কালো জাদু #পর্ব- ০২

(সত্যঘটনা অবলম্বনে)
মুরাদ বললেন… ঠিক আছে আগামী শনিবার আমার বাসায় এসো প্রমান পাবে।তারিফ পরের শনিবার উনার বাসায় যান গিয়ে দেখেন একটা অদ্ভুদ পরিবেশ কি নোংরা ব্যপসা একটা ভাব মনে হচ্ছিলো এই লোক বছরে ২ বার বাসা পরিষ্কার করে না…
মুরাদ তাকে বলে ঐ রুমে বসো আমি আসছি।তারপর মুরাদ এসে রুমের বাতি নিভিয়ে দেয়। তারপর মোমবাতি জালায় এবং কিছু একটা পরতে শুরু করে।মিনিট ৫, ১ পর সব কিছু কেমন যেনো শুনশান।কিছু একটা ঘটছিলো না। তারিফ মুরাদকে কথা শুনিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যাবে এমন সময় সামনে রাখা চেয়ারটা নারার শব্দ…
হুবুহু তার বাবার কন্ঠ, “বাইরে যাস না, বাইরে পিশাচ আছে” সে ঐ দিকে তাকায় দেখেন তার বাবা চেয়ারে বসে পা দুলাচ্ছেন এবং এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছেন..।চোখ ভরা রাগ খোভ যেন হাতের কাছে পেলে গলা টিপে ধরবে..
মুরাদ চোখ খুলে তারিফকে বলেন, দেখতে পাচ্ছো নাকি? তারিফ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।কিছুক্ষণ পর তার বাবা এসে হঠাত করেই যেন তার গলা জোরে চেপে ধরেন এবং ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দিলেন…এবং তার বাবার মতো দেখতে লোকটা যেন চোখের সামনে থেকে হঠাত উধাও হয়ে গেলেন…..
তারপর সে মুরাদকে প্রশ্ন করলো আমি কি ঘুমিয়ে ছিলাম নাকি? যেটা দেখলাম সেটা সত্যি ছিলো?মুরাদ বললো নিজেী চোখেইতো দেখলে তারপরো আমার কথা বিশ্বাস করছো না? তারিফ কিছু বলে না বাড়ি চলে যায় এবং অফিস থেকে ৭ দিনের ছুটি নেয় কারন বাড়ি ফেরার পর প্রচন্ড রকমে জর চলে আসে….
অফিসে জয়েন করার পর তিনি মুরাদকে বলেন আপনি যা যা পারেন তা আমাকে শিখাবেন?….মুরাদ বললো যেটা আমি করি যেটা স্বাভাবিক কিছু নয় তুমি পারবে?…সে বললো হে আমি পারবো।এভাবে তাদের দুজনের মাঝে বন্ধুত্ব হয়। কিন্তু তারিফ বুঝতে পারে না উনার বন্ধু উনাকে কুফরির দিকে নিয়ে যাচ্ছে!!…..
সে মুরাদের কাছ থেকে কালো জাদু বিদ্যা শিখা শুরু করে দেয়।বছর খানেক পর উনিও মুরাদের মতো পারদর্শী হয়ে উঠেন। কালো জাদুর পাপ তাদের দুজনকেই ধীরে ধীরে গ্রাশ করতে শুধু করে…এগুলো সবই প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর তারিফের মায়ের থেলে গোপন ছিলো…..
যাইহোক তখন বোধহয় ২০০৭। মুরাদ হঠাত ৪ থেকে ৫ দিন অফিস আসা বন্ধ করে দেয়।তারিফ মুরাদের কোনো খোজ না পাওয়ায় মুরাদের বাসায় পৌছায়। মুরাদ যেখানে থাকতো সেটা ছিলো হাফ বিল্ডিং বাসা।ইটের দেওয়াল ছাদে টিন দেওয়া……
তারিফ উনার বাসায় এসে দেখে বাসার দরজায় তালা দেওয়া নেই। সে নিশ্চিত হয় মুরাদ নিশ্চয় ভিতরেই আছে। তিনি দরজায় টোকা দেন কিন্তু ভিতর থেকে কোনো রেসপন্স না আসায় তিনি ফিরে চলে আসেন….
এর ২ দিন পর তিনি অফিস যান গিয়ে শুনেন সবাই বলাবলি করছে মুরাদকে নাকি ছিন্নভিন্ন অবস্হায় তার বাসার ভেতরে নাকি পাওয়া গেছে । সকালে নাকি পচা দুর্গন্ধ আসে বাড়ির ভিতর থেকে তাই উনারা দরজা ভেঙে বাসায় যান ওখানেে আরো দুর্গন্ধ।তারপর তারা বোঝতে পারেন ইদুর বিড়াল কিছু নয় ঐখানে খারাপ কিছু হয়েছে। তাই উনারা পুলিশ ডাকেন…..
এবং ঘরের ভিতর থেকে মুরাদের ছিন্ন ভিন্ন দেহ উদ্ধার করেন কিন্তু মাথাটা খোজে পাওয়া যায় নি। বডিতে লম্বালম্বি একটা ক্ষতর দাগ ছিলো এটা দেখে প্রতিবেশিরা নিশ্চিত হন এটা সম্ভবত মুরাদই হবে।এটা শুনে তারিফ অবাক হয় কারন মুরাদ গায়েব হয়ে যাওয়ার আগের দিনো মুরাদের সাথে কথা হয়েছিলো তার। একটুর জন্যও তারিফের মনেই হয় নি মুরাদ বিপদে আছে বা সেরকম কিছু…..
উনি মুরাদের বাড়িতে যাবে ভাবছিলেন যদি জ্বিন সম্পর্কিত কোনো কারন থাকে তাহলে তিনি সেটা খুজে বের করবেন ভাবছিলেন… ঐ বাসাটা পরবর্তীতে আর ভাড়া দিতে পারেন নি বাড়ি ওয়ালা। মাস খানেক পর পরিবেশ ঠান্ডা হলে তারিফ বাড়ি ওয়ালাকে ঐ বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে ঐ বাড়িতে ঘুরতে চান একা…।তখন মাগরিবের আজানের পরের মুহুর্ত চলছিলো…..
বাসায় ডুকে দরজাটা লাগিয়ে দেওয়ার পর শুনেন টিনের চালে সমানে পানি পড়ার শব্দ যেন ঝম ঝম বৃষ্টি পরছে বাইরে ঝড় হচ্ছে। উনি গুরুত্ব না দিয়ে ভিতরের দিকে আরো এগিয়ে যান…. যত ভিতরের দিকে যাচ্ছিলেন ততোই উনার নাকে একটা লাশ পচা গন্ধ আসছিলো….
তিনি মুরাদের ঘরে যান যেটায় সে ঘুমাতো এবং সেই ঘর থেকেই মুরাদের মাথা বিহীন লাশটা উদ্ধার করা হয়েছিলো।উনি ভিতরে যেতেই দেখেন ঘরের এক কোনে চেয়ার রাখা…খেয়াল করেন ওখানে কে যেনো বসে আছে।তিনি লাইট মারেন দেখেন একটা লোক বসা এই লোকটাকেও আগেও তিনি একবার মুরাদের সাথে যাদু বিদ্যা শিখার সময় দেখে ছিলেন….তার উপর মুরাদের কাটা মাথা পরে রয়েছে……
লোকটার চেহারা ভয়ানক।ছয়টা চোখ কুকুরের মতো দাত।মুখ থেকে লালা ঝরছে লোকটা তারিফকে বলেছিলো তোর সময়ো শেষের পথে।প্রস্তুত হ। এটা বলেই লোকটা গায়েব হয়ে যায়।এটা শুনে সে বাসা থেকে তারাতারি বের হয়ে বাড়ি চলে আসে…
যে লোকটাকে সে দেখেছিলো সে আসলে মানুষ ছিলো না।সে ছিলো মুরাদের পোশা একটি নরখাদক। মুরাদ বলেছিলো এই জ্বিন নাকি তার উস্তাদের সাথে ছিলো।উস্তাদ মারা যাওয়ার পর নাকি সে এই জ্বিনকে পোষা কুকুরের মতো বানিয়ে নেয়…এবং সব ধরনের অন্যায় কাজ করাতো।প্রতিদান সরুপ ৩১ দিন পর পর তাকে ১ টি করে মানুষের বাচ্চা উৎসর্গ করতো…..
বাসায় আসার পর তার আম্মা তাকে বলেন তারিফ তার খোজে নাকি একটা লোক এসেছিলো।সে নাকি মুরাদের বন্ধু…তারিফ আচ করতে পারছিলেন উনার মা কার কথা বলছেন….কারন মুরাদের কোনো বন্ধু বান্ধব ছিলো না। তার মানে কি আজ উনি যাকে দেখলেন তিনিই এসেছিলেন…..
তার মা তাকে আরো বলে লোকটা নাকি নাম বলে যায় নি।যাওয়ার আগে বলে গেছে সে আবার আসবে।এসে নাকি নিয়ে যাবে।তারিফকে নাকি তার খুব জরুরী দরকার।তারিফ খাওয়াদাওয়া করে শুয়ে পরেন রাতে উনার ঘুম ভেঙে যায় কাপুনী দিয়ে উনি টের পান তার খাট যেন ডানে বায়ে লরছে আর মাথার উপরে যাতে যেন কারো পায়ের ধপধপ করে আওয়াজ হচ্ছে….
তিনি বিরক্ত হয়ে ছাদের উপর উঠে যান।ছাদের উপর একটা চিলেকোঠা ছিলো যেটায় তার বাবা চেয়ারে বসে পেপার পরতেন….বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে ঘরটা তালা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো…তিনি এই ঘরটার কাছে যেতে যেতে দেখেন ঘরের দরজাটা খোলা….
তিনি দেখেন ঘরটায় আলো জ্বলছে আর শুনেন ঘরের ভিতর ২ ৪ টা লোক কথা বলছে। তার মাঝে উনার বাবার কন্ঠও শোনা যাচ্ছে।তিনি ভয় ভয় দরজার পাশে এসে দাড়িয়ে যান ভিতরের দিকে চাইতেই দেখেন ভিতরে কেউ নেই।তিনি ভয় পেয়ে পিছন দিকে দৌড়াতে শুরু করবেন ঐ সময় কেউ একজনের সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে যান উপরের দিকে চাইলে কাউকে দেখতে পান না….
তিনি দৌরে নিচে গিয়ে মাকে সব বলেন আর তার মা আর ভাই দৌরে এসে দেখেন ঐ চিলেকোঠায় তালা ঝুলানো…তিনি সব কিছু বোঝতে পারেন এবং কিছু না বলে এড়িয়ে যান।তিনি নিজেই কিছু একটা করার কথা ভাবেন… তারফের বয়স তখন ২৭…।উনার মা উনার বিয়ের জন্য মেয়ে খুজছিলেন। একটা সময় তার বিয়ে ঠিক হয় মেয়েটার নাম ছিলো নিপু…..
বিয়ের সপ্তাহ খানেক পর একদিন নিপুর চিৎকার শুনে সবাই দৌড়ে আসে আর তাকে অচেতন অবস্হায় পায়।দেখে সে গ্রিলের মাঝে এমন ভাবে দারিয়ে আছে যেন অদৃশ্য কোনো শক্তি দিয়ে তাকে কেউ বেধে রেখেছে।সবাই এসে নিপুকে নামায়…..
নিপুর জ্ঞান ফিরে পরদিন দুপুরে… সে বললো সে নাকি চুলে তেল দিচ্ছিলো এমন সময় দেখলো……

Be the first to write a review

Leave a Reply

We’re sorry you’ve had a bad experience. Before you post your review, feel free to contact us, so we can help resolve your issue.

Post Review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক গল্প