গুলো বলছে আর নিজের মনে হাসতে থাকে৷ এই হাঁসির মানে আপনারা আরো পরে বুঝতে পারবেন। এই দিকে,,,
নীলাশা: আচ্ছা শুনো?
আকাশ: হুম বলো।
নীলাশা: দেখা হওয়ার পরে, আমি এমন কিছু শুনতে চাই, যা শুনার জন্য আমি এতো গুলো মাস অপেক্ষা করতেছি।
আকাশ: ঠিক আছে বাকি কথা না হয় ওই দিনই বলবো। এখন তাহলে রাখি।
এই দিকে আকাশ কল কেঁটে দিয়ে পরের দিন নীলাশার দেওয়া ঠিকানায় একটা শাড়ি আর কিছু জিনিস পাঠায়। ২ দিন পরে,,,
ইরা: আকাশ, ওই আকাশ।
আকাশ: কি হয়েছে, নাম ধরে ডাকছেন কেনো?
ইরা: নীলাশা কেহ,,,
আকাশ: তা জেনে তোমার কি কাজ?
ইরা: ওই মেয়েটা কেহ! যে তোমার সাথে কথা না বলার জন্য, আমাকে বারণ করতেছে?
আকাশ: সে আমি কি করে বলবো।
ইরা: ঠিক আছে আমি ও দেখে নিবো।
ইরা তো রাগ করে চলে যায়৷ এই দিকে আকাশ একটু খুশিই হয়েছে। কেনো না নীলাশার কথা কাজে দিয়েছে। ৫ দিন পর ইরা বাসা থেকে বের হয় একটা ব্যাগ নিয়ে আর আকাশ ওহ পাঞ্জাবি ওটা পড়ে বের হয়, যাওয়ার সময়ে গোলাপ নিয়ে নেয়, সাথে একটা হিরের আংটি ও নেয় সাথে করে। এই দিকে নীলাশা ছদ্দবেশে আসে আকাশের সাথে দেখা করার জন্য। ছদ্দবেশ বলতে মুখটা ডেকে শুধু, চোঁখ দুটো বের করে রেখেছে। এসে আকাশের সামনে এসে দাঁড়ায়। আকাশের দেওয়া শাড়ি পড়াতে, চিনতে অসুবিধা হয় নি।
সেজন্য হাঁটু ভাজ করে, ফুল হাতে নিয়ে নীলাশাকে প্রপোজ করে।
আকাশ: I love you Nilasha, will you marry me??
কথাটা বলে ফুল এগিয়ে দেয়। নীলাশা তো খুশি হয়ে ফুলটা হাতে নেয়। এরপর আকাশ ইরার আঙুলে হিরের ওই আংটি পড়িয়ে দিয়ে, হাতে আলতো করে একটা চুমু দেয়। এতে নীলাশা কিছুটা শিহরিত হয়ে উঠে। নীলাশা ও আকাশের হাতে একটা ঘড়ি পড়িয়ে দেয়। সেইম ভাবে আকাশের হাতে ও চুমু দেয়।।
নীলাশা: I love you toooo Akashhh,,
এই বলে নীলাশা আকাশকে জড়িয়ে ধরে। এরপর আকাশ আর নীলাশা প্রায় ৫ ঘন্টা সময় কাঁটায়। কখন যে সময় কেঁটে গেছে, তা ওরা নিজেরাও বুঝতে পারে নি। রাত বাজে ৮ টা, আকাশ নীলাশার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে এখন ও।। কিন্তু আচার্য কথা হলো, আকাশ এখন ও নীলাশার মুখটা দেখে নি।।। ওই রাতে নীলাশাকে কোলে নিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটতে থাকে। এই দিকে ৯ টা বাজে,,,
নীলাশা: আমাকে তো এভার যেতে হবে বাসায়।
আকাশ: আরো কিছুক্ষণ থাকো।
নীলাশা: আজকে না, অন্য এক দিন।
আকাশ: সত্যি বলছো তো।
নীলাশা: হুম, তবে আমরা দেখা করবো ১ মাস পরে,,,
আকাশ: তাহলে ১ মাস তোমাকে ছাড়া থাকতে হবে।
নীলাশা: হুম হবে। আমি তোমাকে একটা নাম্বার দিচ্ছি, ওই নাম্বারে সব সময় কল দিলে আমাকে পাবে।
আকাশ: আচ্ছা দাও নাম্বার।
এরপর আকাশকে নাম্বার দেয়। নাম্বার নিয়ে আকাশ নীলাশাকে একটা জায়গায় নামিয়ে দিয়ে, নিজেই চলে আসতে থাকে বাসার দিকে। এই দিকে নীলাশা ও ওর বাসার দিকে যেতে থাকে। এই দিকে রাতে যখন আকাশ বাসায় ফিরে, তখন এতটা খুশি দেখাচ্ছিলো যা বলার বাহিরে।। ঈশা তখন জিজ্ঞেস করে,,,
ঈশা: ভাইয়া তুই এত রাত পর্যন্ত বাসার বাহিরে কেনো?
আকাশ: একটু কাজ ছিলো। তা তুই একা কেনো? তোর বান্ধবী ইরা কোথায়?
ঈশা: ওকে তো ৭ ঘন্টা ধরে দেখছি না। কোথায় গিয়েছে কোন কিছুই বলে যায় নি।
আকাশ: কিহ বলিস, এত রাত হলো, এখন ও বাসায় ফিরে নি।
ঈশা: কল দিয়েছিলাম, বলেছে আরো ৩০ মিনিট লাগবে।
আকাশ: আচ্ছা আমি রুমে গেলাম।
এই দিকে বাসায় ফিরে আকাশ নীলাশাকে কল দিয়ে সবটা বলে। এই দিকে নীলাশা ও আকাশকে কিছু একটা বলে, যা আপনারা পরে জানতে পারবেন।। এই দিকে ইরা ও রাতে বাসায় ফিরে, ঈশা জিজ্ঞেস করে,,,
ঈশা: কিরে কোথায় চিলি এতক্ষণ ধরে
ইরা: কোথায় আবার আমার আব্বুর কাছে। কিছু কাজ ছিলো, কাজ শেষ তাই চলে এসেছি।
ঈশা: তা তোকে এতো খুশি দেখাচ্ছে, ব্যাপারটা কি বল তো?
ইরা: বলা তো যাবে না।
ঈশা: তা কাজ যখন ছিলো, আজকে রাতটা থেকে আসতি?
ইরা: ওহ তুই বুঝবি না, এখন চল ঘুমাই।
এই দিকে পরের দিন থেকে নীলাশা আর আকাশ অনেক কথাই বলতে থাকে। ওরা দুজনে সারাক্ষণ ফোনে কথা বলতেই ব্যস্ত। এই দিকে ঈশা কয়েকদিন ধরে ফলো করতে থাকে, ইরা আর আকাশ দুজনেই ফোনে ব্যস্ত থাকে বেশিভাগ সময়ে। তা দেখার পরে,,
ঈশা: ব্যাপারটা কি বলতো?
ইরা: কোন ব্যাপার?
ঈশা: কয়েকদিন ধরে লক্ষ করতে আমি। তুই সারাক্ষণ ফোনে ব্যস্ত থাকিছ৷ আগে তো এরকম থাকতি না।
ইরা: আগে থাকতাম না এটা ঠিক৷ কেনো না এখন যা যা হচ্ছে তা তো আগে হয় নি সেজন্য।
ঈশা: কি বলছিস, আমি তো কিছুই বুঝে উঠতে পাচ্ছি না।
ইরা: সবটা পরে বলবো।,,,
এই দিকে দিন যেতে থাকে। ১ মাস পর হয়ে যায়। আকাশ আর নীলাশা এতটাই কথা বলতে থাকে কলে, যা বলার বাহিরে।
আকাশ: আচ্ছা নীলাশা, একটা কথা বলো তো?
নীলাশা: কি কথা বলো ?
আকাশ: তুমি বিয়ে পরে, এই হ্যাকিং চেড়ে দিবে তো?
নীলাশা: তুমি বললে চেড়ে দিবো। তাছাড়া তুমি কি ভয় পাচ্ছো নাকি?
আকাশ: আমি কেনো ভয় পাবো?
নীলাশা: এই যে, বিয়ের পরেও তোমার আইডির উপর যদি নজর রাখি, তা নিয়ে।
আকাশ: তেমন কোন কিছু না৷। তাছাড়া বিয়ের পরে তো, আমার মোবাইল তুমি হাতে নিতেই পারবে।
নীলাশা: ওহ ওহ, আমি তো এই কথা ভুলেই গিয়েছিলাম।
আকাশ: ইস, মনে করিয়ে দিয়ে মনে হচ্ছে ভুল করলাম।
নীলাশা: অবশ্যই ভুল করলে৷ এখন আর লুকিয়ে তোমার আইডি চেক করতে হবে না। সরাসরি দেখতে পারবো এখন থেকে।
এই দিকে দিন যেতে থাকে। ওদের সারাক্ষণ কথা বলতে দেখে, এভার ঈশা আসে আকাশের সামনে। এসে আকাাশকে ও অনেক কথা শুনায়।
আকাশ: তুই আবার আমার পিছনে কেননো লাগতে গেলি।
ঈশা: লাগবো না কি করবো শুনি। তুই এই দিকে ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত। অন্য দিকে ইরা, ওহ নিজেও কথা বলতে ব্যস্ত। আমাকে যে কেউ একটু সময় দিবে, সেটা ও তো সম্ভব হচ্ছে না।
আকাশ: আচ্ছা কাল তোকে নিয়ে ঘুরতে যাবো।
ঈশা: সত্যি বলছিস তো।
আকাশ: হুম সত্যি বলছি।
এই দিকে ঈশাা, এসে ইরাকে সবটা বলে। ইরা শুনে রাজি হয়ে যায়। এই দিকে কালকে যে নীলাশাকে সময় দিতে পারবে নাা, তা আকাশ কল দিয়ে বলে দেয়।।। পরের দিন ঈশাকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়। কিন্তু সাথে ইরা ও যাবে। ঈশার জন্য ইরাকে আর না করতে পারে নি। ওই দিন ওরা অনেক ঘুরাঘুরি করে। অনেকটা সময়ের পরে ঈশা একটু আলাদা ভাবে বসে পড়ে। এই দিকে সে ফাঁকে ইরা আকাশের পাশে আসে।
আকাশ: কি ব্যাপার, আমার পাশে কেনো?
ইরা: আসতে মানা আছে ,নাকি Gf মানা করেছে।
আকাশ: তেমনই কিছু ধরে রাখুন।
ইরা: বাহ, আপননার আবার Gf আছে, এটা ও কি মানা যায়।
আকাশ: না মানলে আমার কিছু করার নেই। সারাক্ষণ ওর সাথে কথা বলেই আমার দিন কেঁটে যায়।
ইরা: ওহ তাই নাকি। তা কল দিন তো,,
আকাশ: কাকে দিবো কল?
ইরা: কাকে আবার নীলাশাকে,,,
আকাশ: আপনি কি করে জানলেন, ওর নাম নীলাশা।
আকাশের কথা শুনে ইরা এভার কি বলবে বুঝতে পাচ্ছে না৷ তাও ব্যাপারটা সামাল দেওয়ার জন্য,,,
ইরা: আরেহ তুমি বলেছো। তাছাড়া তোমার মোবাইল যখন আমি হাতে নিয়েছি, তখন ওখানে বেশির ভাগ কলেই নীলাশা নাম লেখা ছিলো৷ আমি তো ওখান থেকেই দেখেছি।
আকাশ: কি বলেন, দাঁড়ান একটু দেখি।
এই দিকে দেখতে এসে, ভুলে সে নাম্বারে কল চলে যায়৷ এই দিকে ইরাকে কল দেয় কেউ, মোবাইল ব্রাইবেট করে রাখার জন্য ব্যাগের ভিতর কাঁপতে থাকে৷। এই দিকে রিং হয়েই যাচ্ছে কিন্তু কেউ কল রিসিভ করছে না।
আকাশ: কি ব্যাপার কল কেনো রিসিভ করলো না।
ইরা: হয় তো কোন কাজে ব্যস্ত থাকতে পারে।
আকাাশ: তাও ঠিক, ওহ তো আবার,,
ইরা: আবার কি শুনি?
আকাশ: কিছু না।
ইরা: তাহলে ওই মেয়ের জন্য তুমি আমার সাথে কথা বলছো না।
আকাশ: ঠিক তাই।
ইরা: তাহলে আমি তোমাকে বলে রাখি, ৭ দিনের ভিতরে আমি তোমাকে বিয়ে করে দেখিয়ে দিবো।
আকাশ: আপনার কি মাথা গেছে নাকি। জানেন আমি একজনকে ভালোবাসি। তাও আমাকেই বিয়ে করবেন। তাছাড়া আপনি কি করে ভাবলেন, আমার পরিবার আপনাকে মেনে নিবে।
ইরা: সে সব আপনাকে বুঝতে হবে না। আপনি শুধু দেখে যান, আগে আগে কি হয়।
এই দিকে ওরা বাসায় চলে আসে। রাত হয়ে যাওয়াতে ইরাা ওর রুমে চলে আসে৷। পরের দিন সকালে ইরা ওর ব্যাগ ঘুছিয়ে নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার আগে আকাশের বাবা-মা রুমে সামনে আসে।
ইরা: আঙ্কেল আন্টি ভিতরে আসবো কি?
মা: হ্যাঁ, আসো। কি ব্যাপার তুমি ব্যাগ ঘুছিয়ে, এই সকাল সকাল কোথায় যাচ্ছো?
ইরা: কোথায় আর যাবো আন্টি। আমার বাসায় যাচ্ছি। ( কেদে)
মা: আকাশ বা অন্যরা কেউ কিছু কি বলেছে?
ইরা: আকাশ একটা মেয়েকে ভালোবাসে। আর ওকেই বিয়ে করবে। যদি আকাশ ওই মেয়েকেই বিয়ে করে, তাহলে আমি এখানে থেকে কি করবো। ( কেদে(
মা: তুমি রুমে যাও, আমি আর তোমার আঙ্কেল, আকাশের সাথে নাস্তা করার সময়ে কথা বলে নিবো।
ইরা: আকাশ যদি তাতেও রাজি না হয়।
মা: জোর করে হলেও আমি ওকে রাজি করাবো। কত্ত বড় সাহস হয়েছে ওর। আমি ও দেখেই ছাড়বো।
এই দিকে ইরা রুমে এসে বসে থাকে। ঈশা ঘুম থেকে উঠলে, ওকে সব ঘঠনা খুলে বলে। সবটা শুনার পরে ঈশা তো অনেক খুশিই হয়। এই দিকে আকাশের বাবা, ওনার বন্ধু, মানে ইরার বাবা রফিক চৌধুরীকে সকালে কল দিয়ে, কাজি সহ আসতে বলে ওনাদের বাড়িতে। এই দিকে ওনি তো বুঝতেই পাচ্ছে না কি হলো হঠাৎ করে। সেজন্য,,,
রফিক: কি ব্যাপার বন্ধু, তুই হঠাৎ করে কাজি সহ আসতে বলেছিস, ব্যাপারটা একটু খুলে বলবি?
বাবা: যা কথা হবে সামনা সামনি হবে। তোকে যা বলেছি তাই কর আগে।
রফিক: তা না হয় আনলাম কিন্তু,,,
বাবা: কোন কিন্তু না, তুই আগে আয়। তারপর বাকি কথা হবে।
এই দিকে রফিক চৌধুরী কাজি সহ আসে আকাশের বাসায়৷ ওনারা ড্রয়িং রুমে বসে আছে। এই দিকে আকাশের মায়ের নির্দেশে, ইরা একটা শাড়ি পড়ে নেয়। কিন্তু বাসায় এত কিছু হয়ে যাচ্ছে, আকাশের কোন খবরই নেই। নিজে আকাশের বাবা আর ইরার বাবা বসে আছে। এই দিকে স্বাভাবিকের চাইতে ইরা একটু বেশিই খুশি, কিন্তু এতটা খুশি কেনো, তা আপনাারা জানতে পারবেন আরটু অপেক্ষা করার পরেই,,, এই দিকে ঈশা আকাশের রুমে আসে,,
ঈশা: ভাইয়া তুই উঠে গেছিস?
আকাশ: হ্যাঁ, তা নিচে এতো শব্দ কিসের। কেহ এসেছে রেহ?
ঈশা: তা তুই নিচে এলেই দেখতে পারবি।
একটা কাজ কর, একটা পাঞ্জাবি পড়ে নিচে আয়।
আকাশ: পাঞ্জাবি কেনো পড়বো?
ঈশা: তোকে পড়তে বলেছি পড়। এত প্রশ্ন করছিস কেনো?
আকাশ: তুই যা আমি ১০ মিনিটের মধ্যে আসতেছি।
এই দিকে ১০ মিনিট পরে নিচে এসে এত মানুষ দেখে অবাক হয়। তারচেয়ে বেশি অবাক হয় ইরার বাবাকে দেখে, যদিও আকাশ এখন ও জানে না, ওনি যে ইরার বাবা হয়।
আকাশ: ব্যাপার আব্বু, এই সব কি?
বাবা: আজকে তোর বিয়ে আর এখনই হবে।
বন্ধুরা এখন প্রশ্ন হলো, সত্যি কি আকাশ ইরাকে বিয়ে করবে, নাকি কোন ভাবে আকাশ বিয়ে হওয়া থেকে নিজেকে আটকাতে পারবে। এই সব প্রশ্নের উওর আপনারা পরের পর্বে জানতে পারবেন। এই দিকে আকাশের বাবার কথা তো শুনলেন, এখন শুনি আকাশ কি বলে।
আকাশ: আব্বু তুমি কি আমার সাথে মজা করছো?
বাবা: আমি কেনো তোর সাথে মজা করবো
আকাশ: আমার বিয়ে অথচ আমি কোন কিছু জানি না, এটা কোন কথা।
বাবা: এখন তো জানলি, তা বসে পড় ওখানে।
আকাশ: যার সাথে আমার বিয়ে দিচ্ছো, সে মেয়ে কোথায়?
ঈশা: মেয়ে তো তোর সামনেই আছে।
আকাশ: সামনে তো ইরা আছে আর ওনি কেহ? ওনাকে তো আমি একবার অফিসে দেখেছিলাম।
রফিক: আমি ইরার বাবা, রফিক চৌধুরী । আমি ওই দিন অফিসে তোমাকে দেখতে এসেছিলাম। আসলে আমার মেয়েকে যার সাথে বিয়ে দিবো, সে কেমন, তা তো আপনাকে দেখতে হবে। সেজন্য আমি ইরার ব্যাগ নিয়ে তোমাদের অফিসে এসেছিলাম। যদি তোমাকে আমার পছন্দ হয়, তাহলে আমি ইরার ব্যাগ তোমাদের অফিসে রেখে আসবো। তাছাড়া ইরা বলেছে তোমাদের বাসায় থেকে, তোমাদের সবার সম্পর্কে জানবে। যেনো ওহ বিয়ে করে আসলে, কোন সমস্যা মনে না হয়। তাছাড়া ঈশা ওর বেস্টফ্রেন্ড, সেজন্য আমি রাজি হয়েছি।
আকাশ: ঈশা তার মানে তুই ও সব জানতি?
ঈশা: তোর সাথে যে ইরার বিয়ে ঠিক করেছে, তা আমি জানতাম না। আমি তো ওকে বান্ধবী হিসেবে, ভাবলাম আমার সাথে কয়েকটা দিন থাকবে। কিন্তু এর ভিতরে যে এত কাহিনি হবে, তা তো জানতাম না।
আকাশ: থাক তোকে আর বলতে হবে না। কিন্তু আঙ্কেল আমি যে আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে পারবো না।
রফিক: কেনো আকাশ, আমার মেয়ে কি কোন অপরাধ করেছে?
আকাশ: ওহ কোন অপরাধ করে নি। আসলে আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি। আর আমি ওকেই বিয়ে করবো
বাবা: তা তুমি যাকো ভালোবাসো, তার নাম কি, বাবা-মা নাম কি? থাকে কোথায় আর দেখতে কেমন?
আকাশ: ওর বাবা-মা নাম জিজ্ঞেস করা হয় নি। থাকে গুলশান, ওর নাম নীলাশা চৌধুরী।
বাবা: তা মেয়েটার ছবি দেখা তো। আমরা ও দেখি, মেয়েটা যদি ইরার থেকেও সুন্দর আর গুণবতী হয়, তাকে ওই মেয়েকেই আমরা মেনে নিবো। আর যদি তা না হয়, তাহলে ইরাকেই তোকে বিয়ে করতে হবে।
আকাশ: কিন্তু বাবা ওর কোন ছবি নেই আমার কাছে, আমাদের ফোনে কথা হয়েছিলো। আর ২-৩ বার দেখা করেছিলাম কিন্তু কোন ছবি তোলা হয় নি।
বাবা: তাহলে এখন ইরাকেই তোমার বিয়ে করতে হবে।
আকাশ: কিন্তু ইরাকে বিয়ে করলে, না আমি সুখি হবো, নাই ইরা কখনো সুখি হবে। তাহলে কেনো এভাবে এত গুলো জীবন নষ্ট করতেছো।
রফিক: শাহাজাহান বন্ধু, আকাশ তো ঠিকই বলেছে। ওহ যখন চায় না, তখন শুধু শুধু কি দরকার,,,,,
ইরা: আব্বু ওহ না চাইলেও, আমি ওকে বিয়ে করতে চাই। আর ওকে আমি এখনই বিয়ে করবো।
রফিক: যে ছেলে তোকে বিয়ে করতে পারবে না। সে ছেলেকে বিয়ে করে কেনো জীবনটা নষ্ট করবি?
ইরা: ওহ আমাকে ভালো না বাসলেও, বাসার বাকি সবাই তো বাসে। ওনাদের ভালোবাসা ফেলেই হবে।।
আকাশ: এই কোন পাগলের পাল্লায় যে পড়লাম আমি।
বাবা: কাজি সাহেব আপনি দেনমোহর ১০ কোটি লিখবেন।
আকাশ: আব্বু তোমার কি মাথা খারাপ, দেনমোহর ১০ কোটি বলতেছো।
বাবা: তার কারণ তুমি ইরা কখনো ডির্ভোস দিতে ১০০ বার যেনো ভাবো সেজন্য।
আকাশ: আম্মু তুমি কিছু বলো।
মা: আমি কি বলবো, তোর বাবা যা ঠিক করেছে তাই হবে।
এই দিকে কেউ আকাশকে সার্ফোট করছে না। এই দিকে জোর করে কাজি বিয়ে পড়িয়ে চলে যায়৷ এই দিকে আকাশ রাগ করে চলে যায় রুমে। আকাশ যাওয়ার পরে, সবাই হেঁসে উঠে। আসলে এখানে গল্পের একটা ট্রুইস্ট আছে৷ যা আপনাদের এখন জানানো হবে না আপাতত। কেনো না, যদি এখন জানিয়ে দেই, তাহলে কাহিনি পড়ে আমরা মজা হারিয়ে ফেলবেন। সেজন্য এখন তা গোপনই রাখলাম।। চলুন তাহলে এখন গল্পে ফেরা যাক,,,
ঈশা: আচ্ছা তোমরা কাজটা কি ঠিক করলে?
ইরা: একদম ঠিক হয়েছে। আর ঈশা তুমি কিন্তু তোমার ভাইকে কোন কিছুই বলবে না। যদি বলছিস, তাহলে তোর সাথে আমার বন্ধুত্ব আমি চিন্হ করে দিবো
ঈশা: কিন্তু ভাইয়া যে কষ্ট পাবে অনেক।
ইরা: কষ্ট পাবে না। আমি সবটা সামলে নিবো। তবে সব সত্যি কিন্তু তোমরা জানো, সেজন্য এখন যেভাবে কথা বললে, এখন থেকে সেভাবেই কথা বলে যাবে। তাছাড়া আব্বু, তুমি কয়েকদিন আমার শশুড় বাড়িতে থেকে, পরে না হয় বাসায় যেও।
রফিক: তোর মাথায় আর ওদের মাথায় কি চলছে, আমি তো কোন কিছুই ঠিক মতো বুঝে উঠতে পাচ্ছি না।
ইরা: আব্বু তোমাকে কোন কিছুই বুঝতে হবে না। তুমি শুধু তোমার মতো করে থাকো। ঈশা তুই বরং আকাশের বন্ধুদের কল দিয়ে ব্যাপারটা জানিয়ে দে আর আমাদের বাকি দুই বান্ধবীদের ও বল। ওদের বলবি, বাসর ঘর সাঁজানোর জন্য, একসাথে ফুল নিয়ে আসার জন্য।
ঈশা: তোর কি একটু ও লজ্জা শরম নেই।
ইরা: তোর সামনে আমার কিসের লজ্জা শুনি?
ঈশা: দেখছিস না বাকিরা ও আছে।
ইরা: ভালো করে তাকিয়ে দেখ, আমি আর তুই ছাড়া কেই নেই আর।
এই তিকে ঈশা তাকিয়ে দেখে সত্যি সত্যি কেউই নেই। এই দিকে ঈশা গ্রুপের মধ্যে মেসেজ করে সবাইকে জানিয়ে দেয়৷ এই দিকে ওরা সবাই একত্রিত হয়ে ফুল কিনে চলে আসে আকাশের বাসায়৷ তখন বিকেল হয়ে যায়৷ এই দিকে ওরা আকাশকে কোন কথা বলতে না দিয়ে রুম থেকে বের করে দেয়।
আকাশ: কিরে তোদের খবর দিলো কেহ? আর আমাকে কেনো রুমে থেকে বের করছিস।।
শাকিল: এখন অনেক কাজ আছে, তোর রুম সাঁজাতে হবে। রুম সাজিয়ে নেই আমরা, আজকে কিন্তু তোকে ৫০,০০০ টাকা দিতে হবে।
আকাশ: এত টাকা কেনো?
শাকিল: ফুল আর যাবতীয় সব মিলে ২০০০০ টাকা। আর আমরা ৫ জন মিলে সাঁজাবো তো, সেজন্য আমাদের জন প্রতি ৬,০০০ টাকা করে দিতে হবে। এখন তুই বাহিরে যা, তোর সাথে কথা বলার সময় নেই।
এই দিকে কথাটা শুনে নীলাশার কথা মনে পড়লো। কিন্তু ওকে কল দিয়ে কি বলবে, তাই বুঝতে পাচ্ছে না। এই দিকে ঈশা আর ইরা তো গল্প করতে থাকে৷ এই দিকে আকাশ বেছারা কারো কাছে কোন পাত্তাই পাচ্ছে না। সেজন্য ছাদে এসে নীলাশাকে কল দেয়।।।
আকাশ: কেমন আছো তুমি?
নীলাশা: আমি যে ভালো নেই।
আকাশ: কি হয়েছে তোমার?
নীলাশা: সকাল থেকে কেমন নার্ভাস লাগতেছে৷ মনে হচ্ছে, বুকের উপর দিয়ে ঝড় চলে যাচ্ছে
আকাশ: তা তো যাবেই। এই দিকে আমার অবস্থা ও শেষ।
নীলাশা: তোমার আবার কি হলো।
আকাশ: কি হয় নি তা বলো।
নীলাশা: না বললে বুঝবো কি করে?
আকাশ: না থাক, আচ্ছা সারাদিনে তুমি কোন কল করো নি কেনো?
নীলাশা: অনেক ব্যস্ত ছিলাম সেজন্য করা হয় নি। তা তুমি নিজেও তো, আমাকে কোন কল দিলে না।
আকাশ: আচ্ছা একটা সত্যি কথা বলবো, রাগ করবে না তো।
নীলাশা: সত্যি কথা বললে, রাগ কেনো করবো?
আকাশ: আমাকে না,,,
নীলাশা: তোমাকে কি?
আকাশ: আমাকে আবার বাবা-মা,,,
বাকি কথা বলার আগেই,,,
নীলাশা: বাবা ডাকছে আমাকে, পরে কল দিয়ে শুনে নিবো। আর হ্যাঁ, আমি ফ্রি হয়ে কল দিবো৷ তুমি কল দিও না এখন আর আমি যতক্ষন পর্যন্ত কল না দিবো।
কথা বলে কল কেঁটে দেয়। এই দিকে বেচারা না পারছে কিছু বলতে, নাই পারছে সইতে। এই দিকে ৩ ঘন্টা পরে বাসর ঘর সাঁজানো শেষ। আকাশ ও নিচে ড্রয়িং রুমে বসে বসে টিভি দেখছে৷ এই দিকে ওরা নিচে বসে পড়ে।
আকাশ: এভার বল কাহিনি কি?
শাকিল: কাহিনি কি মানে! যেখানে তোর খুশি হওয়ার কথা, সেখানে মন খারাপ করে বসে আছিস। আচ্ছা বাকি কথা আমরা পরের দিন সকালে শুনবো এখন ভিতরে যা, ইরা অপেক্ষা করছে।
আকাশ: আমি যাবো না
অন্তর: ওই ওকে ধর তো। কোলে করে দিয়ে আসি রুমে।
ওরা কোলে করে রুমে নিয়ে আসে। এই দিকে ইরা দাড়িয়ে আছে হাতে দুধের গ্লাস নিয়ে, আকাশ সে দিকে না তাকিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়তে যাবে,
তখনই,,,,,,,,,,