“দেখুন বাড়ি ভাড়া দিতে আমার আপত্তি নেই, শুধু একটাই শর্ত, আমার বাড়িতে কখনো খিচুড়ি রান্না করা যাবে না।”
বাড়িওয়ালা লোকটার কথা শুনে বেজায় অবাক হল সৌগত। বাড়িভাড়া নিতে গিয়ে এর আগেও অদ্ভুত সব শর্তের কথা শুনলেও এটা একদমই নতুন। কারণ জানতে চাইলে বাড়িওয়ালা হরিহরবাবু সরাসরি বললেন- “অতশত বলা যাবে না। এই শর্ত মানতে না পারলে বাড়ি আমি ভাড়া দেব না।”
সৌগত তখন মরিয়া হয়েই বলল- “আরে নাহ নাহ, এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম। আপনার শর্ত মেনে নিতে আমার কোনও আপত্তি নেই।”
আসলে বাড়িটা সৌগতর খুবই পছন্দ হয়েছিল। শহরের শেষ প্রান্তে নিরিবিলি পরিবেশে বাড়িখানা। বাড়ির সামনে লোহার গেটের উপরটা ছেয়ে আছে বাগানবিলাস গাছে। সেই গেট পেরিয়ে বাঁধানো পথ দিয়ে দশ পা হেঁটে গেলেই আধাপাকা ভবন। বাড়ির পিছনে অনেকখানি জায়গা জুড়ে আম, জাম, পেয়ারা আর লিচুর বাগান। সব মিলিয়ে কেমন একটা শান্তিশান্তি ভাব যেন ঘিরে আছে পুরো বাড়িটাকে। এতদিন বাড়িওয়ালা হরিহরবাবু নিজেই থাকতেন এখানে। এখন বয়স হয়ে যাওয়ায় ছেলেদের সাথে বড় শহরে গিয়ে থাকবেন বলে স্থির করেছেন, তাই বাড়িটা ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন।
সৌগতও এই শহরে নতুন বদলি হয়ে এসে থাকার জন্য একটা বাড়ি খুঁজছিল কিছুদিন ধরেই। এক সহকর্মীর কাছ থেকে খবর পেয়ে বাড়িখানা দেখতে এসে ব্যাটে বলে মিলে গেল। কথাবার্তা পাকা করে একমাসের ভাড়া অগ্রীম দিয়ে পরের রবিবারেই সেই বাড়িতে উঠে এল সৌগত। হরিহরবাবু বলে গেলেন প্রতিমাসের ভাড়াটা তার একাউন্টে দিয়ে দিলেই হবে আর কোনও ঝামেলা ঝঞ্ঝাট হলে ফোনে জানালেই তিনি লোক পাঠিয়ে সমাধানের ব্যবস্থা করে দেবেন।
নতুন বাড়িতে উঠে কিছুদিন বেশ নির্ঝঞ্ঝাটভাবেই কেটে গেল। সৌগত একা মানুষ, বিয়ে থা করেনি, দিনের বেশিরভাগ সময় তার অফিসেই কাটে। তারপর সন্ধ্যায় ক্লাবে গিয়ে আড্ডা দিয়ে তাস খেলে বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত নয়টা বেজে যায়। রাতের খাওয়াটাও সে বেশিরভাগ দিন ক্লাবেই সেরে আসে আর ছুটির দিনগুলো তার কাটে বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে আর বাড়ির পিছে বাগানে ঘুরে। এই বাগানে ঘুরতে গিয়েই কিন্তু একদিন একটা ব্যাপার ঘটল।
বাগানের শেষ দিকে পাঁচিল ঘেঁষে বেড়ে ওঠা ঝোপঝাড়ের মধ্য থেকে একটা করুণ মিউ মিউ কান্না শুনে কাছে গিয়ে সৌগত দেখল ঝোপের ভিতর একটা বিড়ালের বাচ্চা পড়ে আছে। বাচ্চাটার গায়ের রঙ মিশমিশে কালো, ক্ষুধার জ্বালায় তার বুকের পাঁজর বেরিয়ে গেছে। বিড়ালটা এখানে কিভাবে এল সেটা ভেবে না পেলেও বাচ্চাটাকে দেখে মায়া হল তার। সৌগত নিজেও অনাথ, ছোটবেলাতেই বাবা মাকে হারিয়ে অনেক কষ্টে বড় হয়েছে। বিড়ালছানাটার সাথে খুব সহজেই তাই নিজের মিল খুঁজে পেল সে। সেদিন ছানাটাকে ঝোপের থেকে থেকে তুলে নিয়ে এসেছিল সৌগত, সেই থেকে তার সাথেই আছে ছানাটা। একটু বড় হলে সৌগত তার নাম রেখেছে রুক্মিনি। খুব চুপচাপ শান্ত স্বভাবের বিড়াল রুক্মিনি। সারাদিন আপনমনে বাগান জুড়ে খেলা করে, আর সৌগত যখন বাড়িতে থাকে তখন সারাটা সময় তার পায়ে পায়ে ঘুরে বেড়ায়।
মাস চারেক পরের এক রবিবার, সেদিন সকাল থেকে বাড়িতেই ছিল সৌগত। বাড়িতে না থেকে উপায়ও নেই। নিম্নচাপের দরুণ দিন দুয়েক ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে, সেই সাথে ঝড়ো হাওয়া। ক্লাবের সভ্যরাও এই বৃষ্টিতে যে যার মত নিজ নিজ বাড়িতে বর্ষাবিলাস করেই দিন কাটাচ্ছে। করার মত কোনও কাজ ছিল না সৌগতর। তাই সারাদিন ঘরের ভিতর শুয়ে বসে কাটাল সে। তারপর বিরক্ত হয়ে সন্ধ্যাবেলা ঠিক করল রাতের বেলা নিজেই কিছু একটা রান্না করবে। বাইরে যে আবহাওয়া তাতে খিচুড়ি ছাড়া অন্য কিছু হলে ঠিক জমবে না কিন্তু হরিহরবাবু স্পষ্টভাবে মানা করে গিয়েছিলেন এ ব্যাপারে। অনেক ভেবে সৌগত নিজেকে বোঝাল, আরে নিয়ম তো তৈরীই হয় ভাঙ্গার জন্য আর তাছাড়া এমন বৃষ্টির দিনে একটু খিচুড়ি বেগুন ভাজা খাওয়ার জন্য যার মন না কাঁদে তাকে কী ঠিক বাঙালি বলা যায়? সৌগতর পায়ের কাছে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে ছিল রুক্মিনি।
তার দিকে চেয়ে সৌগত জিজ্ঞেস করল – “কী বলিস, আজ খিচুড়ি হবে নাকি?”
রুক্মিনি কি বুঝল কে জানে, সে বলল – “মিউ।” সেটাকেই রুক্মিনির সম্মতি ধরে নিয়ে “বেশ, তাহলে তাই হোক” বলে খিচুড়ি রান্নার আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়ল সৌগত।
রাধুনী হিসেবে সৌগতর বেশ সুনাম আছে। ব্যাচেলর মানুষ তাই মাঝে মধ্যেই নিজে রান্না করে খেতে হয়, সেই করে করে রান্নার হাত তার ভালোই পেকেছে। সন্ধ্যাবেলা অনেকক্ষণ বিদ্যুৎ ছিল না, তাই পেয়াজ রসুন আদা কেটে চাল ডাল ধুয়ে নিয়ে খিচুড়ি রান্না শুরু করতে করতে রাত আটটা বেজে গেল। হাঁড়িতে তেল দিয়ে তাতে পেয়াজ রসুন আর মশলা কষিয়ে চাল ডাল ছেড়ে নাড়া দিতেই একটা মন ব্যাকুল করা সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ল বাতাসে। বাইরে তখন ঝমঝম বৃষ্টি হচ্ছে, মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। রান্নাঘরের খোলা জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস এসে চুলার আগুন নিভিয়ে দিচ্ছিল। তাই সৌগত হাত বাড়িয়ে জানালাটা টেনে দিতে গেল আর সেই সময়েই বিদ্যুৎ চমকের আলোতে তার চোখ পড়ল বাইরের বাগানে বুড়ো আমগাছটার নীচে। সাথে সাথেই নিজের জায়গায় স্থির হয়ে গেল সে। একটা কালো ছায়ামূর্তি যেন দাঁড়িয়ে আছে গাছটার নীচে। আবার বিদ্যুৎ চমকাতেই কিন্তু সেই ছায়ামূর্তিকে আর দেখা গেল না।
সৌগতর মনের ভিতর একটা অস্বস্তিবোধ হতে লাগল। এই বাড়ির আশেপাশে অন্য কোন বাড়ি নেই, তার ওপরে এমন ঝড় বৃষ্টির রাত; এমন রাতে চোর ডাকাত পড়া অস্বাভাবিক নয়। রান্নাটা চুলায় রেখে পিছনের বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াল সে। বারান্দা থেকে বাগানের অনেকটা অংশ দেখা যায়। অন্ধকারের ভিতরে সেদিকে চেয়ে সৌগতর মনে হল প্রতিটা গাছের নীচেই যেন একটা করে ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে আর একটু হলেই ভয়ে চিৎকার করে উঠতে যাচ্ছিল সৌগত কিন্তু এমন সময় আকাশে বড় করে বিদ্যুৎ চমকালো আর সাথে সাথেই সেই ছায়ামূর্তিগুলো নিমেষে অদৃশ্য হয়ে গেল। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে নিজের মনেই হেসে উঠল সৌগত, আসলে গাছের নীচে অন্ধকার জমাট হয়ে অমন দেখাচ্ছে, আর তাইতো বিদ্যুত চমকালে আবার নেই হয়ে যাচ্ছে। সেটাকেই মানুষ বলে মনে করে অহেতুক ভয় পেয়েছে সে।
রান্না ঘরে ফিরে এসে ডিম আর বেগুন ভাজা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল সৌগত। ভাজা শেষ হতে হতে খিচুড়িও হয়ে গেল, এবারে আয়েশ করে খাবার পালা কিন্তু সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে খাবার টেবিলে এসে সৌগত খেয়াল করল রুক্মিনিকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। একা একা খেতে ইচ্ছে হল না, তাই টেবিল ছেড়ে উঠে রুক্মিনি খুঁজতে গেল সে। এরই মধ্যে বাইরে বৃষ্টির বেগ যেন আরো বেড়ে গেছে, ঘরের বন্ধ জানালায় বাঁধা পেয়ে শোঁ শোঁ শব্দ করছে ঝোড়ো বাতাস। রুক্মিনিকে খুঁজে পাওয়া গেল শোবার ঘরে, বিছানার উপর কাঁথার নীচে জড়সড়ো হয়ে আছে সে। সৌগত তাকে ডেকে বলল- “আয় রুক্মিনি, খাবার হয়ে গেছে।”
রুক্মিনি কিন্তু উঠল না, বরং গলার লোম ফুলিয়ে কাঁথার আরও ভিতরে ঢুকে গেল। বিড়ালেরা একটু শীতকাতুরে হয় সেটা সৌগতর জানা ছিল কিন্তু রুক্মিনির আজকের আচরণটা কেমন অস্বাভাবিক মনে হল তার কাছে। মনে হল রুক্মিনি যে জড়সড় হয়ে আছে সেটা ঠিক শীতের কারণে নয়, বরং কেমন একটা ভয়ের ভাব যেন ফুটে উঠেছে তার সবুজাভ দুই চোখে।
সৌগতর খুব ক্ষিধে পেয়েছিল, তাই আরও বারদুয়েক ডাকাডাকি করেও রুক্মিনির সাড়া না পেয়ে খাবার টেবিলে ফিরে গিয়ে বসে পাত পেড়ে বসল সে। গরম খিচুড়ি ডিম আর বেগুনভাজার সুবাসে ভরে উঠল পুরো ঘরটা। বেগুনভাজা দিয়ে খানিকটা খিচুড়ি মেখে নিয়ে সবেমাত্র মুখে দিয়েছে সৌগত, এমন সময় আচমকা বিদ্যুৎ চলে গিয়ে ঘরটা অন্ধকার হয়ে গেল। এমন অবস্থার জন্য সৌগত আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। এমন ঝড়বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎ চলে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়, বরং এতক্ষণ যে বিদ্যুৎ ছিল সেটাই আশ্চর্য। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পকেটের মোবাইলটা বের করে টর্চ জ্বালাল সৌগত আর সাথে সাথেই চমকে উঠে চেয়ারসহ উল্টে পড়ল।
এ কী দেখছ সে, এরা কারা? নিজের চোখকে বিশ্বাস হতে চাইল না সৌগতর। জনা দশেক কালো লিকলিকে ছায়ামূর্তি ঘিরে দাঁড়িয়েছে টেবিলের চারপাশে। দেখতে মানুষের মত মনে হলেও তাদের জীর্ণ শরীরের হাড় গোণা যায়, বুকের চামড়া ঠেলে বেরিয়ে আছে পাঁজরের হাড়। কারও কারও গায়ে চামড়াও নেই, তার বদলে বেরিয়ে আছে সাদা সাদা হাড়ের সারি। অক্ষিকোটরের অতল গভীরতা হতে সেই প্রেতমূর্তি গুলো জ্বলন্ত ক্ষুধার্ত চোখে চেয়ে আছে টেবিলের উপরে রাখা খিচুড়ির হাড়ির দিকে। সৌগতর আতঙ্কিত চোখের সামনেই সেই ছায়ামূর্তিগুলো একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ল হাঁড়ির ওপরে। তারপর ঘরের ভিতর যে নরক কান্ড সৃষ্টি হল তা বর্ণনার ভাষা জানা নেই সৌগতর। হাঁড়ির সেই যৎসামান্য খিচুড়ি নিয়ে টানাটানি, হাড়ে হাড়ে গুতো লাগার খটখট শব্দ আর প্রেতদের চিল চিৎকারে কানে তালা লেগে যাবার উপক্রম হল। হাড়ির খিচুড়ি নিশেষ হয়ে যেতেই মূর্তিগুলোর দৃষ্টি পড়ল সৌগতর ওপর। মুখে দিতে যাওয়া একমুঠো খিচুড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল সৌগতর শরীর জুড়ে। সেই খিচুড়ির লোভে মূর্তিগুলো এবারে পায়ে পায়ে এগিয়ে আসতে শুরু করল তার দিকে। মূর্তিগুলোর অস্থিসার শরীর আর ধিকিধিকি জ্বলতে থাকা চোখের দিকে চেয়ে আতঙ্কে দমবন্ধ হয়ে আসতে চাইল তার। এখনি হয়তো ক্ষুধার্ত সেই মূর্তিগুলো একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়বে তার ওপর আর তারপর খুবলে খুবলে খাবে তার দেহটা। ভয়ে চোখ বন্ধ করে শেষ সময়ের জন্য প্রস্তুত হলো সৌগত।
ঠিক এমন সময় একটা কুচকুচে কালো মাংসপিন্ড যেন অন্ধকারের মধ্য থেকে ছুটে এসে লাফিয়ে পড়ল তার আর প্রেতমূর্তিগুলোর মাঝে। আচমকা বাঁধা পেয়ে থমকে দাঁড়াল মূর্তিগুলো। ওদিকে প্রচন্ড আক্রোশে গলার লোম ফুলিয়ে সেই কালো পিন্ডটা ডেকে উঠল- “ম্যাও…ও ম্যাও…ও।” একদিন যে অসহায় বাচ্চাটাকে ঝোপের ভিতর থেকে কুড়িয়ে এনেছিল সৌগত, আজ সেই এসে আগলে দাঁড়াল তাকে। রাগে গরগর করতে করতে সাদা দাঁত আর নখ বের করে প্রেতমূর্তিগুলোর দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ল রুক্মিনি। রুক্মিনির রুদ্রমূর্তি দেখে বিকট চিৎকার করে একে একে ভোজবাজির মত হাওয়ায় মিলিয়ে গেল সেই মূর্তিগুলো আর সেই সাথে প্রচন্ড মানসিক উত্তেজনার অবসান হতেই জ্ঞান হারাল সৌগত।
এইভাবে কতক্ষণ পার হয়েছিল তা মনে নেই সৌগতর, জ্ঞান ফিরলে সে দেখল বাইরে ঝড় থেমে গেছে, বিদ্যুৎও চলে এসেছে আর রুক্মিনি তখনও একইরকম ভাবে দাঁড়িয়ে আছে তার গা ঘেঁষে। বাকী রাতটুকু শেষ হয়ে ভোরের আলো ফুটতেই হরিহরবাবুকে ফোন করে ঘটনাটা জানাল সৌগত। সব শুনে হরিহরবাবু বললেন- “আপনি যখন সব জেনেই গেছেন তখন আর লুকিয়ে লাভ নেই। আসল ব্যাপারটা আমরা নিজেরাও ঠিক জানি না, তবে শুনেছি লোকালয় হবার আগে ওখানে একসময় একটা গ্রাম ছিল। অনেক বছর আগে এক দুর্ভিক্ষের সময় সেই গ্রামের অসংখ্য মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যায়। তাদেরই অতৃপ্ত আত্মা এখনো মাঝে মধ্যে ফিরে আসে এই বাড়িতে। আর কোন এক অদ্ভুত কারণে এই ব্যাপারটা হয় শুধুমাত্র খিচুড়ি রান্না করলেই। তাই বাড়ি ভাড়া দেবার আগে আপনাকে খিচুড়ি রান্না না করার শর্ত দিয়েছিলাম। আপনি সেটা মানলে এই বিপদ হত না। যাই হোক, আপনি বাড়ি ছেড়ে দিতে চাইলে আমাকে বলবেন।”
“আচ্ছা”- বলে ফোনটা রেখে দিল সৌগত তবে মনে মনে সে ঠিক করল বাড়ী না ছেড়ে তার চেয়ে বরং এক হাঁড়ি খিচুড়ি রান্না করে একদিন বাগানে গিয়ে দিয়ে আসবে, তাতে যদি অভুক্ত আত্মাগুলোর শান্তি হয় আর রুক্মিনি যতদিন সাথে আছে ততদিন ভূতের ভয় তার না পেলেও চলবে। প্রাচীন মিশরীয়রা বিড়ালকে দেবতাজ্ঞানে পূজো দিত। তাদের বিশ্বাস ছিল মৃত জগতের পাহারাদার হল বিড়াল দেবতা বাসতেত। সে কথাটা যে একদম ভুল নয় সেটাতো সৌগত কাল রাতে নিজের চোখেই দেখেছে। রুক্মিনি এতক্ষণ পাশেই বসে ছিল। এবার তাকে কোলে তুলে নিয়ে সৌগত জিজ্ঞেস করল- “কিরে তুই কি বাসতেত এর চ্যালা নাকি?”
রুক্মিনি বলল – “ম্যাও।”